এমনকী বাঘের খেলাও দেখাতেন বাঙালি মেয়েরা
বাঙালির সার্কাস
কে জানত আজ থেকে একশো বছর আগে বাঙালীর সার্কাস ভারতবর্ষে এত নাম কিনেছিল? সবচেয়ে বিখ্যাত ছিল প্রোফেসর বোসের গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস। এই সার্কাসে নাকি বাঙালী মেয়েরাও খেলা দেখাত, এমনকি বাঘের খেলাও। আর সেই সঙ্গে রাশিয়ান, আমেরিকান, জার্মান আর ফরাসী খেলোয়াড়ও ছিল।... ১৯২০-এ প্রিয়নাথ বোস মারা যান। আর তার পর থেকেই বাঙালী সার্কাসের দিন ফুরিয়ে আসে।’’ এ সব কথা তোপসেকে দিয়ে বলিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়, তাঁর ছিন্নমস্তার অভিশাপ-এ (আনন্দ)। প্রিয়নাথ বসু (১৮৬৫-১৯২০) সার্কাস-দল নিয়ে কেবল তামাম ভারতীয় উপমহাদেশ নয়, চষে বেড়িয়েছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াও।

ছবি ১
অনন্য প্রসাদগুণের সঙ্গে তিনি স্মৃতিকথার ঢঙে লিখেছিলেন প্রোফেসর বোসের অপূর্ব্ব ভ্রমণ-বৃত্তান্ত (১৩০৯ বঙ্গাব্দ)। দেবাশিস বসুর সম্পাদনায় পরিপূরক তথ্য, অপ্রকাশিত নথি-চিঠি-আলোকচিত্র ও মূলানুসারী অলংকরণ-সহ আবার প্রকাশিত হতে চলেছে সেই দুষ্প্রাপ্য বইটি (কারিগর)। ছবি ২-এ সদলবলে বসে আছেন প্রিয়নাথ, পাশে পদকসাঁটা কোট পরিহিত জাদুকর গণপতি চক্রবর্তী। অপ্রকাশিত ছবিটি এই বই থেকে।
তোপসে এত কথা জেনেছিল লালমোহনবাবুর মুখে, আর তিনি জেনেছিলেন একটি বই পড়ে। বাঙ্গালীর সার্কাস নামের সে বই প্রথমে সংক্ষেপে লিখেছিলেন প্রিয়নাথের মেজো ছেলে অবনীন্দ্রকৃষ্ণ বসু (১৮৯৮-১৯৩৯)। সুভাষচন্দ্র, শরৎচন্দ্র, প্রফুল্লচন্দ্রের প্রশংসায় উৎসাহিত হয়ে পরে তিনি প্রকাশ করেন পরিবর্ধিত একটি সংস্করণ (১৯৩৮)।

ছবি ২
তার মধ্যে যে শুধু প্রিয়নাথের প্রসঙ্গ ঠাঁই পেয়েছিল, তা নয়। সমকালীন অন্যান্য সার্কাস, নানা মজাদার ঘটনা, বিবিধ দুর্ঘটনা বা বিপদ-আপদের সবিস্তার বর্ণনায় ঠাসা ছিল আকরগ্রন্থটি। আকর্ষণীয় বহু আলোকচিত্রও সাজিয়ে দিয়েছিলেন পেশাদার শিল্পী অবনীন্দ্রকৃষ্ণ। পঁচাত্তর বছর পরে হরিপদ ভৌমিকের কথামুখ-সহ পুনর্মুদ্রিত হল সেই দুর্লভ সচিত্র বাঙ্গালীর সার্কাস (গাঙচিল), বাঙালির বাহু এবং বুদ্ধিবলের এক আশ্চর্য বৃত্তান্ত। সঙ্গে সেই বই থেকে ছবিতে (ছবি ১) প্রিয়নাথ বসু, যৌবনে।
ফিরে পাওয়ার আনন্দের মধ্যে তবু একটু বিষাদের সুর বাজছে। আর এক সার্কাস-নায়ক কৃষ্ণলাল বসাকের বিচিত্র ভ্রমণ (১৩২৮ বঙ্গাব্দ) কবে প্রকাশকদের কৃপাদৃষ্টি পাবে?

জিনিয়াস
সার্ভেয়ার জেনারেল জর্জ এভারেস্টের চাই অঙ্কে তুখোড় টগবগে তরুণ। হিন্দু কলেজের অঙ্কশিক্ষক জন টাইটলার তাই পাঠালেন ১৯ বছরের ছেলেটিকে। পড়া শেষ হয়নি, জিটিএস সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে ৪০ টাকা মাইনের চাকরি নিলেন তিনি। ১৭ বছর দেরাদুন সার্কল-এ কাজ করার পর কলকাতায় এসে যোগ দেন সার্ভে অব ইন্ডিয়ার চিফ কম্পিউটার পদে। ১৯৫২-য় পিক ১৫-এর উচ্চতা মাপলেন। নাম হল মাউন্ট এভারেস্ট। জর্জ এভারেস্টের মন্তব্য ‘জিনিয়াস’! ডিরোজিয়ো ভাবধারার এই ‘জিনিয়াস’ রাধানাথ শিকদারই শেষ জীবনে কাজ করেছেন স্ত্রী শিক্ষার প্রসারে। দেরাদুনে পাহাড়ি কুলিদের বেগার খাটানোর প্রতিবাদ করায় তাঁর জরিমানা হয় ২০০ টাকা। এই সব ঘটনাই উঠে এসেছে তাঁর দ্বিশতজন্মবর্ষে (১৮১৩-১৮৭০) ভ্রমণ সংস্থা ‘চলো যাই’-এর বানানো ‘রাধানাথ শিকদার-এক বিস্মৃত জিনিয়াস’ নামের ১৭ মিনিটের তথ্যচিত্রে। দেখানো হবে ৩ অগস্ট সন্ধে ৭টায় বাংলা আকাদেমি সভাগৃহে। অন্য দিকে ক্যানসার বিশেষজ্ঞ শঙ্করকুমার নাথ রাধানাথ শিকদারকে নিয়ে লিখেছেন গবেষণাধর্মী বই রাধানাথ শিকদার/ তথ্যের আলোয় (চিরায়ত)। বইতে তাঁর কর্ম ও ব্যক্তিজীবনের নানা অজানা দিক উদ্ভাসিত। দুর্লভ ও ঐতিহাসিক তথ্যে ঠাসা এই বইটি রাধানাথের জীবনীর অভাব অনেকটা দূর করবে। ।

বনের অধিকার
‘সুন্দরবন অঞ্চলের কয়েক লক্ষ মানুষ প্রহর গুনছেন আশঙ্কায়। প্রায় নিরস্ত্র অসহায় অবস্থায় একটা একটা করে দিন পার করছে সুন্দরবন। ২০০৯-এর বিধ্বংসী আইলা গোটা সুন্দরবন জুড়ে বাঁধের যে ক্ষতি করেছিল তার দশ শতাংশ পূরণ করা যায়নি আজও।’ জানিয়েছেন জ্যোতিরিন্দ্রনারায়ণ লাহিড়ী সম্পাদকীয়তে। তাঁর সম্পাদিত শুধু সুন্দরবন চর্চা-র সাম্প্রতিক সংখ্যাটি আগের মতোই সুন্দরবনের তথ্য ও ঘটনাপঞ্জিতে সম্পৃক্ত, সঙ্গে চমৎকার আলোকচিত্র। অন্য দিকে সুন্দরবন বনাধিকার সংগ্রাম কমিটি প্রকাশ করেছে প্রসঙ্গ: সুন্দরবন (রচনা সংশ্লেষ: প্রদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় শুভ্রপ্রতিম রায়চৌধুরী), তাতে আছে ‘তফসিলী জনজাতি এবং অন্যান্য পরম্পরাগত বনবাসীদের (বনাধিকার স্বীকার) আইন, ২০০৬’। বনজীবী মানুষদের অধিকার সুরক্ষিত করা ও বনের সাধারণ সম্পদে তাঁদের স্বত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতেই এই পুস্তিকা, ‘যাতে সরকারের দেওয়া আইনি অধিকারগুলো সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।’

যৌথ প্রদর্শনী
জেলের গণ্ডির মধ্যে জীবন কাটালেও এক সময় ভাল ছবি আঁকতেন বাপি বাউড়ি, দিলীপ লেট, সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়, নন্দিতা সাহা। আলিপুর জাতীয় সংশোধনাগার ও মহিলা সংশোধনাগারের সাজাপ্রাপ্ত এই আসামিদের উৎসাহিত করতেই আঁকার প্রশিক্ষণ দেন গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ক্রাফ্টের ছাত্রছাত্রীরা। ২৫ জুলাই পার্থপ্রতিম, পল্লবী, সঞ্জীব, সুমন্ত, নারায়ণ— কলেজের অন্তিম বর্ষের এই ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে যৌথ ভাবে ওঁদের আঁকার প্রদর্শনী ‘প্রয়াস’ শুরু হয়েছে আকাদেমি অব ফাইন আর্টস-এ, চলবে ৩১ জুলাই (৩-৮টা) পর্যন্ত। অন্য দিকে ২ অগস্ট গ্যালারি গোল্ড-এ শুরু হচ্ছে ঋজুশ্রীর আঁকা ছবির একক প্রদর্শনী ‘স্ক্রিবলিং’। আলপনা, নকশিকাঁথা, দেওয়ালি পুতুল,পটুয়ার ছবি— চার পাশ থেকে নেওয়া তাঁর ছবির উপাদান। সে সবের মেলবন্ধন ঘটিয়েই রঙ-তুলিতে নানা ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন মেদিনীপুর আর্ট কলেজের এই প্রাক্তনী। প্রদর্শনী চলবে ৭ অগস্ট (৩-৮টা) পর্যন্ত।

পাঁইট পুরাণ
‘যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়িবাড়ি যায়/ তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়’। দু’লাইন উদ্ধৃত করে ‘উত্তরশুঁড়িদের’ উৎসর্গ করা হয়েছে সেই পুরাণটি। লেখক গোরা রায়। আপাত অপরিচিত এই ভবঘুরে লেখক সুরা নিয়ে গভীর তত্ত্বালোচনা খেলাচ্ছলে লুফে নিয়েছেন তাঁর দেশ-বিদেশের হরেক গল্পে। বোতল নিয়ে সেই আশ্চর্য বইয়ের নাম বোতল নয়, পাঁইট পুরাণ (বিভাব)। মুখবন্ধ-এ নিজের কথা লিখছেন লেখক, ‘গোরা রায়ের জন্ম ত্রেতাযুগে। প্রথাগত শিক্ষার বাইরে নানান বিষয়ে জ্ঞান আহরণ এবং বিনামূল্যে বিতরণই তার জীবনের উদ্দেশ্য।... ভূ-পর্যটক গোরা প্রমাণ করতে চান পৃথিবীর তিনভাগই জল।’ আর তা প্রমাণ করতে এক আশ্চর্য জলজ-দর্পণ রচনা করেছেন গোরা। পরিশেষে ওয়াইশবিয়ার থেকে স্কটিশ এল-সহ নানা পানীয় এবং চাট-তথ্য টীকাকারে। রাধাপ্রসাদ গুপ্ত ওরফে শাঁটুলবাবু-র যোগ্য উত্তরশুঁড়ি কি তবে এই বার বোতলমুক্ত হলেন? সঙ্গে বইটির প্রচ্ছদ। স্পেনের আলিকান্তের একটি শুঁড়িখানার ছাদের ফ্রেস্কো এবং বিভিন্ন বিয়ার কোম্পানির লেবেল, বিজ্ঞাপন ও বিয়ার-সংক্রান্ত কার্টুন ব্যবহার করে প্রচ্ছদটি নির্মাণ করেছেন সৌম্যেন পাল।

পর্তুগালের ছবি
পর্তুগালের ছবি বলতেই মানোয়েল দ্য অলিভিয়েরা’র কথা মনে পড়ে, তাঁর বয়স একশো পেরিয়েছে অথচ এখনও ছবি করায় খামতি নেই। তিনি দেশের যে সংকট বারবার তুলে আনেন ছবিতে, তাই হালফিল পর্তুগালের ছবির বিষয়। যেমন জোয়াও নুনো পিন্টো’র ‘আমেরিকা’। সেখানে পূর্ব ইয়োরোপের অনুপ্রবেশকারীদের জন্য জাল পাসপোর্টের ব্যবস্থা করে পর্তুগালের একটি মানুষ, তার রুশ স্ত্রীর সূত্রে। বেআইনি এ কারবারে বিপদ ঘনিয়ে এলে সবচেয়ে ক্ষতি হয় তাদের ছোট্ট ছেলেটির। এমনই একগুচ্ছ ছবি নিয়ে পর্তুগিজ চলচ্চিত্র উৎসব, নন্দনে, ২৯-৩১ জুলাই। উপলক্ষ পর্তুগালের জাতীয় দিবস। আয়োজনে সিনে সেন্ট্রাল, সহায়তায় দিল্লির পর্তুগিজ কালচারাল সেন্টার ও কলকাতার কনসুলেট অব পর্তুগাল।

রবীন্দ্র-গ্রন্থমেলা
বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগের উদ্যোগে এ বার রবীন্দ্র গ্রন্থমেলা নিউটাউনের রবীন্দ্রতীর্থে। ৪ অগস্ট বিকেল পাঁচটায় উদ্বোধন করবেন রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী। পরে থাকবে বিশ্বভারতী পাঠভবনের ছাত্রছাত্রীদের নৃত্যনাট্য চিত্রাঙ্গদা। মেলা চলবে ১১ অগস্ট পর্যন্ত (২-৭টা)। অন্য দিকে ৪ অগস্ট রবীন্দ্রসদনে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠান ‘কাঁদায়ে গেলে’। বর্ষার গান নয়, শ্রাবণের পটভূমিকায় বিদায়ের গানে শিল্পী রাহুল মিত্র। ঋতু গুহের প্রাক্তন ছাত্র রাহুল বরাবরই একক অনুষ্ঠানে তুলে আনেন বিভিন্ন বিষয়। বাইশে শ্রাবণ স্মরণে তাঁর এ বারের বিষয় বিদায়ের গান। আয়োজনে ‘উৎসাহ-উদ্ভাস’।

প্রত্নতত্ত্ব ও বিজ্ঞান
অতীত-অনুসন্ধানে আজ বিজ্ঞান অপরিহার্য। মাটি খুঁড়ে সে কালের নিদর্শন উদ্ধার করলেই শুধু হল না, তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে বিজ্ঞান লাগবেই। আবার প্রত্নবস্তু সংরক্ষণেও বিজ্ঞানকে চাই। এ বার ভারতীয় সংগ্রহশালা এ বিষয়ে তিন দিনের এক আলোচনার আয়োজন করেছে। ৬ অগস্ট সকাল ১০টায় আশুতোষ জন্মশতবার্ষিকী হলে এর উদ্বোধন, চলবে ৮ তারিখ পর্যন্ত। উদ্বোধনী ভাষণে পুণের ডেকান কলেজের পি পি যোগলেকর, প্রধান অতিথি এনসিএসএম-এর ডিজি জি এস রাউতেলা। সারা দেশের অগ্রণী বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞরা থাকছেন এখানে, সামান্য কোর্স ফি দিয়ে উৎসাহীরাও যোগ দিতে পারেন।

পুরুলিয়া থেকে
বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবী কী ভাবে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে চলছে, তাই নিয়ে ‘তাতল ভূমির তিয়াস’ নাটকটি বেঁধেছিল পুরুলিয়ার বাবলিং বাড্স স্কুলের খুদে পড়ুয়ারা। সম্প্রতি এই নাটকের আসর বসেছিল ‘বিড়লা শিল্প ও কারিগরি সংগ্রহালয়’-এ। দশম শ্রেণি পর্যম্ত ছাত্রছাত্রীদের এই প্রতিযোগিতায় পুরুলিয়ার বছর নয়ের খুদেরা দাপুটে অভিনয় করে ছিনিয়ে নিল প্রথম পুরস্কার। সুরজিৎ মোদক শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছে। ২০০১ থেকে পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিকে নিয়ে এই ‘বিজ্ঞান নাটক প্রতিযোগিতা’ হচ্ছে। এ বারে বিষয় ছিল ‘সমাজ ও বিজ্ঞান’। প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় পুরস্কার পেল ওড়িশার স্কুলপড়ুয়ারা।

জন্মদিনে
‘দূর গগন কি ছাওঁ মে’ আর ‘দুর কা রাহি’ ছবির সেই কিশোরটি আবার এই শহরে। ৪ অগস্ট কিশোরকুমারের ৮৫তম জন্মদিনে উত্তম মঞ্চে বাবার স্মৃতি আর গান নিয়ে সহশিল্পীদের সঙ্গে জমিয়ে দেবেন অমিতকুমার। তাঁর সঙ্গে গাইবেন আরও অনেকে। আয়োজক ‘এক্সিন মিডিয়া লিমিটেড’। আশ্চর্য সমাপতন, সিনেমায় কিশোরকুমারের প্রথম সফল গান ‘মরনে কি দোয়াঁয়ে কিঁউ মঙ্গু’। এই গানটি দিয়েই খেমচাঁদ প্রকাশ প্রকাশিত করেছিলেন সেই আশ্চর্য প্রতিভাটিকে। সেটা ১৯৪৮, ছবির নাম ‘জিদ্দি’। এ দিকে কিশোরের কণ্ঠে শচীন দেববর্মনের স্মৃতি আর তাঁর সুরে কিশোরের গান নিয়ে কসমিক হারমনি প্রকাশ করেছে একটি স্মরণীয় অ্যালবাম।

তিন দশক
তিরিশ বছরে পড়ছে ‘পঞ্চম বৈদিক’। ১৯৮৩ সালে ‘নাথবতী অনাথবৎ’ দিয়ে শুরু হয়েছিল থিয়েটারের নতুন এক যাত্রার। তার পরেই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে ‘কথা অমৃতসমান’। শাঁওলী মিত্রের পাশে পঞ্চম বৈদিক-এর আর এক নির্দেশক অর্পিতা ঘোষ। দেড় দশক আগে তাঁর থিয়েটারে আসা। ‘ফোর্থ ওয়াল’ নামে একটি দলের সঙ্গে কাজ করেছেন বহু দিন। তার পরে ‘পঞ্চম বেদ চর্যাশ্রম’-এ শাঁওলী মিত্রের কাছে থিয়েটারের শিক্ষা নেওয়া। এক বছরের শিক্ষার পরে কাজ শুরু পঞ্চম বৈদিক-এর সঙ্গে। প্রথম নির্দেশিত নাটক সুকুমার রায় অবলম্বনে ‘হ য ব র ল’। তার পরে একের পরে এক নাটকের সফল নির্দেশনা। বিতর্ক তাঁকে ঘিরে থেকেছে সর্বদা। ‘পশুখামার’ মনে পড়বে অনেকের। তবু এই নাট্যকর্মী থিয়েটার করেছেন প্রবল আগ্রহে। এখন ব্যস্ত তিরিশ বছর উদ্যাপনের উৎসব নিয়ে। ১৯ থেকে ২৫ অগস্ট অ্যাকাডেমিতে ন’টি নাটকের উৎসবে থাকছে ‘নাথবতী অনাথবৎ’, ‘কথা অমৃতসমান’, ‘পশুখামার’, ‘রাজনৈতিক হত্যা’, ‘অচলায়তন’-সহ একটি নতুন নাটক ‘অস্তমিত মধ্যাহ্ন’। নাটক নির্বাচন কোন দিকে তাকিয়ে? “ভারতবর্ষের বড় সময় আর এই ছোট সময়টাকে বুঝতে চেয়েছি। শুরু করেছি মহাভারত থেকে। তার পরে নানা পরিবর্তনের বাঁক ধরে নির্বাচনে নিশ্চয় কাজ করেছে আমাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণটাও,” বলছেন অর্পিতা।
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য

ঐতিহ্য
অক্টোবর, ১৯৯৭। কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ভবন চিহ্নিত করার ভার দেওয়া হল এক বিশেষজ্ঞ কমিটির হাতে। সময় কম, মুম্বই, চেন্নাই অনেক আগেই এ কাজ সেরে ফেলেছে। প্রবীণদের সঙ্গে নির্দ্বিধায় নবীনদেরও ডেকে নিলেন কমিটির সভাপতি বরুণ দে। বই ঘেঁটে নয়, পায়ে হেঁটে তৈরি হল প্রাথমিক তালিকা। রিপোর্ট জমা পড়ল এক বছরের মধ্যেই। পরে এই সব ঐতিহ্যবাহী ভবনের শ্রেণিবিভাগও হয়েছিল তাঁরই নেতৃত্বে। শুধু কলকাতা নয়, সারা পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য রক্ষার সুপারিশও ছিল রিপোর্টে, তারই সূত্রে তৈরি হয় পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন। সেখানেও তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন ২০০৮-’১১। আবার কলকাতার জন্ম ২৪ অগস্ট ১৬৯০ জোব চার্নকের হাতে কি না, সেই বিতর্কে হাইকোর্টের মনোনীত পাঁচ বিশেষজ্ঞের মধ্যে বরুণ দে-ও ছিলেন। নিমাইসাধন বসুর নেতৃত্বাধীন সেই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে আদালত রায় দেয়, চার্নককে আর এই সম্মান দেওয়া যাবে না। কলকাতার এক প্রাচীন পরিবারের সন্তান বরুণবাবু দীর্ঘ দিন যুক্ত ছিলেন ভারতীয় সংগ্রহশালা, এশিয়াটিক সোসাইটি, সেন্টার ফর আর্কিয়োলজিক্যাল স্টাডিজ ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কাজকর্মে। কলকাতার দুটি বিখ্যাত বিদ্বৎপ্রতিষ্ঠানে তিনি সূচনা থেকে অনেক দিন অধিকর্তার দায়িত্বে ছিলেন, সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস এবং মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিজ। সুশোভন সরকারের ছাত্র এই বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ আশি পেরিয়ে হঠাৎই চলে গেলেন। তাঁর বইয়ের সংখ্যা কম, কিন্তু বহু মূল্যবান প্রবন্ধ ছড়িয়ে আছে পত্রিকায়। সেগুলি এ বার একত্র হোক না, সেটাই হবে তাঁর উপযুক্ত শ্রদ্ধার্ঘ্য।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.