|
|
|
|
তৃণমূলের কোন্দলে লাগাম |
রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে বাতিল পাঁশকুড়ায় দু’গোষ্ঠীরই কর্মিসভা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে লাগাম দিতে উদ্যোগী হলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। তাঁদের নির্দেশে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় দলের দুই বিবদমান গোষ্ঠীরই সভা বাতিল হল।
আজ, সোমবার পঞ্চায়েত সমিতির কমিউনিটি হলে তৃণমূলের ব্লক কমিটির সভাপতি দীপ্তিকুমার জানা, পুরপ্রধান জাকিউর খানরা কর্মী সম্মেলনের কর্মসূচি নিয়েছিলেন। এই নিয়ে পোস্টারও সাঁটানো হয়ে গিয়েছিল। সেখানে থাকার কথা ছিল দলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন, বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতির। পাল্টা হিসেবে রবিবার ওই একই স্থানে পঞ্চায়েত রাজ কর্মী সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিধায়ক ওমর আলি, নন্দ মিশ্র, আনিসুর রহমানের গোষ্ঠী। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের দুই গোষ্ঠীর পিঠোপিঠি সভা ঘিরে জেলা নেতৃত্ব অস্বস্তিতে পড়েন। বিষয়টি তাঁরা জানান রাজ্য নেতৃত্বকে। শেষমেষ রাজ্য নেতৃত্ব দুটি গোষ্ঠীকেই কর্মসূচি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন। দীপ্তিকুমার জানা বলেন, “দলের উচ্চ নেতৃত্বের অনুমতি নিয়েই সোমবার কর্মী সম্মেলনের কর্মসূচি নেওয়া হয়ে ছিল। কিন্তু আমাদের কর্মসূচির আগের দিনই একই স্থানে দলেরই একাংশ ওই একই কর্মসূচি নিয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। তা উচ্চ নেতৃত্বকে জানাই। তাঁদের নির্দেশে দু’দিনেরই কর্মসূচি স্থগিত হয়েছে।” ওমর আলির গোষ্ঠীর নেতা তথা পাঁশকুড়া পুরসভার কাউন্সিলর আনিসুর রহমানও মেনে নেন, “রবিবার কমিউনিটি হলে বিধায়কের নেতৃত্বে পঞ্চায়েত রাজ সম্মেলনের যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল দলের উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে তা স্থগিত করা হয়েছে।”
সম্প্রতি, পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান পদের দাবিতে বর্তমান পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খানের সঙ্গে উপ-পুরপ্রধান নন্দ মিশ্রের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। রাজ্য সরকারের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়ে এই দ্বন্দ্ব এতটাই তীব্র হয় যে পাঁশকুড়া ব্লক তৃণমূল কমিটিকে এড়িয়ে পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি বিধায়ক ওমর আলি, উপ-পুরপ্রধান নন্দ মিশ্রের গোষ্ঠী গত ১৮ মে পাঁশকুড়া স্টেশন বাজারে প্রকাশ্যসভার আয়োজন করে। দলের ব্লক সভাপতি দীপ্তিকুমার জানা লিখিত চিঠি দিয়ে ওমরবাবুকে ওই সভা না করার অনুরোধ করলেও তিনি রাজি হননি বলে খবর। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরী, রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি, পটাশপুরের বিধায়ক জ্যোতির্ময় কর প্রমুখ। সভায় ওমর আলি অভিযোগ করেন, তাঁদের কর্মসূচিকে বানচাল করার জন্য দলেরই একাংশ তাঁদের সভায় আসতে বাধা দিয়েছে। এমনকী দলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীকে সভায় আসার আমন্ত্রণ জানানো হলেও তিনি আসেননি। এর জেরে পাঁশকুড়ায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও তীব্র হয়। ওমরবাবুদের সভার পাল্টা সভাও হয়। সেই সভায় ছিলেন দলের ব্লক সভাপতি দীপ্তিকুমার জানা, পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খান, রাজ্য কমিটির সদস্য জাইদুল খানের গোষ্ঠী। সেখানেই এই কর্মী সম্মেলনের ঘোষণা করা হয়। তার প্রচারও চালানো হয়। তারই পাল্টা হিসাবে ফের ওমরবাবু, নন্দ মিশ্রদের গোষ্ঠী ওই একই স্থানে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কর্মিসভার কর্মসূচি নেয়।
পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে উদ্যোগী হন রাজ্য নেতৃত্ব। শনিবার কলকাতায় তৃণমূল ভবনে যান পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি দীপ্তিকুমার জানা, রাজ্য কমিটির সদস্য জাইদুল খান। তাঁরা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের কাছে এই বিষয়ে নালিশ করেন। এরপর মুকুলবাবু বিবাদমান দুই গোষ্ঠীকেই ঘোষিত কর্মসূচি বাতিলের নির্দেশ দেন। |
|
|
|
|
|