আন্দোলনের বার্তা চাপা পড়ে গেল জগঝম্পে
কেউ বাজাচ্ছে ঢাক। কেউ ধামসা-মাদল। কেউ কেউ আবার তাসার সঙ্গে উদ্দাম নাচছে। তারই মাঝে ছৌ নাচের মুখোশে বাঘ-ভালুকের সাজে এক দলের সে কী দাপাদাপি!
বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এমন সব ব্যাপার ঘটে চলল মহাজাতি সদনে। এমন ‘বিচিত্রানুষ্ঠান’ ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে অবশ্য নতুন নয়। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এক বার বিরক্ত হয়ে বলেছিলেন, “এখানে কি সার্কাস হচ্ছে?”
প্রণববাবু রাষ্ট্রপতি হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু মহাজাতি সদনে সাবেক ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশে কোনও পরিবর্তন হয়নি।
এক সময়ে ছাত্র সংগঠনের সদস্যদের উচ্ছ্বাস সামলাতে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি বা সোমেন মিত্রকে ধমক দিতে দেখা যেত। এ দিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে রাহুল গাঁধীর নামে স্লোগান দিতে হয়েছে মানস ভুঁইয়া, অমিতাভ চক্রবর্তীদের। রাহুলের নাম শুনে সাময়িক বিরতি ঘটলেও ছাত্র পরিষদের কর্মীরা তার পরেই ফের মেতে ওঠেন হুল্লোড়ে।
মোক্তারের সঙ্গে মানস ভুঁইয়া। বুধবার মহাজাতি সদনে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
মানসবাবু থেকে শুরু করে অরুণাভ ঘোষ বা এআইসিসি-র প্রতিনিধি শাকিল আহমেদ খানকে বারবার বক্তৃতা থামাতে হয়েছে তাঁদের উল্লাসের তীব্রতায়। এ দিন মহাজাতি সদনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অধীর চৌধুরী বা দীপা দাশমুন্সিকে দেখা যায়নি। ছিলেন না দিল্লির প্রথম সারির কোনও নেতাও। কিন্তু ছিলেন গার্ডেনরিচের কংগ্রেস নেতা মোক্তার মহম্মদ। প্রদেশ ছাত্র পরিষদের সভাপতি রাহুল রায় তাঁকে ‘হিরো’ বলে অভিহিত করেছেন। গার্ডেনরিচে হরিমোহন ঘোষ কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচনে গোলমালের পরে পুলিশ মোক্তারকে গ্রেফতার করেছিল। ১০১ দিন জেল খাটা ‘হিরো’কে পেয়ে বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়েও ছাত্র পরিষদের ছাত্র-ছাত্রীরা মাতেন হই-হল্লায়। ঢাকের বোলে শরীর দোলে! সভায় উপস্থিত প্রাক্তন ছাত্র নেতা শুভঙ্কর সরকার অবশ্য বললেন, “আজকের দিন তো আনন্দ করারই দিন।”
এখানেই শেষ নয়। বৃষ্টি-ভেজা সংগঠনের ছাত্র-ছাত্রীদের দেখে উৎসাহে ছাত্র পরিষদ সভাপতি তেতে উঠেছেন। তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের আক্রমণ প্রতিরোধে তিনি স্লোগান দিয়েছেন, “মার কা বদলা মার হ্যায়।” পুজোর পরে কলেজে কলেজে ছাত্র সংগঠনের ভোট হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। সেই ভোটের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিতে গিয়ে রাহুল বলেন, “তৃণমূলের বন্দুকের নল ঠেকাতে যা যা প্রস্তুতি নেওয়া উচিত, নিতে হবে।” কিন্তু রাহুলের বক্তৃতার পরেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য স্পষ্ট বলেন, “না। মারের বদলা মার নয়। মারের প্রতিরোধে আমাদের গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই লড়াই করতে হবে।” মানসবাবুও তৃণমূলের হামলা মোকাবিলায় গণতান্ত্রিক পথে প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা বলেন।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.