যানজট কমাতে তমলুকে বাইপাস
হরবাসীর জন্য সুখবর। নিত্য প্রয়োজনে যাঁরা শহরে আসেন তাঁদের জন্যও সুখবর। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাসদর তমলুক শহরে রাধাবল্লভপুর থেকে দক্ষিণচড়া পর্যন্ত রূপনারায়ণের তীর বরাবর পাকা বাইপাস রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে শীঘ্র। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে সংযুক্ত বাইপাস রাস্তাটি তৈরি হয়ে গেলে শহরের মধ্যে যানবাহনের চাপ কমবে। এড়ানো যাবে হাসপাতাল মোড় আর মানিকতলার যানজট।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি পর্যায়ে কাজ হবে। প্রথম পর্যায়ে তমলুক শহরের উত্তর দিকে পায়রাটুঙ্গিতে খালের উপর লকগেটের সেতুর কাছ থেকে যে মোরাম রাস্তা স্টিমারঘাট হয়ে দক্ষিণচড়ার কাছে হলদিয়া-মেচেদা
রাস্তায় মিশেছে, সেই রাস্তা পাকা পিচের করা হবে। পায়রাটুঙ্গির লকগেট থেকে নিমতলা লকগেট পর্যন্ত প্রায় ১.২ কিলোমিটার পাকা রাস্তা আছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে নিমতলা (গঙ্গাখালি) লকগেট থেকে শহরের রাধাবল্লভপুর পর্যন্ত ১.৮ কিলোমিটার মোরাম রাস্তাটি পাকা করে দিয়ে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্যসড়কে যুক্ত করে দেওয়া হবে। এই ভাবে দুই পর্যায়ে শহরের পূর্ব দিকে নদীতীর বরাবর সম্পূর্ণ বাইপাসটি তৈরি হবে। যেটি রাধাবল্লভপুর থেকে গঙ্গাখালি, পায়রাটুঙ্গি, স্টিমারঘাট হয়ে দক্ষিণচড়ার কাছে ফের হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কে মিশবে। এর ফলে মেচেদার দিক থেকে তমলুক শহরের ভিতর কলেজ, জেলা আদালত-সহ বিভিন্ন স্থানে যায়ায়াতের সুবিধা হবে। একই ভাবে হলদিয়ার দিক থেকে আসা লোকজন নারায়ণপুরের কাছে দক্ষিণচড়া শঙ্করআড়া থেকে বাইপাস হয়ে তমলুক শহরের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে। তমলুক শহরের মানিকতলা ও হাসপাতাল মোড়ের চাপও কিছুটা কমবে। বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে শহরের পূর্ব দিকের বাসিন্দাদের।
প্রথম পর্যায়ের সাড়ে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি মোটামুটি ৪ মিটার চওড়া করা হবে, যাতে বাস চলাচল করতে পারে। রাস্তা পাকার কাজের জন্য টেন্ডার করে ঠিকাদার নিয়োগ হয়ে গিয়েছে। গত ১২ অগস্ট ঠিকাদারকে কাজের অনুমতি দিয়েছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ। ২ কোটি ২৯ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের রাস্তাটিও ৪ মিটার চওড়া করা হবে। এর জন্য প্রায় এক কোটি (৯৯ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭১৪) টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ওই কাজের ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন শহর তমলুক দেড়শো বছরে পড়ছে চলতি বছরেই। এতদিনের পুরনো হলেও রাস্তাঘাট, নিকাশি-সহ নাগরিক পরিকাঠামোর দিক দিয়ে এখনও শত যোজন পিছিয়ে তমলুক। ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর শহরের মধ্যে বিভিন্ন সরকারি দফতরের জেলা অফিস চালু হয়েছে। প্রশাসনিক প্রয়োজনে তমলুক শহরে জেলা ও রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজনের আনাগোনা বেড়েছে কয়েকগুণ। শহরের বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় দ্রুত গতিতে গড়ে উঠছে নতুন নতুন বসতি এলাকা। জনসংখ্যা বাড়ছে দ্রুত হারে। কিন্তু শহরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও খুব খারাপ। রাস্তাঘাট সরু। এমনকী বাস চলে যে রাস্তায়, সেটিও যারপরনাই সঙ্কীর্ণ। ফলে বেশিরভাগ রাস্তায় নিত্য যানজট লেগেই থাকে। খারাপ রাস্তার জন্যই পর্যটকদের কাছে আকর্ষণ হারিয়েছে এই শহর। অথচ, তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি, সংগ্রহশালা, বর্গভীমা মন্দির, মহাপ্রভু ও জিষ্ণুহরি মন্দির-সহ ঐতিহাসিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থান রয়েছে প্রাচীন এই শহরে। এই অবস্থায় তমলুক পুরসভার দেড়শো বছরের পূর্তি উৎসব পালনের মুখে শহরের রাস্তাঘাট-সহ বিভিন্ন পরিকাঠামোর উন্নয়নে নড়েচড়ে বসেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তমলুকের পুরপ্রধান দেবিকা মাইতি বলেন, “শহরের মধ্যে যাতায়াতের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য বাইপাস রাস্তা হবে। এ ছাড়া শহরের মধ্যে পূর্ত দফতরের অধীনে থাকা একাধিক রাস্তা সংস্কারের জন্য পূর্ত দফতরকে বলা হয়েছে।”

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.