নাজিরগঞ্জ
হাত বাড়ালেই চোলাই
থানা থেকে দূরত্ব ঢিল ছোড়া। পাশেই সেচ দফতরের অফিস। অভিযোগ, কাছেই একটি পুকুর পাড়ে রমরমিয়ে চলছে চোলাইয়ের ব্যবসা। ছবিটি নাজিরগঞ্জের নেপালিপাড়া এলাকার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংগ্রামপুরে বিষমদ-কাণ্ডের পরেও এ ছবি বদলায়নি। প্রশাসনকে বার বার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
হাওড়ার বটানিক্যাল গার্ডেন পার হয়ে সাঁকরাইল যাওয়ার পথে নাজিরগঞ্জ ট্রেকার স্ট্যান্ড। কিছুটা এগিয়েই পুলিশের তদন্ত কেন্দ্র। পাশেই সেচ দফতর। লাগোয়া পুকুর পাড়ে চলে চোলাইয়ের বেশ কয়েকটি দোকান। কোনওটি ত্রিপল দিয়ে ঘেরা। কোনওটি দরমা দিয়ে বানানো। এটি নেপালিপাড়ার মধ্যে পড়ে। স্থানীয় সূত্রে খবর, এখানে ভাটি এবং ঠেক রয়েছে। ভাটিতে চোলাই তৈরি হয়। তার পরে জল মিশিয়ে ঠেকে বিক্রি হয়। এক একটি পাউচের দাম পড়ে ১০-১৫ টাকা। ভাটি এবং ঠেক পাশাপাশি থাকায় এখানে ভিড় বেশি হয়।
সেচ দফতরের এক কর্মী জানান, চারপাশ চোলাইয়ের গন্ধে ভরপুর। মদ্যপেরা মাঝেমধ্যেই উৎপাত চালায়। কয়েক জন মদ্যপ চুরি করতে এসে ধরাও পড়েছে। সেচ দফতরের এসডিও রানা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মাঝেমধ্যে মদ্যপেরা অফিসে এসে কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। কখনও আবার অফিসের সামনের রাস্তায় পড়েও থাকে। বাধ্য হয়ে পাঁচিল দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যাও দুই থেকে বাড়িয়ে সাত করা হয়েছে।” সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি জানা ছিল না। এ ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছি। পুলিশের সঙ্গেও কথা বলব।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশকে বহু বার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দার কথায়: “সংগ্রামপুরে বিষমদ-কাণ্ডের পরে কিছু দিন পুলিশ সক্রিয় হয়েছিল। তখন রমরমা কিছুটা কমেছিল। কিছু দিন পরে যে-কে-সেই।” এর জেরে এলাকায় চুরি, ছিনতাইও বাড়ছে বলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।
পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?
হাওড়ার আবগারি দফতরের সুপার সুদেষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “পুলিশের সঙ্গে আমরা মাঝেমধ্যেই নেপালিপাড়ায় অভিযান চালাই। ভাটি ও দোকান ভেঙে দেওয়া হয়। ওখানে প্রায় আট হাজার লিটার চোলাই পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু কিছু দিন পরেই আবার শুরু হয়ে যায়। আবার অভিযান চালানো হবে।” হাওড়া পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (গ্রামীণ) সুখেন্দু হীরা বলেন, “ওখানে চোলাইয়ের ব্যবসা বন্ধ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চলছে। মাঝেমধ্যে অভিযান চালাই। ভবিষ্যতেও চালানো হবে।”

অলংকরণ: অনুপ রায়




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.