|
|
|
|
চন্দ্রকোনায় ‘ফেল’ ছাত্রীদের দ্বাদশ শ্রেণিতে তুলে বিড়ম্বনা
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঘাটাল |
ফেল করা ছাত্রীদের দ্বাদশ শ্রেণিতে তুলে বিড়ম্বনায় পড়লেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোড উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ঘটনা। একাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় ফেল করার পরেও স্কুলের ৪৪ জন ছাত্রীকে দ্বাদশ শ্রেণিতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। এরকম ক্ষেত্রে অনৈতিক ভাবে নম্বর বাড়িয়ে পাশ করেছে দেখানো হয় সাধারণত। তা না করে আসল নম্বর-সহ মোট ৪৯ জন ছাত্রীর নামের তালিকা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হিসাবে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে পাঠান স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। বিষয়টি নজরে আসার পরই চক্ষু চড়ক গাছ সংসদ কর্তৃপক্ষের। ফেল ছাত্রীদের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তাঁরা। ৪৯ ছাত্রীর মধ্যে ৪৪ জনই কেন ফেল করল এবং তাদের কোন যুক্তিতে দ্বাদশ শ্রেণিতে তোলা হলতার কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে। এ দিকে, ঘটনাটি জানাজানি হতেই শনিবার স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে ফেল হওয়া ৪৪ ছাত্রী। স্কুলে ঢুকতে পারেননি শিক্ষিকারা। ক্লাসও হয়নি। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুচিত্রা সিংহ বলেন, “একাদশ শ্রেণির ফলকে ঘিরে ঝামেলা হয়েছে। পরিচালন কমিটির সঙ্গে কথা না বলে মন্তব্য করব না।”
সংসদ সূত্রে খবর, একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা স্কুলেই হয়। খাতাও দেখেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কিন্তু, স্কুল কর্তৃপক্ষকে প্রশ্নপত্র ও খাতা সরবরাহ করে সংসদ। নিয়মানুযায়ী, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ করে উত্তীর্ণ হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের তালিকা পাঠিয়ে দিতে হয় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের আঞ্চলিক দফতরে। ওই তালিকা দেখে সংসদ উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম-এর ব্যবস্থা করে।
চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের একমাত্র বালিকা বিদ্যালয়টিতে কয়েক বছর আগে উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম চালু হয়েছে। শুধু কলা বিভাগই রয়েছে এখন। এ বার ৪৯ জন ছাত্রীর মধ্যে মাত্র ৫ জন পাশ করলেও প্রত্যেককে উত্তীর্ণ হিসাবে দেখিয়ে তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে। স্কুলের এক শিক্ষিকা বলেন, “প্রতি বার নম্বর বাড়িয়ে ফেল করাদের উত্তীর্ণ দেখানো হয়। এ বার প্রধান শিক্ষিকা নম্বর না দেখে তালিকা পাঠানোয় বিষয়টি সামনে চলে আসে। সংসদ অফিস থেকে ডেকে পাঠানো হয়। আমাদেরও যেতে হয়েছিল।” মেদিনীপুর জেলার সংসদের আঞ্চলিক উপ-সচিব সৌভিক ঘোড়ুই বলেন, “স্কুল থেকে পাঠানো তালিকায় ৫ জন পাশ করেছে। তারাই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে পারবে।”
অধিকাংশ ছাত্রী ফেল হওয়ায় স্কুলের পঠনপাঠনের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পড়ানোর মানের উন্নতি না হলে স্কুলে এই পাঠ্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার কড়া বার্তা দিয়েছে সংসদ। |
|
|
|
|
|