তেতো ওষুধেও রোগ সারছে না অর্থনীতির
র্থনীতির এখন দুরারোগ্য ব্যাধি। তেতো ওষুধ খেতে কষ্ট হয় ঠিকই, তবে অনেক ক্ষেত্রেই অসুখ সারে। চিদম্বরম এবং সুব্বারাও নামের দুই ‘বদ্যি’ যে-সব ওষুধ এবং পথ্যের প্রয়োগ করেছেন, তা বেশ তেতো হলেও ফলের দেখা মেলার কিন্তু কোনও লক্ষণ নেই। অসুখ বেড়েই চলেছে। ওষুধ সম্পর্কে মতের অমিলও দেখা দিয়েছে দুই বদ্যির মধ্যে। ধীরে ধীরে মহামারির আকার নিচ্ছে এই ব্যাধি। কেউ বাদ নেই, আক্রান্ত সবাই।
উৎপাদন তলানিতে। পাইকারি দাম কমলেও খুচরো বাজারে আগুন। পড়েই চলেছে শেয়ার ও বন্ডের বাজার। কমার বদলে বাড়তে শুরু করেছে ঋণে সুদের হার। অনেক দাওয়াই প্রয়োগ করা সত্ত্বেও ডলারের দাম কিছুতেই ৬০-এর নীচে রাখা যাচ্ছে না। আদার ব্যাপারীর হয়তো জাহাজের খবর না-রাখলেও চলে। কিন্তু প্রতিটি নাগরিককে এখন ডলারের খবর রাখতে হয়। এই ডলার দিয়েই তেল, সার ও বহু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করতে হয়। আগে যা ৪৫ টাকায় কেনা যেত, এখন তা কিনতে হচ্ছে ৬১ টাকায়। বিদেশে শিক্ষা এবং ভ্রমণ ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে সাধ্যের বাইরে।
এই পরিস্থিতিতেও কারও কারও ঘরে ‘পৌষ মাস’। রফতানিকারীরা ডলার ভাঙিয়ে অনেক বেশি টাকা পাচ্ছেন। এই কারণেই শেয়ার বাজারের অত্যন্ত দুর্বল অবস্থাতেও পেশি প্রদর্শন করছে ইনফোসিস, উইপ্রো এবং টিসিএস-এর মতো সংস্থা। অন্য দিকে নাভিশ্বাস উঠছে আমদানি নির্ভর সংস্থাগুলির। আগের পাঁচ মাস টানা লগ্নি করে গেলেও জুন-জুলাই মাসে ইক্যুইটির বাজার থেকে ১৭,০০০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে বিদেশি লগ্নিকারীরা। এতে এক দিকে যেমন শেয়ার বাজার দুর্বল হয়ে পড়েছে, অন্য দিকে তেমনই শক্তি হারিয়েছে টাকা। বন্ডের বাজার থেকেও মোটা লগ্নি প্রত্যাহার করেছে বিদেশিরা। যে-সব কারণে এরা লগ্নি তুলে নিচ্ছে, সেগুলি হল:
(১) ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি। জুলাইয়ে ঋণনীতির পর্যালোচনায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলেছে: ২০১৩-’১৪ সালে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির হার আগের পূর্বাভাস ৫.৭% থেকে কমে ৫.৫% হতে পারে।
(২) ভারতের ক্রেডিট রেটিং কমে আসার আশঙ্কা।
(৩) চলতি খাতে লেনদেনে বড় ঘাটতি নিয়ে দুশ্চিন্তা।
(৪) ডলারে টাকার মূল্যপতন।
(৫) সুদ হ্রাসের সম্ভাবনা বিলীন হয়ে যাওয়া।
(৬) আর্থিক সংস্কার ঝিমিয়ে পড়া।
(৭) সরকারের রাজনৈতিক সমস্যা এবং আগামী লোকসভা ভোটকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা।
এত সমস্যা রাতারাতি মিটে যাওয়ার নয়। এই কারণে বিদেশিরা আরও লগ্নি তুলে নিতে পারে। এ রকম চলতে থাকলে শেয়ার বাজার আরও পড়বে ও ডলারের ঊর্ধ্বগতি তথা টাকার মূল্যপতন চলতে থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সমস্যা সমাধানে কেন্দ্র এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এ পর্যন্ত যে-সব পদক্ষেপ করেছে, তা খুব একটা ফল দেয়নি। ডলারের দামে রাশ টানতে পরোক্ষে সুদ বাড়ানো হয়েছে, কমানো হয়েছে টাকার জোগান। যদিও এই সিদ্ধান্ত শিল্পের ক্ষেত্রে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়াবে। আশার কথা, বাড়ি-গাড়ি ঋণে সুদ হয়তো এখনই বাড়ছে না। জমায় সুদ কমার সম্ভাবনাও নেই। বরং ছোট মেয়াদে কোনও কোনও ব্যাঙ্ক সুদ বাড়াচ্ছে। আমানত বাড়াতে অনেক ব্যাঙ্কই হয়তো এ পথে হাঁটবে।
দেশে মেয়াদি লগ্নি টানতে (যে লগ্নি দুর্দিনে ফিরে যাবে না) কেন্দ্র প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির পথ প্রশস্ত করেছে। এটি সদর্থক বার্তা পাঠালেও, এই গাছ বড় হয়ে ফল দিতে কিন্তু সময় নেবে। বিদেশে ভারত সরকারের বন্ড ইস্যুতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আপত্তি। এনআরআই বন্ড ইস্যুর ব্যাপারে উৎসাহ দেখায়নি ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক। যা পরিস্থিতি, তাতে ডলার আসছে সরু গলি দিয়ে। বেরিয়ে যাচ্ছে প্রশস্ত রাজপথ ধরে। এই কালো মেঘের পাশে কোনও রুপোলি রেখার দেখা মেলেনি।
আশার কথা একটাই। এ পর্যন্ত গোটা দেশে বর্ষা ভাল হয়েছে। এতে খাদ্যপণ্যের জোগান বেড়ে, দাম কমবে। কৃষকের হাতে বেশি পয়সা এলে গ্রামে শিল্পপণ্যের চাহিদা বাড়বে। বিদেশি লগ্নি বাড়ানো ছাড়াও অনাবশ্যক আমদানি নিয়ন্ত্রণের কথা ভাবছে কেন্দ্র। উৎসাহ দিচ্ছে রফতানিতে। অনাবাসীদের কাছে আবেদন করা হচ্ছে দেশে টাকা পাঠাতে। শোচনীয় অবস্থা সাধারণ মানুষের। তত্ত্বকথায় এঁদের পেট ভরবে না। তাই অর্থনীতির হাল ফেরানোই হওয়া উচিত ভোটের মুখে বড় স্লোগান। এটাই বর্তমান সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।

অ্যাপলের পাশে ওবামা প্রশাসন
দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাঙের সঙ্গে পেটেন্ট যুদ্ধে এ বার খোদ ওবামা সরকারকে পাশে পেল সিলিকন ভ্যালির তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা অ্যাপল। অ্যাপলের পুরনো সংস্করণের কিছু আইফোন ও আইপ্যাড আমদানি ও বিক্রির উপর মার্কিন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশনের জারি করা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। স্যামসাঙের নিজস্ব পেটেন্টে অনধিকার হস্তক্ষেপ করে আইন ভাঙার শাস্তি হিসেবে মাস দুয়েক আগে আইফোন-৪, আইফোন-৩জিএস, আইপ্যাড-৩জি ও আইপ্যাড-২ ৩জি-র উপর ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করে কমিশন। তার পর তা প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছে পাঠানো হয় অনুমোদনের জন্য। কিন্তু মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি মাইকেল ফ্রোম্যান কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানান, ওই নিষেধাজ্ঞা প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট করবে। ভুগবেন ক্রেতারাও। তাই বাণিজ্যনীতির বিভিন্ন শর্ত পর্যালোচনা করে এই রায় নামঞ্জুর করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভেটো দিয়েছেন তিনি। ফলে আইফোন ও আইপ্যাড বিক্রি করতে পারবে অ্যাপল। স্যামসাং অবশ্য চাইলে এ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবে বলে জানান ফ্রোম্যান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.