বিনোদন: মিটতে চলেছে দীর্ঘদিনের দাবি
বনগাঁয় গড়ে উঠছে পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
কটি পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হোক, বনগাঁবাসীর এমন দাবি দীর্ঘদিনের। রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেই দাবি আরও জোরালো হয়। সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। সম্প্রতি রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বনগাঁয় এসে ওই সাংস্কৃতির কেন্দ্রের শিলান্যাস করেন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বনগাঁ শহরে টাউন হল ময়দানে জীর্ণ ললিত মোহন বাণী ভবনির জায়গাতেই নতুন ওই সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরি করা হবে। এ জন্য জীর্ণ ভবনটি ভেঙে ফেলার কাজও শুরু হয়েছে বনগাঁ পুরসভার তরফে। পুরসবার চেয়ারম্যান তৃণমূলের জ্যোত্‌স্না আঢ্য বলেন, “সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বা অডিটোরিয়াম তৈরির জন্য পুরসভার পক্ষ থেকে টেন্ডার ডাকা হয়েছে। জীর্ণ ভবনটি ভাঙার কাজ শেষ হলে সম্পূর্ণ চিত্রটি বোঝা যাবে। আশা করছি দু’মাসের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে।”
ভেঙে ফেলা হচ্ছে ললিতমোহন বাণী ভবন। এখানেই তৈরি হবে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
১৯৬০ সালের ৬ মার্চ ললিতমোহন বাণী ভবনের দ্বারোদ্ঘাটন হয়েছিল। তারপর থেকে এটি বনগাঁয় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের পীঠস্থান হয়ে ওঠে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে রাজনৈতিক সভা সবই হয়েছে এখানে। বনগাঁয় সাহিত্যচর্চা আবর্তিত হয়েছে এই ভবনকে ঘিরে। দুর্গাপুজোয় সীমান্তের এই শহর থেকে সাহিত্যপ্রেমীরা যত সংখ্যায় লিটল ম্যাগাজিন বের করেন তা এককথায় নজিরবিহীন। সাহিত্য-সংস্কৃতির এমন পীঠস্থান হওয়া সত্ত্বেও ছিল না কোনও পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এ জন্য এখানকার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন থেকে সংস্কৃতি প্রেমী মানুষের আন্দোলন দীর্ঘদিনের। নির্বাচন এলে এখানকার মানুষ রাজনৈতিক দলগুলির কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পেতেন পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের। কিন্তু তা আর বাস্তবাসিত হত না। শেষ পর্যন্ত গত বিধানসভা নির্বাচনের পর বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক এবং প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ এ বিষয়ে উদ্যোগী হন। বরাদ্দ করা হয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের জন্য অর্থ। মহকুমাশাসক অভিজিত্‌ ভট্টাচার্য বলেন, “বিএডিপি প্রকল্পে ওই সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জন্য ইতিমধ্যেই এক কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। মোট খরচ ধরা হয়েছে চার কোটি। কাজ শুরু হলে ধাপে ধাপে আরও অর্থ পাওয়া যাবে।”
কেমন হবে এই সাংস্কৃতিক কেন্দ্র? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এই সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আসন থাকবে সাতশো। তবে একদা সংস্কৃতির পীঠস্থান হিসাবে ললিত মোহন বাণী ভবনটি ভাঙা শুরু হওয়ায় বহু সংস্কৃতিপ্রেমী স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছেন। এমনই এক বৃদ্ধ জানালেন, “একটা সময় ছিল যখন এই বাড়িটাই ছিল এখানকার সংস্কৃতির পীঠস্থান। দীর্ঘদিন কোনওরকম সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। নতুন কেন্দ্র তৈরির জন্য যখন শুনলাম ওটা ভেঙে ফেলা হবে, খুব কষ্ট হয়েছিল। আমাপ মকো অনেকেরই নানা স্মৃতি জড়িয়ে আছে ওই ভবনকে ঘিরে। কিন্তু সময়ের দাবিকে তো মানতেই হবে।” পাশাপাশি তাঁর মতোই অনেকের আশা, নতুন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরি হলে বনগাঁয় সংস্কৃতি চর্চার পরিধি আরও ছড়িয়ে যাবে। সাহিত্যিক স্বপন চক্রবর্তীর কথায়, “এটা নিঃসন্দেহে বনগাঁর মানুষের কাছে একটা বড় পাওনা। তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে।”
বিশ্বজিত্‌বাবু বলেন, “বনগাঁর মানুষের ভাবাবেগকে যথোচিত সম্মান জানিয়েই নতুন ভবনের নাম হচ্ছে পথের পাঁচালি, ললিতমোহন ভবন। প্রয়োজনে বিধায়ক তহবিল থেকেও ভবন নির্মাণে অর্থ দেওয়া হবে।”

নিজের নতুন ছবির প্রচারে শুভশ্রী। সোমবার, শহরের একটি শপিং মলে। ছবি: শৌভিক দে।

কাটোয়া সংহতি মঞ্চে রবিবার সন্ধ্যায় হয়ে গেল নৃত্যনাট্য।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.