মানুষের অপছন্দের মুখ পাল্টাবই, বার্তা বুদ্ধদেবের
ঞ্চায়েত ভোটে তাঁরা ‘হাওয়ায় উড়ে’ যাননি। শাসক দলের সন্ত্রাস না-থাকলে এমন একতরফা ফল হত না বলে দাবি করছেন। তবে তারই মধ্যে মানুষের মনোভাব থেকে শিক্ষা নিয়ে দলে শুদ্ধকরণ প্রক্রিয়া দ্রুত সেরে ফেলা হবে। পঞ্চায়েত ভোটের ফলপ্রকাশের পরে প্রথম বার মুখ খুলে এই বার্তাই দিলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
দু’বছর আগে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে পরাজয় মাথা পেতে নিয়েছিলেন বুদ্ধবাবুরা। কিন্তু এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাস, ভোট লুঠ এবং গণনায় কারচুপির জন্য সঠিক জনমতের প্রতিফলন ঘটেনি বলে তাঁরা দাবি করছেন। সেই সুরেই সোমবার মহাজাতি সদনে মুজফ্ফর আহমেদের ১২৫তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বর্ধমান, বীরভূম, হুগলি বা পূর্ব মেদিনীপুরের মতো জেলায় সুষ্ঠু ভাবে ভোটই হয়নি। নির্বাচনী পরিবেশের ফারাক বোঝাতে তাঁর প্রশ্ন, “দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া বা মালদহে কি আমরা হাওয়ায় উড়ে গিয়েছি?” তবে শুধু সন্ত্রাসে ভর করেই তৃণমূল পঞ্চায়েতে জিতেছে, এমন সরলীকৃত অভিযোগের দিকে যাননি বুদ্ধবাবু। বলেছেন, “আমরা বলছি না, সন্ত্রাসের জন্যই তৃণমূল জিতেছে। কিন্তু এ সব না থাকলে তৃণমূল কিছুতেই এই ভাবে জিততে পারত না!”
মহাজাতি সদনের অনুষ্ঠানে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
শুধু সন্ত্রাস বা কারচুপির অভিযোগেই থেমে থাকেননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্চায়েত ভোটের পরে দলের ভিতরে-বাইরে সমালোচনা চলছে, অতীতে গা-জোয়ারি করে জিততে যাওয়ারই মাসুল এখন দিতে হচ্ছে। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে এ দিনই দলীয় সমাবেশে এসএউসি-র সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ মন্তব্য করেছেন, “রিগিং, সন্ত্রাস, বুথ জ্যাম, নির্বাচনে অগণতন্ত্র যা সিপিএম করেছিল, সে পথেই তৃণমূল চলছে!” এই সমালোচনা সম্পর্কে সম্যক অবহিত হয়েই এ দিন বুদ্ধবাবু দৃঢ় কণ্ঠে জানিয়েছেন, যাঁদের ভাবমূর্তি নিয়ে জনমানসে প্রশ্ন আছে, তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হবেই। এই ব্যাপারে দলীয় প্রক্রিয়া মেনে এগোতে হচ্ছে। সেই প্রক্রিয়া এ বার দ্রুত হবে। যাঁরা দলকে ব্যবহার করে অসাধু পথে টাকা কামাবেন, এলাকায় দাদাগিরি করবেন, সমাজবিরোধী নিয়ে চলবেন, তাঁদের রাখা হবে না। বুদ্ধবাবুর কথায়, “অনেকে বলেন, এলাকায় এই সব মুখ দেখতে চাই না। এঁদের পাল্টান। আমরা এঁদের চিহ্নিত করেছি। প্রক্রিয়াটা দ্রুত করতে হবে। মানুষ তা-ই চান।”
তবে বুদ্ধবাবুর এমন ঘোষণায় দলেই প্রশ্ন উঠেছে, তাঁর পুরনো নির্বাচনী এলাকায় তাঁরই নামের ছায়ায় যাঁরা প্রতিপত্তি বাড়িয়েছিলেন, তাঁদের ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে? প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী যে ভঙ্গিতে ঘোষণা করেছেন এ দিন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে প্রাক্তন এক সিপিএম নেতার তির্যক মন্তব্য, “পার্টিতে দাদাগিরি করে এলাকায় দাদাগিরি বন্ধ করা যায় না!”
পঞ্চায়েতে শাসক দলের সাফল্য দেখে মনে হচ্ছে, সাম্প্রতিক যে সব ঘটনায় রাজ্য কাঠগড়ায় উঠেছে, তার কোনও প্রভাবই ভোট-বাক্সে পড়েনি। বুদ্ধবাবুর বক্তব্য, সারদা-কাণ্ড কার্পেটের তলায় চেপে দেওয়া হয়েছে। কৃষক আত্মহত্যা বা কামদুনির ঘটনার মীমাংসা এই ভোটে হয়নি।
তাঁর কথায়, “এ সব প্রশ্নের মীমাংসা হয়নি বলেই আমাদের লড়াই ফুরিয়ে যায়নি। এই পঞ্চায়েতে বুঝেছি, আমরা শূন্যে ভাসছি না! সমর্থন আমাদের দিকেও আছে। সেই সমর্থন নিয়েই এগোব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.