বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মোবাইলে তথ্য হাতিয়ে
ঘুম কাড়ছে দুষ্টু অ্যাপ
হ্যাকারদের পর এ বার নেট দুনিয়ার ঘুম কাড়ছে ‘দুষ্টু’ অ্যাপ।
না-বুঝে এই সমস্ত অ্যাপ (মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন) এক বার ডাউনলোড করে ফেললে, মুহূর্তে তা সেঁধিয়ে যাচ্ছে মোবাইলে। ফলে কোনও ক্ষেত্রে আমূল বদলে যাচ্ছে ফোনের সেটিং। আর সেই ফাঁকে মোবাইলে ধরে রাখা ব্যক্তিগত সমস্ত তথ্য নিমেষে চুরি করে নিচ্ছে সাইবার হানাদারেরা। অনেক সময় আবার ওই অ্যাপের হাত ধরে হ্যান্ডসেটে ঢুকে পড়ছে ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার, যার মাধ্যমে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খুঁটিনাটি থেকে ক্রেডিট কার্ডের তথ্য সব কিছুই চলে যাচ্ছে ওই হানাদারদের দখলে। ঠিক যে ভাবে সিঁদ কেটে গৃহস্থের বাড়ি সাফ করে পাকা চোর কিংবা ই-মেল অ্যাকাউন্টে ‘আড়ি পেতে’ তথ্য হাতায় হ্যাকারেরা।
জুনিপার নেটওয়ার্কস-এর সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, গত এক বছরে দুষ্টু অ্যাপের সংখ্যা বেড়েছে ৬০০%! অর্থাৎ রকেট গতিতে বাড়ছে তার শিকার হওয়ার সম্ভাবনাও। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তথ্য চুরি যাচ্ছে কোনও জনপ্রিয় অ্যাপের নকল সংস্করণের মাধ্যমে। ফলে এ নিয়ে অভিযোগ শোনা যাচ্ছে মুখে-মুখে।
কেউ বলছেন, মাসের শেষে মোবাইল বিল হাতে পেয়ে তাঁর চোখ ছানাবড়া। কারণ, শুধু এসএমএসেই খরচ হয়েছে হাজার টাকা। তা-ও এমন সব অচেনা বিদেশি নম্বরে, যেখানে জীবনে কখনও যোগাযোগই করেননি। অমন এসএমএস যে পাঠানো হচ্ছে, ঘুণাক্ষরে জানতে পারেননি সে কথাও। কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, এটা এসএমএস ট্রোজান-এর মতো কোনও দুষ্টু অ্যাপের কেরামতি। জানা গিয়েছে, শুধু এ ধরনের অ্যাপ থেকেই সারা বিশ্বে প্রতি দিন ন’হাজার ডলার ব্যবসা করছে সাইবার হানাদাররা। কারও আবার অভিযোগ, মোবাইল থেকে ব্যাঙ্ক এবং কার্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য লোপাট করে নিয়েছে খেলার ছলে ডাউনলোড করা কোনও ঘাতক অ্যাপ।
এমনিতে অ্যাপ মানে অ্যাপ্লিকেশন সফ্টওয়্যার। সহজ কথায়, একটি নির্দিষ্ট কাজের জন্যই এই সফ্টওয়্যার তৈরি। স্মার্ট ফোনে ব্যবহারের জন্য তৈরি এই ধরনের বিভিন্ন অ্যাপে বিভিন্ন রকম সুবিধা মেলে। কখনও ক্লিক করে মোবাইলের পর্দাতেই পড়ে ফেলা যায় খবরের কাগজ, তো কখনও আবার খেলা যায় মজাদার গেম।
গুগ্ল আর অ্যাপল-এর ভাঁড়ারে এখন অ্যাপের সংখ্যা ১০০ কোটির বেশি। ইন্টারনেট অ্যান্ড মোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু ভারতেই এর বাজার ২০০০ কোটি টাকা ছুঁইছুঁই। বৃদ্ধির হারের বিচারেও বিশ্বে তার স্থান তৃতীয়। দেশে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির সংগঠন ন্যাসকমের হিসাব অনুযায়ী, ভারতে এখন অ্যাপ নির্মাতার সংখ্যা প্রায় ৯০০০। যার অধিকাংশই গজিয়ে উঠেছে তিন বছরের মধ্যে।
কিন্তু এই বিপুল জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও ভাল করে শর্ত না পড়ে-দেখে কিংবা সঠিক তথ্য না-জেনে অ্যাপ ডাউনলোড করা উচিত নয় বলে স্পষ্ট জানাচ্ছে নেট নিরাপত্তা-ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলি। যেমন, ওয়েবসেন্স ও সিম্যানটেক-এর দাবি, দুষ্টু অ্যাপের মূল উদ্দেশ্যই হল ফোনে থাকা ব্যক্তিগত তথ্যের বেআইনি ব্যবহার। তা সে ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত খুঁটিনাটিই হোক বা অন্য কোনও তথ্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্ট ফোনের দৌলতে মোবাইলে নেটের ব্যবহার যত বাড়ছে, ততই তৈরি হচ্ছে নিত্যনতুন বিপদের আশঙ্কা। দুষ্টু অ্যাপের সংখ্যা বাড়ছে তরতরিয়ে। সেই কারণেই ভারতে ওয়েবসেন্সের প্রধান সুরেন্দ্র সিংহের মতে, কম্পিউটারের মতো এখন নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রয়োজন মোবাইল ফোনেও। অ্যাপ ডাউনলোড করার বিষয়ে গ্রাহকদেরও অনেক বেশি সতর্ক হওয়া উচিত। নইলে গভীর গাড্ডায় পড়তে হতে পারে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.