ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মেল, চ্যাট, ভিডিও-র উপর নজরদারি চালাচ্ছে আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিওরিটি এজেন্সি (এনএসএ)। সম্প্রতি এ রকমই দাবি করেছিল ব্রিটেন ও আমেরিকার দুটি প্রথম সারির সংবাদপত্র। সে কথা স্বীকার করে নিলেও ওই দুই সংবাদপত্রের রিপোর্টে অনেক গলদ রয়েছে বলে দাবি করলেন এনএসএ-র ডিরেক্টর জেমস ক্ল্যাপার। গোয়েন্দাদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন বারাক ওবামাও।
সম্প্রতি দু’টি দৈনিক দাবি করে, ইন্টারনেটে নজরদারির প্রমাণ মিলেছে। যা থেকে পরিষ্কার, মাইক্রোসফট, গুগল, ইয়াহু, ফেসবুক, ইউটিউব এবং অতি সম্প্রতি অ্যাপল-এর মতো অন্তত ন’টি বড় ইন্টারনেট সংস্থার সার্ভারে নজরদারি চালাতে পারে এনএসএ। ফলে, মার্কিন নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পরিস্থিতি দেখে মুখ খুলেছেন এনএসএ-র ডিরেক্টর ক্ল্যাপার। নজরদারি যে চলছে তা মেনে নিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর দাবি, বিদেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতেই এই নজরদারি ব্যবহার করা হয়। আইনেও সেই কথাই বলা হয়েছে। তাঁকে সমর্থন করেছেন ওবামাও। তাঁর দাবি, আমেরিকার নিরাপত্তার স্বার্থেই এই ব্যবস্থাগুলি প্রয়োজন। নানা বিধিনিষেধ মেনেই এই ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়। ইন্টারনেটে নজরদারি চালিয়ে কেবল বিদেশের তথ্যই জোগাড় করা হয়।
সংবাদমাধ্যমের দাবি, প্রিজম নামক একটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে কোনও নির্দিষ্ট আইনি নির্দেশ ছাড়াই সংস্থাগুলির সার্ভারে যে কোনও তথ্য দেখতে পারত এনএসএ। ২০০৭ সাল থেকে চালু হওয়া এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে এমন অগুনতি তথ্য হাতে এসেছে এনএসএ-র। তবে এই অভিযোগ মানতে রাজি নয় ইন্টারনেট সংস্থাগুলি। তারা জানিয়েছে, যখন ইচ্ছে সার্ভারে নজরদারি চালাতে পারেন না গোয়েন্দারা। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে আইন মেনে অনুরোধ করলে তাদের তথ্য সরবরাহ করা হয়। তবে নজরদারির সময়ে ঘটনাচক্রে মার্কিন নাগরিকদের তথ্যও যে হাতে আসতে পারে, তা স্বীকার করে নিচ্ছেন গোয়েন্দা কর্তারা।
সম্প্রতি আমেরিকায় ফোনে আড়িপাতার বিপুল বন্দোবস্তের কথা স্বীকার করে নিয়েছে ওবামা প্রশাসন। তার পরে ইন্টারনেটে নজরদারির কথা প্রকাশ্যে আসায় ওবামা প্রশাসনের উপরে আক্রমণ বাড়িয়েছেন উদারপন্থী হিসেবে পরিচিত বিরোধীরা। ক্ষমতায় এসে জর্জ ডব্লিউ বুশের জমানার বাড়াবাড়ি বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বারাক ওবামা। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের দাবি, ওবামা জমানাতেই বেড়েছে নজরদারি। সেই আক্রমণ ওবামা কী ভাবে সামাল দেন তা-ই এখন দেখার। |