কোথাও সিপিএমের বিজয় মিছিল থেকে তৃণমূল সমর্থককে মারধরের অভিযোগ। কোথাও প্রধান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, আবার কোথাও তৃণমূল সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ সিপিএমেরপঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে সোমবার এমনই ঘটনা ঘটেছে বুদবুদ ও দুর্গাপুরের নানা প্রান্তে।
পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের পরে সিপিএমের মিছিল থেকে এক তৃণমূল সমর্থক ও তাঁর বাবা ও মাকে মারধরের অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বুদবুদের মানকরের উত্তর রায়পুরে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন মানকর পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ছিল। সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসাবে বোর্ড গঠন করে বামফ্রন্ট। এরপর সিপিএম এলাকায় মিছিল বের করে। দুপুর আড়াইটা নাগাদ মিছিলটি মানকরের উত্তর রায়পুর এলাকায় পৌঁছলে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের কাউন্টিং এজেন্ট সুদীপ ভট্টাচার্যের সঙ্গে সিপিএম সমর্থকদের বচসা বেঁধে যায়। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, সুদীপকে একা পেয়ে সিপিএম সমর্থকেরা তাঁকে মারধর করে। বাড়ির সামনে ছেলেকে মার খেতে দেখে তাঁকে বাঁচাতে আসেন সুদীপের বাবা তাপস ভট্টাচার্য ও মা তাপসী ভট্টাচার্য। অভিযোগ, তাঁদেরকেও ধাক্কাধাক্কি করা হয়। খবর পেয়ে এলাকায় যায় পুলিশ।
এরপর সুদীপবাবুকে মানকর গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহতকে দেখতে হাসপাতালে আসেন জেলাপরিষদের তৃণমূল সদস্য পরেশচন্দ্র পাল। তিনি বলেন, “মানকর পঞ্চায়েতে জিতে সিপিএম ভাবছে তারা আগের অবস্থায় ফিরে গিয়েছে।” সিপিএমের মানকর অঞ্চল কমিটির সম্পাদক কৃষ্ণ বসু মজুমদার বলেন, “যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে খুবই অন্যায় হয়েছে। দল কোনও গুন্ডামি অনুমোদন করে না। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল।”
দুর্গাপুরের কাঁকসা গ্রাম পঞ্চায়েতে অবশ্য দেখা গেল অন্যচিত্র। সোমবার এই পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করল সিপিএম। আগেও এই পঞ্চায়েত সিপিএমের দখলেই ছিল। এ বার এই পঞ্চায়েতের ২৬ টি আসনের মধ্যে বামফ্রন্ট পেয়েছে ১৮ টি। তৃণমূল পেয়েছে ৭টি। এখানে বোর্ড গঠনের আগে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে উপস্থিত তিন তৃণমূল সদস্যকে পুষ্পস্তবক দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়। বাকি তৃণমূল সদস্যরা এ দিন অনুপস্থিত ছিলেন। প্রধান হিসাবে দায়িত্ব নেন সিপিএমের তিন বারের বিজয়ী পঞ্চায়েত সদস্য নির্মলা কাউড়। উপপ্রধান হয়েছেন দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। এরপরই উৎসবে মেতে ওঠেন সিপিএমের দলীয় কর্মী-সমর্থকরা। তবে তা নিয়ে কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। বোর্ড গঠনের সময় দুর্গাপুরের আমলাজোড়া ও কাঁকসার বিদবিহার পঞ্চায়েতে নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়াতে পারল না তৃণমূল। এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের ২১টি আসনের মধ্যে ২০টিই পেয়েছে তৃণমূল। এ দিন প্রধান নির্বাচনের সময় উঠে আসে আইনুল হক ও কুলদীপ সরকার এই দু’টি নাম। পঞ্চায়েত ভবনের বাইরেও বচসায় জড়িয়ে পড়ে তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠী। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে ভোটাভুটিতে ১৩-৭ ব্যবধানে জিতে যান আইনুল হক। জয়ী একমাত্র সিপিএম সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন। বিদবিহার গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচনে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। পরে এক গোষ্ঠীর মনোনীত প্রার্থীকে প্রধান মনোনীত করে অন্য গোষ্ঠীর দাবি মত পঞ্চায়েত চালানোর স্টিয়ারিং কমিটি গড়া হয়। |