বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরমাণু প্রযুক্তি তো চাই-ই চাই। সেই সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনের নানান সমস্যা মেটাতেও এ বার ওই প্রযুক্তি ব্যবহারের পক্ষে সওয়াল করলেন দেশের বিজ্ঞানীরা।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরমাণু প্রযুক্তির প্রয়োগ দু’ভাবে সমাজজীবনের সহায়ক হতে পারে বলে মনে করেন পরমাণুবিজ্ঞানী ও ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের অধিকর্তা শেখর বসু। রবিবার, কলকাতার ভেরিয়েবল এনার্জি সাইক্লোট্রন সেন্টার বা ভিইসিসি-র প্রতিষ্ঠা দিবসে তিনি জানান, প্রথমত, বিদ্যুতের সঙ্গে সঙ্গে জল শোধন, চিকিৎসা এবং কৃষিতেও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব। তাতে ওই সব ক্ষেত্রে সুফল মিলবে। দ্বিতীয়ত, পরমাণু প্রযুক্তির এই ধরনের বহুমুখী ব্যবহার জনমানসে পরমাণু প্রযুক্তি সম্পর্কে ভীতি কাটাতেও সাহায্য করবে বলে তাঁর দাবি।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পানীয় জলে লবণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া এবং আর্সেনিক, ফ্লুওরাইডের মতো দূষিত রাসায়নিক মিশে যাওয়ার ফলে সঙ্কট বাড়ছে। পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই দূষিত জল পরিশোধন করা সম্ভব বলে গবেষকেরা জানান। শেখরবাবুর দাবি, এই ধরনের কিছু প্রযুক্তি দেশের গবেষকেরা ইতিমধ্যেই বার করে ফেলেছেন। তবে সেগুলি বাজারে বিক্রির জন্য বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থার অংশীদারি প্রয়োজন। তাঁরা এই যৌথ প্রয়াসের বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন বলে জানান শেখরবাবু।
শুধু পানীয় জল নয়, পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহার করে উচ্চ ফলনশীল ডাল, তৈলবীজও তৈরি করা সম্ভব বলে গবেষকেরা জানান। ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র বা বার্ক-এর এক কর্তা জানান, স্থানীয় আবহাওয়ার উপরে নির্ভর করেই নির্দিষ্ট ধরনের বীজ তৈরির কাজ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন তাঁরা। শুধু পরমাণুবিজ্ঞানীরা নন, ওই প্রকল্পে রয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা কেন্দ্রের কৃষিবিজ্ঞানীরাও। ওই বিজ্ঞানী বলেন, “এই ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গেও বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।”
গবেষকেরা জানান, এই ধরনের প্রকল্পের ব্যাপারে পঞ্জাব-সহ দেশের কয়েকটি রাজ্য বার্ক-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এ রাজ্য থেকেও এমন কোনও প্রস্তাব মিলেছে কি? বার্ক-এর অধিকর্তা বলেন, “এ রাজ্যের সরকারি স্তর থেকে এখনও কোনও যোগাযোগ করা হয়নি।”
চিকিৎসা ক্ষেত্রে অবশ্য ইতিমধ্যেই পরমাণু ও তেজস্ক্রিয় প্রযুক্তি নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। এবং এ রাজ্যে সেই কাজের অনেকটা কৃতিত্বই ভিইসিসি-র বলে প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা দীনেশ শ্রীবাস্তবের দাবি। তিনি জানান, ঠাকুরপুকুর ক্যানসার হাসপাতালে ‘রেডিয়েশন থেরাপি’র কাজ চলছে। রাজারহাট-নিউ টাউনে ভিইসিসি-র নতুন ক্যাম্পাসেও এই ধরনের গবেষণা চালানো হবে বলে জানান প্রতিষ্ঠানের এক কর্তা।
|
জরুরি বার্তা পাঠানোর নয়া যন্ত্র
নিজস্ব সংবাদদাতা • তিরুচিরাপল্লি |
হঠাৎ বিপদে পড়লে কাছের মানুষদের সতর্কবার্তা পাঠানোর অভিনব যন্ত্র তৈরি করে ফেললেন মুম্বইয়ের ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। গত বছরের দিল্লি ধর্ষণ-কাণ্ডের কথা মনে রেখে যন্ত্রটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘নির্ভয়া’। যন্ত্র নির্মাণকারী গোষ্ঠীর দাবি, খুব সহজেই বহন করা যাবে এই হালকা যন্ত্রটি। এর দামও হবে মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যেই। যন্ত্রটি কাজ করার জন্য প্রয়োজন একটি মোবাইল ফোনের, যেটির সঙ্গে প্রযুক্তিগত ভাবে যুক্ত থাকবে যন্ত্রটি। জরুরি প্রয়োজনে নিজে থেকেই মোবাইলটি থেকে এসওএস বার্তা পৌঁছে যাবে নিকটবর্তী থানায় এবং আত্মীয়স্বজনের কাছে। |