‘নির্ধারিত’ সময়ে হাসপাতালে চালু হল না কলসেন্টার
রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, জুনের প্রথম সপ্তাহেই কলকাতার সব ক’টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুরু হবে ২৪ ঘণ্টার কলসেন্টার পরিষেবা। সেখানে টোল-ফ্রি নম্বরে হাসপাতালে কোথায় কত শয্যা খালি আছে তা জানা থেকে শুরু করে ভর্তি থাকা রোগীর চিকিত্‌সায় গাফিলতি নিয়ে অভিযোগ জানানো পর্যন্ত সব কিছু করা যাবে।
জুনের ৪-৫ দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু কলকাতার মেডিক্যাল কলেজগুলির আধিকারিকেরা এক বাক্যে বলছেন, “এ অবাস্তব পরিকল্পনা। আমাদের যা লোকবল তাতে নিকট ভবিষ্যতেও এই পরিষেবা চালু করা অসম্ভব।”
তবে যে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা জানিয়েছিলেন জুনের শুরুতেই কলসেন্টার চালু হবে? জানিয়েছিলেন, মে-র মাঝামাঝি মেডিক্যাল কলেজগুলির অধ্যক্ষদের সঙ্গে স্বাস্থ্যভবনে তাঁর বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। ক্ষুব্ধ মেডিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষেরা বলেছেন, “ওঁকে বলতে দিন। কী ভাবে কী করবেন উনি বুঝবেন। আমাদের আলাদা লোক দেওয়া হবে না, জায়গা দেওয়া হবে না, কী ভাবে কলসেন্টারে তথ্য সংগৃহীত হবে তার কোনও ব্লু প্রিন্ট দেবে না, এমনি-এমনি সব হয়ে যাবে? এটা কি ম্যাজিক?”
শুনে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা সুশান্তবাবুর উক্তি, “গত পুজো থেকে এটা চালুর চেষ্টা চলছে আর মেডিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষেরা বলছেন ওঁদের কিছু মনে পড়ছে না? আসলে অনেক কাজের চাপ তো, তাই বোধহয় ভুলে যেতে চাইছেন। কিন্তু অত সহজে ছাড় পাবেন না। আমার সামনে এলেই সব মনে পড়ে যাবে। মনে পড়িয়ে ছাড়ব। এটা মামার বাড়ি নয়। ইচ্ছা থাকলে সব হয়। এই পরিষেবার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। দ্রুত পরিষেবা শুরু হবে।”
স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নের জন্য গঠিত বিশেষ টাস্কফোর্সের ‘ব্রেনচাইল্ড’ এই কলসেন্টার। এতে শিলমোহর দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে ২৪ ঘণ্টা ফোন ধরার লোক থাকবে। থাকবে কম্পিউটার। শুধু মোবাইল থেকে করা ফোনই ধরা হবে। কোন বিভাগে কত শয্যা আছে সেই তথ্য এখান থেকে মিলবে। স্বাস্থ্যকর্তাদের যুক্তি, এতে শয্যা নিয়ে হাসপাতালের এক শ্রেণির দালালদের কারবারে লাগাম পড়বে।
কিন্তু পরিকল্পনা হলেই তো হল না। জুন পড়ে যাওয়ার পরেও পরিষেবা চালু করতে বেঁকে বসেছে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজগুলি। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার পার্থপ্রতিম প্রধান বলছেন, “লোকবলের যা হাল তা দিয়ে এমনি হাসপাতালই চালানো যাচ্ছে না, তার উপরে হবে কলসেন্টার! স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা বোধহয় বাস্তবের মাটিতে পা দিয়ে চলছেন না। এটা অনেকটা বাদুড়ঝোলা বাসকে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত করার মতো হচ্ছে। মানুষ বাসের বাইরে ঝুলবে, তা-ও বাস নাকি এসি হবে!” কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ তপন লাহিড়ির কথায়, “এই রকম কিছু জানিই না। কোনও নির্দেশ পাইনি।” জুন মাস থেকে এই রকম কোনও কলসেন্টার খোলার কথা মনে করতে পারেননি এসএসকেএম হাসপাতালের অধ্যক্ষ প্রদীপ মিত্রও। আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ পার্থজিত্‌ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার নিরুত্তাপ গলায় বলেন, “অপেক্ষা করুন। হয়তো সবটাই যন্ত্রচালিত করে দেবে। এক টিপলে একরকম তথ্য আসবে। দুই টিপলে অন্য তথ্য পাবেন। তা না হলে আমাদের যা লোকবল তা দিয়ে জুন কেন অদূর ভবিষ্যতেও কলসেন্টার অসম্ভব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.