বাংলা সিনেমার দৃশ্য-ইতিহাস
অবিস্মরণীয়
বি নয়, বই। অন্তত ইতিহাস তাই বলে। বাংলা সবাক ছবির আশি-পেরনো ইতিহাস। সিনেমাকে এখনও অনেক সাধারণ শিক্ষিত দর্শক ‘বই’ বলেন। কিন্তু কী আশ্চর্য, ইতিহাস বলছে, সিনেমার পোস্টারেও হুবহু একটা বইয়ের ছবি! ১৯৫৪-য় ছবি হয়েছিল একটি, ‘নরমেধ যজ্ঞ’, সে ছবির পোস্টার ছিল হুবহু একটি বইয়ের ছবি, পুস্তানিতে বইয়ের নামের মতো করেই লেখা ‘টেকনিসিয়ান্স স্টুডিওর নিবেদন নরমেধ যজ্ঞ প্রযোজনা যৌথশিল্পী’। তার পরে ইতিহাসের পথ বেয়ে বাংলা ‘বই’-ও ক্রমে ‘ছবি’ হয়ে উঠল, পোস্টার কিংবা বুকলেট-প্রচ্ছদগুলিও হয়ে উঠল শিল্পের নতুন ভাষা।
পরিবর্তনের সেই অপূর্ব দৃশ্য-ইতিহাস এ বার দুই মলাটে। কত শিল্পী কত ধরনের লিখনশৈলী ও কত বিচিত্র পরিকল্পনায় সিনেমা-পুস্তিকার শত শত প্রচ্ছদ তৈরি করেছেন, এমন ভাবে তা এক সঙ্গে হাতে পাওয়ার সুযোগ এল এই প্রথম। নন্দন, পশ্চিমবঙ্গ চলচ্চিত্র কেন্দ্র প্রকাশিত বেঙ্গলি ফিল্ম ডিরেক্টরি-কে আরও সাম্প্রতিক করে, অর্থাৎ প্রতিটি সিনেমা সম্পর্কে মূল তথ্যগুলি সাজিয়ে তার সঙ্গে প্রায় সব বাংলা ছবির পুস্তিকা-প্রচ্ছদ যোগ করে অভিনব এক আ ডিরেক্টরি অব বেঙ্গলি সিনেমা প্রকাশিত হতে চলেছে। সংগ্রহ ও গবেষণায় পরিমল রায় এবং কাজী অনির্বাণ। প্রকাশক ‘কালার্স অব আর্ট’। আছে সেই রবীন্দ্র-ছবি ‘নটীর পূজা’র পুস্তিকাও। ১৯৩২-এ চিত্রা সিনেমাহলে মুক্তি পেয়েছিল ‘নটীর পূজা’, রবীন্দ্রনাথ পরিচালিত একমাত্র চলচ্চিত্র। তার শ্যুটিং হয়েছিল নিউ থিয়েটার্সে, রবীন্দ্রনাথ যাকে বলেছিলেন ‘দ্বিতীয় শান্তিনিকেতন’। ঝকঝকে ছাপায় পাতাজোড়া রঙিন ছবিতে আরও এক বার যেন জীবন্ত হয়ে উঠল বাঙালির স্মৃতির সেই ছবি-ঘর। আর সেখানে পাতায় পাতায় কত ভুলে যাওয়া, হারিয়ে যাওয়া ছবির কথা মধ্যরাতের তারা, নেকলেস, মিথুনলগ্ন, রাত্রিশেষ, কড়ি ও কোমল, ঘুম, ধূমকেতু...। ১৯১৭-২০১১, বাংলা সিনেমার এই প্রায় শতবর্ষের দৃশ্য-ইতিহাস এ ভাবেই থেকে গেল ভারতীয় সিনেমার শতবর্ষে, সৌভাগ্যের কথা, সন্দেহ নেই। সঙ্গে সেই সংগ্রহেরই কয়েকটি প্রচ্ছদ।

শতবর্ষে চলচ্চিত্র
জঁ রেনোয়া ‘দ্য রিভার’ ছবির শ্যুটিং করতে এসে সত্যজিৎকে পরামর্শ দেন হলিউডের জগৎ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বাংলার বাস্তবে পা রাখতে। বলেছিলেন, ‘তাকিয়ে দেখুন ওই কলাগাছের ঝাড়, তার নীচে ছোট্ট সবুজ ডোবাটি। এ জিনিস ক্যালিফোর্নিয়ায় নেই। এই হচ্ছে বাংলাদেশ।’ এ সব হল ‘পথের পাঁচালী’ তৈরির আগের কথা। তখন ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটিতে ইউরোপের সিনেমা দেখতেন সত্যজিৎবাবুরা। বেঙ্গল ফিল্ম ল্যাবরেটরিতে দেখা হত সোভিয়েত সিনেমা। মৃণাল সেনের উদ্যোগে ক্যালকাটা মুভিটোনে ছোট্ট ফিল্ম ক্লাব ছিল তপন সিংহদের। ভারতীয় সিনেমার শতবর্ষে আজ এ সব স্মৃতি ঝালিয়ে নিতেই ৫-৯ জুন রোজ ৩টে ও ৬টায় নন্দনে ‘ফেস্টিভ্যাল অব সিলেক্টেড ইন্ডিয়ান ফিল্মস’। বিশিষ্ট জনেরা পাবেন ‘সত্যজিৎ রায় স্মৃতি সম্মান’। নন্দনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ (পূর্বাঞ্চল)-এর সহ-সভাপতি প্রেমেন্দ্র মজুমদার জানালেন, ‘বলিউডি বিনোদনের বাইরেই যে আঞ্চলিক শিল্পিত সিনেমা আদত ভারতীয় সিনেমার মূলধারাটি তৈরি করেছে, তার চিহ্নই এ-উৎসব।’ ১০ জুন বিকেল ৫টায় সেমিনার ভারতীয় সিনেমার শতবর্ষ নিয়ে, বলবেন মিহির ভট্টাচার্য, পুতুল মাহমুদ, শঙ্করলাল ভট্টাচার্য। দেখানো হবে গণেশ পাইনকে নিয়ে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ছবি। ৫ জুন বিকেল সাড়ে পাঁচটায় উদ্বোধনে থাকবেন ফেডারেশনের সভাপতি কিরণ শান্তারাম। ‘ঝিন্দের বন্দী’ (সঙ্গের স্থিরচিত্র) ও ‘কল্পনা’ দেখানো হবে সে দিন।

প্রয়াণ
রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর বছরেই জন্ম তাঁর, কান্দি পাইকপাড়া রাজবংশে। রবীন্দ্রসঙ্গীতেই খ্যাতনামা ছিলেন তিনি, বন্দনা সিংহ। পারিবারিক সূত্রে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় পরিচিত ছিলেন। তাঁর কাছেই গানের শিক্ষা শুরু। পরে পাহাড়ী সান্যাল, দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় ও রাজ্যেশ্বর মিত্রের কাছে গান শিখেছেন। রবীন্দ্রসঙ্গীতের পাশাপাশি ছিল অতুলপ্রসাদ সেন ও দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গান, বিশেষ করে পাহাড়ী সান্যালের কাছে শিখেছেন বহু অতুলপ্রসাদী গান। কিন্তু গানের জগতে তাঁর প্রথম খ্যাতি তপন সিংহের ‘জতুগৃহ’ ছবিতে, তাতে তাঁর কণ্ঠে ‘আমার যে সব দিতে হবে’ আজও স্মরণীয়। তবে এ ছবিতেই তাঁর প্রথম প্লেব্যাক নয়, অসিত সেনের ‘উত্তর ফাল্গুনী’তে দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠে ‘আগুনের পরশমণি’ দিয়ে প্লেব্যাক শুরু। পরে বেশ ক’টি ছবিতে গান গেয়েছেন, করেছেন বহু মঞ্চসফল অনুষ্ঠান। পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় দুটি আধুনিক গানও রেকর্ড করেন। পাশাপাশি নিজের ‘সুরর্ষি’ সংস্থায় তৈরি করেছেন বহু ছাত্রছাত্রী, যাঁদের অন্যতম পুত্র দেবমাল্য চট্টোপাধ্যায়।

ব্রতচারী
বাংলার ব্রতচারী সমিতি ‘সেবালী’র কাজে ব্রতী হয়ে গুরুসদয় দত্ত তাঁর স্বপ্নের ব্রতচারীগ্রামে ১৯৪৭-এ তৈরি করেন অনাথ আশ্রম। তৈরি হয় স্কুলও। ১৯৪৯-এ ‘ব্রতচারী বিদ্যাশ্রম’ স্কুল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পায়। তখন এটিই ঠাকুরপুকুরের দক্ষিণে দশ মাইলের মধ্যে একমাত্র মাধ্যমিক স্কুল। বাংলার ব্রতচারী সমিতির পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন সুজাতা রায়। সহযোগী ছিলেন উদ্বাস্তু স্বাধীনতাসংগ্রামী যুবক দ্বিজপদ মুখোপাধ্যায়। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে দাঙ্গা কবলিত পরিবারের অনাথ কিশোরদের তিনি আশ্রমে নিয়ে আসতেন নিয়মিত। তাঁরা আজ অনেকেই প্রতিষ্ঠিত। অঞ্চলের বহু নিরক্ষর পরিবারকে বিদ্যালয়মুখী করেছিলেন দ্বিজপদবাবু। বরিশাল বি এম কলেজে পড়ার সময়ই তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন। ১ জুন জোকায় শ্রীবর্ধনপল্লির বাড়িতে নবতিতম জন্মবর্ষে এই শিক্ষককে বিদ্যাশ্রমের পক্ষে সম্মান জানালেন অগণিত ছাত্রছাত্রী।

থ্রিলার
মাত্র দু’টি চরিত্রে জমাটি থ্রিলার। অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছিল ‘টিকটিকি’র কথা। এ নাটকের নাট্যকার, নির্দেশক রাজ্য সরকারের ক্রীড়াবিভাগের সচিব। কিন্তু তাঁর ব্যক্তিগত শখ বহু কাল ধরেই নাটক। নান্দীকারের প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য অসীম চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র জ্যোতিষ্মান এর আগে তাঁর দল ‘কল্পায়ু’ থেকে করেছেন ‘কবিকথা’, ‘নাগরিক’, ‘লাল সবুজ’, ‘চলমান অশরীরী’র মতো নাটক। এ বার তাঁর নতুন নাটক ‘বিষ’। মুখ্য চরিত্রে সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম অভিনয় হল শনিবার স্টার থিয়েটারে। পরের অভিনয় ১৬ জুন সন্ধেয় গিরিশ মঞ্চে।

সাফল্য
স্কুলজীবনেই ফটোগ্রাফিতে হাতেখড়ি সুদীপ রায়চৌধুরীর। দেড় দশকে পেরিয়েছেন সাফল্যের একের পর এক ধাপ। ৫৫টি দেশের ৩০০-রও বেশি আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। পেয়েছেন অজস্র পুরস্কার। এই তরুণ আলোকচিত্রী এ বার ভারত সরকার আয়োজিত ন্যাশনাল ফটো অ্যাওয়ার্ডস-এ লাইফ অ্যান্ড ল্যান্ডস্কেপ ইন্ডিয়া বিভাগে ‘ফোটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার’ সম্মান পেলেন। সম্প্রতি দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সুদীপের হাতে পুরস্কার তুলে দেন লোকসভার অধ্যক্ষ মীরা কুমার। অন্য দিকে মঙ্গলবার থেকে বিড়লা আকাদেমিতে শুরু হচ্ছে আলোকচিত্রী সুরজিৎ হরির একক প্রদর্শনী। বিষয় লাদাখ। ২০০৫ থেকে সুরজিৎ নিয়মিত লাদাখ যান। এমনকী শীতেও গিয়েছেন। সেই রকম ১০০টি ছবি নিয়ে ওঁর প্রথম একক প্রদর্শনী ৯ জুন পর্যন্ত (৩-৮)। সঙ্গে সুরজিতের তোলা নুব্রা ভ্যালি-র ছবি।

আইনি
বারো বছরের মেয়েটি খুন করেছে বাবাকে। বাবার হাতে মায়ের লাঞ্ছনা দেখে ভেতরে ভেতরে মেয়েটি বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল। মেয়েটির অশিক্ষিত মা জানতেন না দেশের আইনি পরিষেবা সম্বন্ধে। তাই মার খেয়ে গিয়েছেন তিন মেয়েকে জন্ম দেওয়ার জন্য। এই নিয়েই ছবি করেছেন শতরূপা সান্যাল। উদ্দেশ্য, সাধারণ মানুষকে আইনি পরিষেবা সম্বন্ধে সচেতন করা। আসলে গ্রামের নিরক্ষর মহিলারাই নন, আইনি পরিষেবা সম্বন্ধে অনেক শিক্ষিত মানুষও অজ্ঞ। তাই উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ। বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে, রেশন কার্ড তৈরি বা ভোটার কার্ড হারিয়ে গেলে কী করতে হবে তার পরামর্শও মিলবে। যোগাযোগ: ২২৪৮-৩৮৯২। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ এই সুবিধে পাবেন। গ্রামেগঞ্জে এ সম্বন্ধে জানাতে দেখানো হবে তথ্যচিত্র ‘উঠো গো ভারতলক্ষ্মী’। শতরূপার কথায়, এ ধরনের ছবি তৈরি করে গ্রামের সেই মানুষদের কাছে পৌঁছেছি, যাঁদের কাছে আমার ছবি পৌঁছতে পারে না।

সেই সময়
মাত্র আড়াইশো বছর আগে ময়দানের চেহারা ছিল অন্য রকম। বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে ছিল জলা। সব ধরনের জন্তু-জানোয়ার নির্বিবাদে ঘুরে বেড়াত। মাঝে মাঝে ডাকাতের খবর পাওয়া যেত। শিকারে আগ্রহী সাহেবরা মাঝে মাঝে হাতিতে চেপে এসে হাজির হতেন জঙ্গলে। প্রকৃতপক্ষে আজকের ময়দানের সূত্রপাত পলাশির যুদ্ধের পর, অর্থাৎ বর্তমান ফোর্ট উইলিয়াম তৈরির পর্বে। ময়দানে এখনকার গাছগুলি লাগানো হয়েছিল ১৮৬৪-এর পর। প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় এবং সাইক্লোনে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল সমস্ত গাছ। ক্রমে আবার সেজে ওঠে ময়দান। এ সব জানা গেল দেবব্রত মল্লিকের লেখা কলকাতা সেই সময় (পূর্বা) বইটি থেকে। বড়বাজার, কলকাতা বন্দর ও মেটিয়াবুরুজের আকর্ষণীয় খবরও রয়েছে এতে। বাড়তি পাওনা শিল্পী সমীর বিশ্বাসের আঁকা অসামান্য রেখাচিত্র।

রবীন্দ্রমূর্তি
কলকাতায় আরও একটি রবীন্দ্রমূর্তি। নোবেল প্রাপ্তির সময় কবির যে তেজোদীপ্ত অথচ সৌম্য চেহারা, সেটাই ধরতে চেয়েছি মূর্তিতে, সেটা আবার নোবেল প্রাপ্তির শতবর্ষকে মাথায় রেখে বলছিলেন ভাস্কর সন্দীপ চক্রবর্তী। নিউটাউন রাজারহাটে ‘রবীন্দ্রতীর্থ’ উদ্বোধনের সময় ভাবা হয়েছিল মূর্তিটির কথা। তখন করা হয় ফাইবারে, এ বারে সেটি সরিয়ে বসল ব্রোঞ্জের মূর্তি (সঙ্গের ছবি)। ১৪ ফুট উচ্চতার এই মূর্তিটি রবীন্দ্রতীর্থকে অন্য মাত্রা দিয়েছে।

গোয়েন্দা গোগোল
শার‌্লক হোমস, ফেলুদার সঙ্গে আগেই পরিচয় ছিল। কিন্তু গোগোল-কে চিনত না। হঠাৎই ‘গোগোল’-এর ভূমিকায় অভিনয়ের প্রস্তাব! স্ক্রিন টেস্টে উতরে যাওয়ার পর সমরেশ বসুর গোগোলের সঙ্গে প্রথম পরিচয় সেন্ট জেমসের ক্লাস এইটের অহিজিৎ ঘোষের। ‘শুধু স্ক্রিপ্টই পড়েছিলাম। গোগোল আমার মতোই। অ্যাডভেঞ্চার ভালবাসে।’ সোজাসাপটা জবাব অহিজিতের। তাই খুদে গোয়েন্দার সঙ্গে মিশে যেতে খুব বেশি অসুবিধে হয়নি। ‘গোয়েন্দা গোগোল’-এর পরিচালক অরিন্দম দে-র কথায়, ‘অনেক অডিশন নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গোগোলকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। আসলে দরকার ছিল একটা সরল মুখ।’ শেষে ছবির প্রযোজক সুপ্রতীক ঘোষের ছেলে অহিজিতের কথা ভাবা হয়। ‘অন্য কোনও শিশুশিল্পীকে নিলে যে ভাবে কাজ করা হত, অহিজিৎকে নিয়েও সে ভাবেই কাজ করেছি।’ বললেন অরিন্দম। ক্রিকেট, ভিডিয়ো গেমের পোকা। আগে অভিনয় করেনি। ‘তবে শ্যুটিং-এর ধারণা ছিল। শুনে আনন্দ আর টেনশন দুই-ই হল। প্রথম শটটা আট বার নেওয়া হয়েছিল। ভুল করলে রচনা আন্টি, সাহেব আঙ্কল, ইন্দ্রনীল আঙ্কল সব্বাই শুধরে দিত।’ তবে সব ভাল যার শেষ ভাল। ‘বন্ধুরা যখন বলত তোর পোস্টার দেখলাম, দারুণ লাগত।’ তবে এই মুহূর্তে আর না। ‘পড়ায় খুব চাপ। শ্যুটিং করতে গিয়ে পড়াশুনোটা একটু কম হয়েছে। এক্ষুনি আর কিছু ভাবছি না।’

স্মৃতি ও সঞ্চয়
আমি ওঁর কাছে গিয়ে অত গুরুদেব-গুরুদেব করতাম না, কক্ষনো না। একটা অন্য রকম রিলেশনশিপ ছিল।’ ‘কুকুল’, অর্থাৎ শমীক ঘোষকে বলছেন শান্তিদেব ঘোষ। জীবনের শেষ দিকে হিমাচল প্রদেশের সানাওয়ারে ভাইপো শমীকের কর্মস্থলে কিছু দিন ছিলেন শান্তিদেব। তখন তাঁর এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নেন শমীক ও তাঁর স্ত্রী অনুত্তমা। তাতেই প্রাণ খুলে অনেক কথা বলেছিলেন শান্তিদেব। যেমন, শান্তিনিকেতনে তাঁকে নিয়ে রটনার কথা, “সেই সময় আমার নামে রটেছিল যে এখন মাথা আমার এমন গরম হয়ে গেছে, আমি এখন এখান থেকে পালাব বলে ঠিক করেছি, সিনেমা-টিনেমায় ঢুকে আমি এখন কিছু-একটা হতে চাই। আমার এমন ল্যাজ মোটা হয়ে গেছে।...’’ এই রটনার ফলে রবীন্দ্রনাথ তাঁকে চিঠি লিখলেন, ‘কেবল দুটি উপদেশ আমার আছে। এই আশ্রমেই তুই মানুষ। সিনেমা প্রভৃতির সংস্পর্শে কোনও গুরুতর লোভেও নিজেকে যদি অশুচি করিস তাহলে আমার প্রতি ও আশ্রমের প্রতি অসম্মানের কলঙ্ক দেওয়া হবে। দ্বিতীয়, আমার গানের সঞ্চয় তোর কাছে আছে বিশুদ্ধভাবে সে গানের প্রচার করা তোর কর্তব্য হবে। আমি তোর পিতার পিতৃতুল্য, আশা করি আমার উপদেশ মনে রাখবি।’ ব্যক্তিগত সেই চিঠি-সহ আরও অনেক প্রাসঙ্গিক চিঠি ও নথি, টীকা-সহ পুরো সাক্ষাৎকারটি সম্প্রতি প্রকাশিত হল স্মৃতি ও সঞ্চয় বইয়ে (সম্পাদনা আলপনা রায়, দে’জ)। এই সঞ্চয় আরও একটু খুলে দিল শান্তিদেব ঘোষের ব্যক্তিত্বকে। কিন্তু মৃত্যুর প্রায় দেড় দশক পরেও শান্তিদেবের গানের সম্পূর্ণ সংগ্রহ আজও প্রকাশিত হল না। এই শহর কিংবা বিশ্বভারতী কি একটু উদ্যোগী হতে পারে না? ছবি প্রচ্ছদ থেকে।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.