|
|
|
|
|
|
|
রবীন্দ্রচর্চায় ব্যতিক্রমী সংযোজন |
রবীন্দ্রনাথ ও বসুমতী |
মাসিক বসুমতী পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের লেখা প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু। কিন্তু বসুমতী প্রকাশনার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্কটা বরাবর খুব মসৃণ ছিল না। বলা যায়, সে সম্পর্কের নৌকাডুবি ঘটেছে বার বার। নৌকাডুবি উপন্যাস প্রথম প্রকাশিত হয় বসুমতী থেকে। ‘বঙ্গদর্শন’-এ ধারাবাহিক প্রকাশ শেষ হওয়ার আগেই বসুমতীর স্বত্বাধিকারী উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের পক্ষে নিকুঞ্জবিহারী দত্ত উপন্যাসটির প্রকাশস্বত্ব কিনেছিলেন। দু’কিস্তিতে পাঁচশো টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গেই চোখের বালি-র কপিরাইটও মজুমদার লাইব্রেরি থেকে নিয়ে বসুমতীকে দেওয়া হয়। তার পরে, প্রশান্তকুমার পালের রবিজীবনী জানাচ্ছে, তিন বছরের প্রকাশনাস্বত্ব লঙ্ঘন করে একটি সংস্করণ শেষ হওয়ার পরে উপেন্দ্রনাথ বইগুলো আবার ছাপেন। |
|
আর এতেই রবীন্দ্রনাথের ধারণা হয়েছিল বসুমতী ও হিতবাদী দুই প্রকাশনাই তাঁকে ঠকিয়েছে। প্রমথ চৌধুরীকে একটি চিঠিতে লিখছেন (১১ ডিসেম্বর ১৯১৪): ‘এ কথাও মনে রেখো বসুমতীকে নিয়ে যে ব্যাপার চল্চে তাতে আমাদের তরফে সময়খরচা এবং উকিলখরচা বেড়ে চলেচে আর তাদের তরফে কেবলি শস্যঞ্চ গৃহমাগতং খবর পেয়েছি ইতিমধ্যেই তারা চোখের বালির নূতন এডিশন ছাপতে দিয়েছে। মকদ্দমায় হারলেও তাদের কাছ থেকে আমাদের কিছু আদায়ের সম্ভাবনা বিরল।’ পরে অবশ্য আপসে মামলা মিটেছিল, এমনকী রবীন্দ্র রচনাবলি ছাপারও কথা হয়েছিল বসুমতী থেকে, জানা যায় প্রশান্ত মহলানবিশের চিঠিতে। রবীন্দ্রনাথ এবং বসুমতী পত্রিকা ও প্রকাশনার সম্পর্কটি এ বার সুসম্পাদিত সংকলনে প্রকাশিত হতে চলেছে সাহিত্য সংসদ থেকে। প্রণতি মুখোপাধ্যায় ও অভীককুমার দে-র সম্পাদনায় রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ: মাসিক বসুমতী নামে সেই সংকলনে ‘মাসিক বসুমতী’ পত্রিকায় প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথের এবং রবীন্দ্রবিষয়ক সব সংবাদ সটীক আকারে থাকছে, যেমন দেবপ্রসাদ ঘোষের সঙ্গে বাংলা বানান নিয়ে বিতর্কের সব চিঠি। থাকছে রবীন্দ্রবিষয়ক রচনার সম্পূর্ণ সূচি। শুধু তাই নয়, অভীককুমার দে-র কথায়, ‘নন্দলাল বসু চিত্রিত রবীন্দ্রনাথের ‘ঋতুরঙ্গ’ ছবিসমেত আছে এই সংকলনে। পত্রিকায় প্রকাশের পরে এটি কখনও গ্রন্থিত হয়নি।’ আছে অন্যান্য অলংকরণও। সুদীর্ঘ ভূমিকায় সম্পর্কটি বিশ্লেষণ করেছেন সম্পাদকেরা। রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য এক গবেষণা, সন্দেহ নেই। সঙ্গে ‘বসুমতী’র পাতা থেকে দুটি রবীন্দ্ররচনা।
|
অজিত পাণ্ডে |
১৯৭৫-এ চাসনালার কয়লাখনিতে জলের তোড়ে হারিয়ে গিয়েছিল প্রায় চারশোর বেশি তাজা শ্রমিকের প্রাণ। অজিত পাণ্ডে গেয়ে উঠেছিলেন ‘চাসনালার খনিতে ... মরদ আমার ডুইব্যা গেল গ’। জন্ম মুর্শিদাবাদে, ১৯৩৯-এ। কলেজ জীবনেই কলকাতায় বাম রাজনীতির আঙিনায় নিজেকে করে তুলেছিলেন এক যথার্থ গণসংগীতকার। যদিও অর্থাভাবে এক সময় হুগলির বাঁশবেড়িয়ায় প্রথমে সিনেমাহলের আসন-প্রদর্শক ও পরে কেশোরাম রেয়নে শ্রমিকের পেশা বেছে নিতে হয়েছিল। ষাটের দশক থেকেই রানিগঞ্জ, ঝরিয়ার খনি অঞ্চলে বিভিন্ন গণ-আন্দোলন, ভিয়েতনামের স্বাধীনতার যুদ্ধ থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সমসাময়িক ইতিহাসের প্রায় সমস্ত ঘটনাই তাঁর গানে উঠে এসেছে। কবিতা থেকেও গান বেঁধেছিলেন নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘অমলকান্তি রোদ্দুর হতে চেয়েছিল’, সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘লেনিন’, বা দীনেশ দাসের ‘কাস্তে’। প্রথম রেকর্ড বেরোয় ১৯৭৬-এ ইনরেকো থেকে। অসংখ্য জনপ্রিয় গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘ওরা জীবনের গান গাইতে দেয় না’, ‘ও নুরুলের মা’ ইত্যাদি। সঙ্গে লালন ফকিরের গান। পেয়েছেন নানা পুরস্কার ও সম্মান। ওপার বাংলায় ছিলেন অসম্ভব জনপ্রিয়। আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন ১৩ জুন, কালিকাপুর অহল্যানগরের বাসভবনে।
|
সংরক্ষণ |
|
১৮৫২-র ২১ জুন বিচারপতি শম্ভুনাথ পণ্ডিতের বাসভবনে হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, উমেশচন্দ্র বসু, প্রসন্নকুমার মুখোপাধ্যায়দের উপস্থিতিতে ব্রহ্মোপসনার জন্য ‘জ্ঞানপ্রকাশিকা সভা’ প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর নাম দেন ভবানীপুর ব্রাহ্মসমাজ। ১৮৫৩-য় ৭১ পদ্মপুকুর রোডে জমি কিনে সেখানে ব্রাহ্মসমাজের বর্তমান ভবনটি স্থাপিত হয়। প্রথমে ধর্মসঙ্গীত গাওয়া হত, শাস্ত্রপাঠ চলত। পরে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ উপাসনাও শুরু করেন। কেশবচন্দ্র সেন তাঁর বিখ্যাত বক্তৃতা ‘ডেসটিনি অব হিউম্যান লাইফ’ এখানেই দেন। পরে ব্রাহ্মসম্মিলনী সমাজ প্রতিষ্ঠিত হলে ভবানীপুর ব্রাহ্মসমাজের কাজে ভাটা পড়ে। বর্তমানে ভবনটি ভগ্নপ্রায়। আশার কথা সম্প্রতি ভবনটি সংরক্ষণের জন্য একটি কমিটি হয়েছে, তার পক্ষে প্রসূন গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, হেরিটেজ ভবনটি সংরক্ষণের জন্য পুরসভার কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। আজ ১৬০তম প্রতিষ্ঠা দিবসে সন্ধে ছ’টায় বিশেষ উপাসনার আয়োজন করা হয়েছে। গাইবেন প্রমিতা মল্লিক-সহ আরও অনেকে।
|
আন্তর্জাতিক |
পুজো প্রায় এসে গিয়েছে। মহালয়া, দেবীপক্ষের শুরু। সদ্য আলো ফোটা ভোরে রেডিয়োয় মহিষাসুরমর্দিনী’র স্তোত্র শোনা যায় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায়। এমন এক মুহূর্তে হাবুলদের বাড়িতে এসে হাজির হয় গন্ধর্বকুমার সে রূপকথার রাজকুমারের মতো, জাদু জানে, পশুপাখির ভাষা জানে, আরও কত কী!... ‘হীরের আংটি’, ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রথম ছবিটি ছিল ছোটদের জন্যেই। সদ্যপ্রয়াত ঋতুপর্ণের ওই ছবিটি দিয়েই শুরু হচ্ছে এ বারের ত্রয়োদশ আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। ২৫ জুন সন্ধে ৬টায় নন্দনে উদ্বোধন করবেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। উপস্থিত থাকবেন হাঁদা ভোঁদা-বাঁটুল দি গ্রেট-এর স্রষ্টা নারায়ণ দেবনাথ, প্রাক্তন বিচারপতি শ্যামলকুমার সেন, নন্দন-অধিকর্তা যাদব মণ্ডল। ২০টি দেশের আনুমানিক ৩৫টি ছবি দেখানো হবে। নন্দনে ২৮ জুন থেকে পয়লা জুলাই অবধি চলার পর এ-উৎসব কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় তিন মাস ধরে চলবে। নন্দন-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সিনে সেন্ট্রাল।
|
শান্তাদি |
অধ্যাপিকা শান্তা মহলানবিশের জন্মদিন গেল ২ জুন। ঝামাপুকুর মিত্র পরিবারে মোহনলাল মিত্র ও বীণা রায়চৌধুরীর মেয়ে শান্তার জন্ম ১৯৩০-এ। লোরেটো হাউস থেকে সিনিয়র কেমব্রিজে প্রথম, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি এ (ইংরেজি) এবং এম এ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম। স্কুল-কলেজে শিক্ষকদের কাছ থেকে শুধু ‘জ্ঞান’ নয়, অন্তর্দৃষ্টি আর সহমর্মিতা শিখেছিলেন তিনি। ১৯৫২-য় লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে তরুণী শান্তাকে ক্লাসে পড়াতে নিয়ে যান অধ্যক্ষা রমা চৌধুরী। ১৯৬০-এ কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর পাঠের জন্য যাত্রা। সেখানে অধ্যাপক হিসেবে পান দুই কিংবদন্তি এফ আর লিউইস আর এম সি ব্র্যাডব্রুককে। ক্লের কলেজে পান অধ্যাপক-দম্পতি গুডারদের। ফিরে প্রেসিডেন্সিতে যোগ দেন, কিন্তু রমা চৌধুরী জোর করে লেডি ব্রেবোর্ন-এ ফেরত আনেন। ১৯৭৪ থেকে অবসর পর্যন্ত বেথুন কলেজে ইংরেজি সাহিত্যের প্রধান। ১৯৬৮-তে অমলেন্দু বসুর আমন্ত্রণে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ ইন ইংলিশের চেয়ারপার্সন শান্তার নেশা থিয়েটার, সংগীত, রান্নাবান্না, ক্রাইম ফিকশন ও পুরনো কলকাতা নিয়ে বই পড়া। ভালবাসেন পাখি আর গাছের সান্নিধ্যে সকালে একা হাঁটতে। তাঁর মতো মুক্তমনা বিদুষী শিক্ষাজগতে দুর্লভ।
|
নতুন আঙ্গিকে |
এ বার নজরুলগীতি এক নতুন আঙ্গিকে প্রকাশিত হতে চলেছে শহরে। ‘আমার সাকি’ নামে সেই অ্যালবামে প্রবাসিনী শিল্পী মৌসুমী রায় বিশ্বসঙ্গীতের অভিজ্ঞতা মেশাতে চান তাঁর নজরুল-গায়নে। সঙ্গতে সেতার, সন্তুরের মতো পরিচিত বাদ্যযন্ত্রের পাশাপাশি দুদুক-এর মতো স্বল্পপরিচিতও। সঙ্গীতায়োজনে মমতাশঙ্করের পুত্র রাতুলশঙ্কর, গ্রন্থনায় প্রণতি ঠাকুর ও সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। ইউনিভার্সাল মিউজিকের আয়োজনে এটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ সাউথ সিটি মলের স্টারমার্কে, ২৫ জুন। অন্য দিকে, ‘যেমন শ্রীরাধা কাঁদে’, ‘কী উপহার সাজিয়ে দেব’, ‘অনেক জমানো ব্যথা বেদনা’, ‘আজ মিলনতিথির পূর্ণিমা চাঁদ’ এমন সব জনপ্রিয় গানে যিনি শ্রোতাদের মাতিয়ে দিতেন, সেই গীতিকার ও সুরকার অজয় দাসের স্মৃতি-শ্রদ্ধার্ঘ্য ২৮ জুন বিকেল ৫টায় রবীন্দ্রসদনে। যৌথ উদ্যোগে কথাকলি ক্রিয়েশন ও অজয় দাস স্মৃতি সংসদ।
|
তথ্যচিত্র |
শুধুমাত্র আইন বা গণিতই নয়, তাঁর সংগ্রহে ছিল বিভিন্ন ধরনের দুর্লভ বই। যেমন শেক্সপিয়রের নাটকের বিভিন্ন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত সংস্করণ। অথবা কোনও বইয়ের মলাটে সোনার মিনে করা কাজ। কিছু বইয়ের মলাটে রুপোর কারুকাজ! কিছু বইয়ে তিনি লিখেছিলেন বইয়ের দাম এবং বইটি সম্বন্ধে ছোট্ট মন্তব্য! আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের সেই বিপুল সংগ্রহ তাঁর উত্তরসূরিরা দান করেন কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগারে। শুধু বই-ই নয়, এই সংগ্রহে আছে কোম্পানি চিত্রকলা-র নানা নমুনা, অভ্রের পাতে আঁকা ছবি এবং পুরনো আলোকচিত্রের অ্যালবাম। তাঁর জন্মের সার্ধশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় গ্রন্থাগারের উদ্যোগে এই সংগ্রহ ঘিরে কলকাতা দূরদর্শন তৈরি করছে মিনিট কুড়ির এক তথ্যচিত্র। পাঠক-গবেষকদের কাছে এই সংগ্রহকে ভাল ভাবে তুলে ধরতে আছে নানা পরিকল্পনা, জানালেন ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা, তথা রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশনের ডি জি কিশোরকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
|
ব্রতচারী |
ব্রতচারীর মাধ্যমে বাংলার যুবসমাজকে উদ্দীপিত করতে চেয়েছিলেন গুরুসদয় দত্ত। তাঁর চেষ্টায় প্রতিষ্ঠা পায় বাংলার ব্রতচারী সমিতি। সময়ের সঙ্গে তৈরি হয়েছে এই আন্দোলনের সুদীর্ঘ ইতিহাস। নিজ উদ্যোগে মনোজিৎ অধিকারী ব্রতচারী বিষয়ে খুঁজে বার করেছেন সেই ইতিহাসের নানা তথ্য। সে সব নিয়ে এবং গুরুসদয় দত্তের জীবন অবলম্বনে তিনি তৈরি করেছেন একটি তথ্যচিত্র। সহযোগিতা করেছেন ব্রতচারী আন্দোলনের নিবেদিতপ্রাণ মানুষজন। আর্থিক সহযোগিতায় ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক। আগামী কাল গুরুসদয় দত্তের তিরোধান দিবস উপলক্ষে নন্দন-৩ প্রেক্ষাগৃহে ‘ব্রতচারী’ তথ্যচিত্রটির প্রথম প্রদর্শন, বিকেল চারটেয়।
|
প্রেমানি বোল |
|
জসিমউদ্দিনের সৃষ্টি এ বার মঞ্চে! তবে ভিন্ন আঙ্গিকে। তাঁর ‘নকশি কাঁথার মাঠ’ অবলম্বনে হিন্দিতে নতুন প্রযোজনা মঞ্চস্থ করতে চলেছে ‘কসবা অর্ঘ্য’। জসিমউদ্দিনের কালজয়ী সৃষ্টিকে তারা মিলিয়েছে উত্তরপ্রদেশের লোকশিল্পের ঘরানা ‘নৌটঙ্কি’র আধারে। ‘ঊরুভঙ্গম’-এর পরে এই নাট্যগোষ্ঠীর নবতম এই নাটকের নাম ‘প্রেমানি বোল’। এটি তাদের প্রথম হিন্দি প্রযোজনা। হিন্দিতে রূপান্তরের কাজটি করেছেন বারাণসীর নৌটঙ্কি ঘরানার শিল্পী পুনীত কুমার মিশ্র। মণীশ মিত্রের নির্দেশনায় পুনীতের সঙ্গেই অভিনয় করছেন ‘কসবা অর্ঘ্য’র প্রায় ২৫ জন শিল্পী। পুনীতের ভাষ্যে এবং নৌটঙ্কির ছন্দ-গানে এ নাটকের প্রথম মঞ্চায়ন আগামী ৩০ জুন, রবিবার, দুপুর ৩টেয় অ্যাকাডেমি মঞ্চে। সঙ্গের ছবিতে পুনীত মিশ্র, সীমা ঘোষ।
|
জিনিয়াস |
গানের সংখ্যা প্রায় দুশো। ভাষা হিন্দি ছাড়াও বাংলা ও ওড়িয়া। বেশির ভাগ প্রকাশিত গান, কিছু অপ্রকাশিত। রাহুল দেববর্মনের সঙ্গে অমিতকুমারের সম্পর্কের তথ্য এটুকুই। কিন্তু পরিসংখ্যানের বাইরে যে ইতিহাস সেখানে সুরকার আর গায়কের সম্পর্কটা পিতাপুত্রের মতো। আরডি-র সঙ্গীতদলের যন্ত্রশিল্পী মনোহারি সিংহ বলেছেন, ‘পুরুষকণ্ঠে পঞ্চমের প্রথম পছন্দ ছিল কিশোরদা, তার পরেই অমিত।’ আরডি-র সুরে গান গাওয়ার সংখ্যার বিচারে আশা ভোঁসলে, কিশোরকুমারের পরেই স্থান অমিতকুমারের। সেই ছোটবেলাতেই তাঁর অভিনয় জীবনের শুরু। বাবা কিশোরকুমারের সঙ্গে কিশোরেরই পরিচালনায় ‘দূর গগন কি ছাওঁ মে’ আর ‘দুর কা রাহী’ ছবির সেই কিশোরটি আজও রয়ে গিয়েছে কলকাতার চিত্রস্মৃতিতে। সাম্প্রতিক কয়েকটি বাংলা ছবিতেও গান গেয়েছেন তিনি। চার দশক ধরে চলতে থাকা তাঁর গানের কেরিয়ার এ ভাবেই আজও বহমান। পাশাপাশি চলছে নানা জলসায় গান গাওয়া। সেই কিশোর, অমিতকুমার আবারও এ শহরে, আরডি-র স্মৃতি আর গান নিয়ে। ২৭ জুন সন্ধেয় জি ডি বিড়লা সভাগারে ‘মেলডি চাইম’-এর উদ্যোগে ‘পঞ্চম দ্য মিউজিক্যাল জিনিয়াস’ গানের গল্প আর গল্পের গান শোনাবেন অমিতকুমার, রাহুলকে ঘিরে।
|
|
|
|
|
পক্ষিপ্রেমিক |
জীবনানন্দ লিখেছিলেন, এ জীবন ভেলভেট জ্যাকেটের মাছরাঙা হবে। আগাম অজয় হোমকে (২ মে ১৯১৩ - ৩০ অক্টোবর ১৯৯২) ভেবেই বলা নাকি! দাদা অমল হোম নাকি বলতেন, ‘খুচু-র (অজয় হোমের ডাকনাম) ১৭টা পোর্টফোলিয়ো। কোনটা রাখবে জানি না!’ দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেছেন হাতেখড়ি কার্তিক বসুর কাছে, ক্রীড়াসাংবাদিক (‘সন্দেশ’ পত্রিকায় নিয়মিত খেলাধুলা নিয়ে লিখেছেন), তাসের আসরে দুঁদে ব্রিজ প্লেয়ার (উদ্ভাবন করেছিলেন ‘হোম’স থ্রি স্টেজ ফর্মুলা’), গায়ক (বেতারে গান গাইতেন, কৃষ্ণচন্দ্র দে-র ভাইপোর সঙ্গে গড়ে তুলেছিলেন ‘একতারা’ সংগীতশিক্ষাকেন্দ্র), চলচ্চিত্র চর্চায় নিবিষ্টপ্রাণ (কিছুদিন ‘ছায়াপথ’ নামে ফিল্ম ম্যাগাজিন সম্পাদনা করেন), কথাসাহিত্যিক (লিখেছেন সায়েন্স ফিকশন থেকে গোয়েন্দা গল্প, সে সবের গুণগ্রাহী ছিলেন সত্যজিৎ রায়), সম্পাদনা করেছেন সত্যচরণ লাহা স্থাপিত, পরে ছেদ পড়া ‘প্রকৃতি’ পত্রিকা, ‘প্রকৃতি জ্ঞান’ নামে, স্থাপন করেছেন প্রকৃতি চর্চাকেন্দ্র ‘প্রকৃতি সংসদ’। হ্যাঁ, শেষাবধি প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ তাঁকে ডেকে যুক্ত করে নিয়েছিলেন ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের গ্রন্থাগারে। কিন্তু তাঁর নামের সঙ্গে বেশি করে জড়িয়েছে তাঁর পক্ষিগবেষণা, পাখি বিষয়ে লেখালেখি, তাঁর বই বাংলার পাখি ও চেনা অচেনা পাখি। পশুপাখি-জীবজন্তু নিয়ে আরও নানা বই তিনি লিখেছিলেন। সাধারণ বাঙালির মধ্যে এমন করে পাখিকে আর কেউ তার বর্ণ-গীত-মাংসশরীর ছাপিয়ে কেবল প্রাণী হিসেবেই চর্চার যোগ্য একটা বিষয় করে তুলে ধরেনি। অজয় হোম জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন সমিতি-র উদ্যোগে গত ১৫ জুন ব্রাহ্ম সম্মিলন সমাজের সভাগৃহে মনোজ্ঞ আলোচনা করলেন প্রকৃতি-পরিবেশ বিষয়ে কৃতী ব্যক্তিরা। তাঁর পাখি-বিষয়ক বইগুলি পুনঃপ্রকাশেরও উদ্যোগ চলেছে। |
|
|
|
|
|
|