আর্থিক অনিয়মের অভিযোগেই আইপিএল কমিশনারের পদ থেকে সরতে হয়েছিল ললিত মোদীকে। সেই আইপিএল-এই নতুন করে গড়াপেটার ঘটনা সামনে আসার পরে ললিত মোদীর ভূমিকা খতিয়ে দেখতে চায় দিল্লি পুলিশ। তিন বছর আগে আইপিএলের পদ খুইয়েছেন মোদী। আয়কর দফতর তদন্ত করে দেখেছে, অনেকগুলি আইপিএল টিমে মোদীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ বিনিয়োগ ছিল। ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগও উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর জমানাতেই টি-২০তে যাবতীয় অনিয়ম ফুলেফেঁপে উঠেছিল। তার পর থেকে বিদেশেই রয়েছেন মোদী। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত চালাচ্ছে বিসিসিআই-এর শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি। কিন্তু বিদেশের মাটি থেকেই বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করে মোদী তদন্তে নিজের প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ। এখন এই নতুন ঘটনার পরে মোদীর ভূমিকা আরও এক বার আতসকাচের তলায়।
যদিও আজকের ঘটনার পর ললিত মোদী নিজে বিসিসিআই-এর উপরে গোটা দায় চাপিয়ে দিতে চেয়েছেন। ললিত বলেছেন, আইপিএল কমিশনার থাকাকালীন গড়াপেটা সংক্রান্ত অভিযোগ তাঁর কানেও এসেছিল। তিনি সে সব খবরই আইপিএল-এর সিইও সুন্দর রমনকে জানিয়েছিলেন বলে তাঁর দাবি। বিরোধীদের প্রশ্ন, শুধু জানিয়ে কী হবে? দুর্নীতি ঠেকাতে মোদী কী করেছেন? ললিতের দাবি, তাঁর সময়ে তিনি দুর্নীতির সঙ্গে কোনও রকম আপস না করারই নীতি নিয়েছিলেন। তিনি আশা করেন, বিসিসিআইও তা-ই করবে! মোদী প্রশ্ন তোলেন, “বিসিসিআই-এর যে দুর্নীতি বিরোধী টিম কী করছে? যা করার তো দিল্লি পুলিশই করল!” আইপিএল-এর বর্তমান কমিশনার রাজীব শুক্ল সারা দিন এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি।
মোদীর বিরুদ্ধে অবশ্য দিল্লি পুলিশের কাছেও অনেক অভিযোগ রয়েছে। অরুণ জেটলির অভিযোগ তার মধ্যে অন্যতম। মোদীর বিরুদ্ধে তদন্তকারী দলের অন্যতম সদস্য জেটলি। সম্প্রতি জেটলির ফোনে যে আড়ি পাতা হয়েছিল, তাতেও মোদীর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব আর কে সিংহের কাছে মোদীর ভূমিকা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেটলি নিজেও। তিনি অনেক দিন ধরেই বলে আসছেন, আড়ি পাতায় মোদীর ভূমিকা নিয়ে তদন্ত হোক।
দিল্লি পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁরা আপাতত একটি বিষয়ে তদন্ত করে এগিয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে আরও অনেক ব্যক্তি জড়িত থাকতেই পারেন। তাদেরও ধরার চেষ্টা করা হবে। দিল্লি পুলিশ সূত্রের মতে, কংগ্রেস-বিজেপি উভয়েরই মাঝারি কিছু নেতা জড়িত থাকতে পারেন। সেই সঙ্গেই নতুন করে বিতর্ক দেখা দিচ্ছে যে, বিভিন্ন ক্রীড়াসংস্থার মাথায় রাজনৈতিক নেতারা বসে থাকবেন কেন? তাতে কি খেলার মানের কোনও উন্নতি হয়? বিজেপির মুখপাত্র শাহনওয়াজ হোসেন অবশ্য এই অভিযোগ মানছেন না। তাঁর কথায়, “রেলমন্ত্রীর তো ট্রেন চালাতে জানা জরুরি নয়! বিমানমন্ত্রীরও বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা নেই। নেতারা রাজনৈতিক প্রভাব এবং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়েই ক্রীড়া জগতে তাঁদের অবদান রাখেন।” |