বাস ভাড়ায় ছাড় নিয়ে মতান্তরের জেরে শুক্রবার দুর্গাপুরের একটি মিনিবাসের চালক, খালাসি, কন্ডাক্টরকে কয়েক জন কলেজপড়ুয়া মারধর করে বলে অভিযোগ। মিনিবাসটিতে ভাঙচুরও চালানো হয়। প্রতিবাদে ওঅ রুটের সব বাস বন্ধ করে দেন বাসকর্মীরা। পুলিশ গেলে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। যাত্রীরা বাধ্য হন বাস থেকে নেমে অটোয় করে বা হেঁটে গন্তব্যে যেতে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত বুধবার থেকে। দুর্গাপুর স্টেশন থেকে মুচিপাড়া, বিধাননগর, ইস্পাতনগরীর একাংশ হয়ে বেনাচিতির প্রান্তিকা বাসস্ট্যান্ডগামী ৮-বি রুটে প্রায় ৫০টি মিনিবাস চলে। এই বাসগুলি দুর্গাপুর সরকারি কলেজের সামনে দিয়ে যায় এই বাসগুলি। কলেজের বহু পড়ুয়াই ওই বাসগুলিতে যাতায়াত করেন। বুধবার এক দল ছাত্রের সঙ্গে বাস ভাড়ায় ছাড় নিয়ে একটি মিনিবাসের কন্ডাক্টারের সঙ্গে মনোমালিন্য হয়। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রেরা প্রান্তিকা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বাসকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। বাসকর্মীরা রুখে দাঁড়ানোয় তারা চলে যায়। শুক্রবার দুপুর ১২টা নাগাদ মিনিবাসটি কলেজের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। সেটিকে দাঁড় করায় ওই ছাত্রেরা। অভিযোগ, এরপরেই বাসে উঠে চালক, কন্ডাক্টর, খালাসিকে মারধরর করে তারা। যাত্রীদের কেউ কেউ তাদের বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। মিনিবাসটিতে ভাঙচুর চালানো হয়। জখম চালক, কন্ডাক্টর ও খালাসিকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। |
ঘটনার প্রতিবাদে ওই রুটে মিনিবাস বন্ধ করে দেন বাসকর্মীরা। পরে এ জোন ও বি জোন রুটেরও মিনিবাস বন্ধ করে দেন তাঁরা। বিকেল পর্যন্ত ওই রুটে মিনিবাস প্রায় চলেনি। খবর পেয়ে নিউ টাউন শিপ থানা থেকে পুলিশ আসে। তাদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন বাসকর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন তাঁরা। অরূপ জানা নামে এক বাসকর্মী বলেন, “আমরা দোষী ছাত্রদের শাস্তি চাই। পড়ুয়াদের সঙ্গে মিনিবাস কর্মীদের যে সুসম্পর্ক রয়েছে, তা ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নিতে দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।
এর পরে দুর্গাপুরের আঞ্চলিক পরিবহন আধিকারিক অনিমেষ সিংহরায় প্রান্তিকায় মিনিবাস মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। বাস মালিকেরা বৈঠকে মহকুমাশাসক ও পুলিশ আধিকারিকদের থাকার দাবি জানান। তবে এই বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি বলেই জানান অনিমেষবাবু। মিনিবাস মালিকদের অন্যতম সংগঠন ‘দুর্গাপুর প্যাসেঞ্জার ক্যারিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র সাধারণ সম্পাদক কাজল দে বলেন, ‘‘নিরাপত্তার নিশ্চিত আশ্বাস না পেলে মিনিবাস চালানো মুশকিল। আমরা সেই দাবিই জানিয়েছি।” |