পণ্যবাহী ভারি লরি যাতায়াত করায় ক্ষতি হচ্ছে সেতুর, ভেঙে যাচ্ছে রাস্তাও। এমনই অভিযোগ বুদবুদ থানার কাঁকড়া গ্রামের বাসিন্দাদের। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গ্রামের বেসরকারি কারখানাটির উত্পাদন শুরু হয় বছরখানেক আগে। তখন কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, ওই দুর্বল সেতুর উপর দিয়ে পণ্যবাহী লরি চলাচল করবে না। বরং লরিগুলির জন্য একটি বিকল্প সেতু গড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু বছর পেরোলেও সেই কাজের কিছুই হয়নি বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। এছাড়া রাস্তা সংস্কারের কাজেও কারখানা কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসার কথা দিয়েছিলেন বলে তাঁদের দাবি। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। কারখানা কর্তৃপক্ষও দাবিগুলি নিয়ে চিন্তাভাবনা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
|
কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুর থেকে প্রায় দেড় কিমি দূরে ওই কাঁকড়া গ্রাম। এলাকাবাসীরা জানান, গ্রামেরই বেশ কিছু মানুষের জমির উপর বছরখানেক আগে ওই বেসরকারি কারখানাটি গড়ে ওঠে। এলাকার অনেকেই কারখানায় কাজও করেন। ত্রিলোকচন্দ্রপুরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই কারখানায় পণ্য পরিবহণের জন্য বড় ভারি ট্রেলার ত্রিলোকচন্দ্রপুর দিয়ে যাতায়াত করে। ফলে দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। কখনও লরির ধাক্কায় রাস্তার পাশের দোকান ভেঙে যায়, কখনও বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায় বলেও তাঁদের অভিযোগ। এমনকি ক্রমাগত লরির ভারে রাস্তার বেশ কিছু জায়গা ভেঙে গর্ত হয়ে যাচ্ছে বলেও তাঁরা জানান। তাঁদের দাবি ,কারখানা শুরুর আগে কর্তৃপক্ষ কথা দিয়েছিলেন রাস্তাটি সারিয়ে পণ্যবাহী লরি যাতায়াতের উপযোগী করা হবে। কিন্তু বদলে রাস্তার হাল দিনে দিনে আরও খারাপ হচ্ছে। এছাড়াও কর্তৃপক্ষ ভারি লরি চলাচলের জন্য বিকল্প সেতু গড়ার কথা বলেছিলেন বলেও জানান তাঁরা। গ্রামের গুরুদাস মণ্ডল, স্বাধীন মণ্ডল, আশিস রায়, ভুবনেশ্বর পালেরা জানান, ডুলে খালের উপর ওই সেতুটি জীর্ণ হয়ে পড়ছে। সেতুর রেলিংয়ের বেশ কয়েকটা জায়গা ভেঙেও গিয়েছে। আরেক বাসিন্দা রাসবিহারী পালের অভিযোগ, রাস্তা ও সেতু সংস্কারের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন করা হলেও বিষয়টিতে তারা নজর দিচ্ছেন না। সেতুটি ভেঙে গেলে আশপাশের প্রায় ১৫টি গ্রাম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, “আমরা চাই এলাকায় শিল্প হোক। এতে মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে। কিন্তু তার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে।”
দিন দশেক আগেও একটি ট্রেলার ত্রিলোকচন্দ্রপুর বাসস্ট্যান্ড দিয়ে পার হওয়ার সময়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায় বলে গ্রামবাসীরা জানান। তাঁদের দাবি, যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ফলে পুলিশ, কারখানা কর্তৃপক্ষ ও গ্রামবাসীদের নিয়ে বৈঠক করে নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবিও তুলেছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে ওই কারখানার মালিক পবন গোয়েঙ্কা জানান, রাস্তাটি আগেও তারা সংস্কার করেছেন। আবারও খারাপ হলে সংস্কার করবেন। অন্য দাবিগুলিও ভেবে দেখার কথা আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তবে বিকল্প সেতুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নতুন সেতু গড়ার কোনও প্রতিশ্রুতি আমরা দিইনি” |