অসংগঠিত শ্রমিকের মর্যাদা দিয়ে পাঁচামি পাথর শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের হাতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি ও পরিচয়পত্র তুলে দিল রাজ্যের শ্রম দফতর। গত অগস্ট মাসেই পাথর শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের অসংগঠিত শ্রমিকের মর্যাদা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। শুক্রবার তারই ফলস্বরূপ এই জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পাথর শিল্পাঞ্চলের ৫০০ জন শ্রমিকের হাতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি ও পরিচয়পত্র দেওয়া হল। মহম্মদবাজারের কমিউনিটি হলের ওই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাজ্যের শ্রম সচিব অমল রায়চৌধুরী, বীরভূমের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা ও অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা। শ্রম সচিব বলেন, “রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগের ফলে পাথর শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত রাজ্যের সমস্ত শ্রমিকেরা উপকৃত হবেন। একই সঙ্গে তাঁরা সামাজিক সুরক্ষাও পাবেন। এই শিল্পে যুক্ত প্রতিটি শ্রমিকের নাম নথিভুক্ত করা হবে।” প্রথম বার নাম নথিভুক্ত করতে ৫০ টাকা জমা করতে হবে। প্রতি বছর ৩০ টাকা দিয়ে তা পুনর্নবীকরণও করতে হবে। |
এ দিন শ্রম দফতরের কাছে খাদান ও ক্রাশার এলাকায় ক্যাম্প গড়ে শ্রম দফতর শ্রমিকদের চিহ্নিত করে পরিচয়পত্র দেওয়া ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলানোর ব্যবস্থা করার আবেদন করেন জেলা শাসক। পাশাপাশি ওই কাজে জেলা প্রশাসন সব রকমের সাহায্য করবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন। তাঁর পরামর্শ বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলার অ্যাসিস্ট্যান্ট লেবার কমিশনার সৌম্যনীল সরকার। তিনি জানিয়েছেন, নির্মাণ শ্রমিকেরা রাজ্য সরকারের কাছে যে সব সুযোগ সুবিধা পেতেন, এখন থেকে পাথর শিল্পাঞ্চলে যুক্ত শ্রমিকেরাও সেই সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া বার্ধক্যে, দুর্ঘটনায় পক্ষু বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ভাতা, চিকিৎসায়, মেয়ের বিয়েতে (সবার্ধিক দুই) মৃত্যু-সহ নানা ক্ষেত্রে সরকার ওই শ্রমিকদের আর্থিক সাহায্য করবে। এ দিনই শ্রম দফতর মহম্মদবাজারের সবিতা কোনাইয়ের হাতে দেড় লক্ষ টাকার চেক তুলে দেয়। তাঁর স্বামী, পেশায় নির্মাণ শ্রমিক ভিখু কোনাইয়ের বছরখানেক আগে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল। পরিচয়পত্র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাসবই হাতে পেয়ে পাথর শ্রমিক শাহজাহান শেখ, লক্ষ্মীমণি হাঁসদারা বলেন, “এলাকার সব শ্রমিককে অসংগঠিত শ্রমিকের মর্যাদা দেওয়া হোক।” অন্য দিকে, বীরভূম জেলা আদিবাসী গাঁওতার নেতা সুনীল সোরেন বলেন, “আমরা দীর্ঘ দিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছিলাম। জেলাশাসকের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে কোনও শ্রমিকই বঞ্চিত হবেন না।” |