জালান রোড
এ কী জ্বালা
ঢেউ খেলানো রাস্তা। পিচের চিহ্ন নেই। জল-কাদায় ভরা। কোথাও পাথর, কোথাও রাবিশের স্তূপ। নর্দমা উপচে পড়ছে। আলোর ব্যবস্থা নেই। এ ছবি হাওড়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা জালান রোডের। রাস্তার হাল নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।
সালকিয়া থেকে কিছুটা দূরেই এই জালান রোড। জিটি রোড এবং ধর্মতলা রোডের সংযোগকারী রাস্তা। প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা ও কুড়ি ফুট চওড়া এই রাস্তাটি হাওড়া পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। লিলুয়া থেকে কোনও রোগীকে জালান রোড দিয়েই সত্যবালা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। কয়েক হাজার বাসিন্দা ছাড়াও দিনে গড়ে হাজারখানেক লরি এই রাস্তা ব্যবহার করে। কিন্তু মাঝেমধ্যেই অবস্থা এমন হয় যে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
রাস্তাটি মালিপাঁচঘরা থানা এলাকায় পড়ে। পুলিশ সূত্রে খবর, রাস্তার অবস্থা এমন হয়েছিল যে পুলিশের গাড়িও ঢুকতে পারত না। মাস পাঁচেক আগে থানা থেকে কয়েকটি জায়গায় রাবিশ ফেলা হয়। এখনও অবস্থা যে-কে-সেই। বহু কষ্টে বড় গাড়ি যেতে পারলেও হেঁটে, সাইকেল বা মোটরসাইকেলে চলাই দায়। রাস্তার দু’পাশে বাড়ি, দোকান এবং প্রায় ৩০টি ছোট-বড় কারখানা রয়েছে। বেহাল রাস্তার জন্য তাঁদের নিত্য ভোগান্তি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, লরি চলাচলের ফলে রাস্তার অনেকটা অংশ বসে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল করের কথায়: “গোটা রাস্তারই খারাপ অবস্থা। জল-কাদা, পাথর, রাবিশের স্তূপের পাশ দিয়ে যাওয়াই যায় না। পাশের দেওয়াল ধরে যেতে হয়।”
আলো না থাকায় রাতে চলাচল করা আরও সমস্যার। রয়েছে নিরাপত্তার সমস্যাও। স্থানীয় এক কলেজ ছাত্রীর কথায়: “রাস্তায় আলোর কোনও ব্যবস্থা নেই। কারখানাগুলিও বন্ধ হয়ে যায়। ভয়ে ভয়ে টিউশন সেরে বাড়ি ফিরি।” হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “জালান রোডের বেহাল দশা। আলোর ব্যবস্থাও নেই। সমস্যার কথা জানিয়ে পুরসভাকে চিঠি দিয়েছি।” স্থানীয় কাউন্সিলর সিপিএমের বাসন্তী মজুমদার বলেন, “এই রাস্তার কথা পুরসভাকে জানিয়েছিলাম। রাস্তা সংস্কার এবং আলোর ব্যবস্থা করতে গেলে মোট ৫২ লক্ষ টাকা খরচ হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় বিধায়ককেও জানানো হয়েছে।”
হাওড়ার ডেপুটি মেয়র কাবেরী মৈত্র বলেন, “অর্থাভাবে রাস্তাটির সংস্কার করা যাচ্ছে না। অর্থের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে।” স্থানীয় বিধায়ক তৃণমূলের অশোক ঘোষ বলেন, “এই রাস্তার খুবই খারাপ অবস্থা। সারানোর জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।”

ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.