|
|
|
|
সম্পাদক সমীপেষু... |
টাস্ক ফোর্স হয়েছে, খুব ভাল, এ বার খলসে পুঁটিদের বাঁচান |
‘মাছ-চাষ বাড়াতে টাস্ক ফোর্স’ (১৪-৪) খবরটা পড়ে ভীষণ ভাবে আশ্বস্ত হলাম। বর্তমানে ‘জল’ তথা ‘মাছ’ সঙ্কটের দিনে এমন একটি পদক্ষেপ সত্যিকারেরই নবজাগরণ। আমি এক জন মৎস্যজীবীগবেষক। উক্ত টাস্ক ফোর্সের কাছে সবিনয় কয়েকটি প্রস্তাব রাখছি। ১) রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষি ও সেচ দফতরের অধীনে থাকা পুকুর-জলাশয়গুলির মধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে জেলায় অন্ততপক্ষে ১-২টি করে (আগামী দিনে যার সংখ্যা বাড়তে পারে) ‘ফিশ ব্যাঙ্ক’ তৈরি করা। যেটিও দূষণমুক্ত হবে। যেখানে প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপন্ন জুপ্লাঙ্কটন, ফাইটোপ্লাঙ্কটনগুলিকে মাছেরা খাদ্য হিসাবে পাবে। এতে কৃত্রিম খাবার দিতে হবে না। তাই মাছ উৎপাদনে খরচ কমবে। বাস্তুতন্ত্র ও বায়োডাইভার্সিটি বজায় থাকবে। সেখানকার জলের প্রকৃতি, ph মাত্রা, লবণ-মিষ্টতা, তাপমাত্রা ইত্যাদির উপযুক্ত দেশজ অবলুপ্তির মুখোমুখি মাছগুলিকে মিশ্র পদ্ধতিতে একই পুকুর-জলাশয়ে দেশি বিভিন্ন রকমের পোনা, কই, মাগুর, ট্যাংরা, পুঁটি ইত্যাদির চাষ হবে। |
|
২) আমাদের দেশে মৎস্য সংরক্ষণের আইন বহু দিনের। দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইনল্যান্ড ফিশারিস অ্যাক্ট ১৯৮৪-তে মাছ সংরক্ষণ এবং বংশবিস্তারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যার মূল কথা, প্রজননক্ষম মাছদের রক্ষা করে অবাধ, সুষ্ঠু, প্রাকৃতিক প্রজনন চালানো। এ দেশে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন দ্বারা অনেক বন্য প্রাণীকে অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানো গেলেও, মাছ সংরক্ষণে আজ পর্যন্ত কোনও সদর্থক ভূমিকা কেউ নেয়নি। তাই দেশজ অবলুপ্তির মুখে প্রজননক্ষম মাছগুলির প্রাকৃতিক অবাধ ও সুষ্ঠু প্রজননের পরিকাঠামো গড়ে তোলা উচিত যাতে দূষণ-জর্জরিত পরিবেশের বায়োডাইভার্সিটি অক্ষুণ্ণ থাকে। দেশজ মাছগুলি রক্ষা পায়।
৩) রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে যেমন একটি করে কৃষি খামার আছে, তেমনই প্রতিটি ব্লকে একটি করে ‘ফিশারি তদারকি কেন্দ্র’ গড়ে তুলে ব্লকে ব্লকে স্থানীয় পরিকাঠামোর ভিত্তিতে ব্যবস্থাগুলি কার্যকর করা প্রয়োজন।
সুর্যেন্দু দে। গবেষক, মৎস্যজীবী সম্প্রদায়, মুর্শিদাবাদ
|
ম্যানিফেস্টো |
গৌতম চক্রবর্তী (‘ম্যানিফেস্টো’, রবিবাসরীয়, ২১-৪) লিখেছেন, ১৯৮৪ সালে আমেরিকার ‘ব্রেড অ্যান্ড পাপেট থিয়েটার’ প্রকাশিত ম্যানিফেস্টো নিয়ে বলেছেন, প্রায় তিরিশ বছর আগে আমেরিকার এক পুতুল কোম্পানির ম্যানিফেস্টো বদলে দিয়েছিলেন শিল্প সম্বন্ধে আমাদের ধ্যানধারণা। ‘...ম্যানিফেস্টো আরও নানা কথা বলল, শিল্প হবে সস্তা, সকলের নাগালের মধ্যে।’
লেখক হয়তো খেয়াল করেননি ১৯৭৪ সালে ১৭ ডিসেম্বর তরুণ শিল্পী অসিত পাল এক ম্যানিফেস্টো প্রকাশ করেন। তার ১৮ দিন বাদে ৪ জানুয়ারি ১৯৭৫ সালে আরও কিছু তরুণ কবি ও শিল্পীকে নিয়ে চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের দেওয়ালে ছবি এঁকেছিলেন। ছোট ছোট কবিতা ও সাহিত্যের লাইন ছিল অন্য দেওয়াল জুড়ে। তিনি এর নাম দিয়েছিলেন ‘চলমান শিল্প আন্দোলন’। যা ধীরে ধীরে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলন সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা উদ্দীপনা সৃষ্টি করে। আনন্দবাজার পত্রিকাতেই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এই আন্দোলনের এক প্রতিবেদন লিখেছিলেন ওই সময়ে। বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্যে ছবি আর সাহিত্যকে ছড়িয়ে দেওয়ার পিছনে উদ্দেশ্য ছিল ছবিকে গ্যালারির চৌহদ্দির থেকে বের করে খোলা আকাশের নীচে নিয়ে আসা। তাই চৌরঙ্গির মনোহর দাস তড়াগের গম্বুজে শুরু করেছিলেন গ্যালারি। চার দিক খোলা গ্যালারির ভিতরে ছোট ছোট পিলার-এ প্রদর্শনী হয়েছে রামকিংকর বেজ, পরিতোষ সেন, সুনীলমাধব সেন প্রমুখের ছবি আর ভেতরে কবিতাপাঠ শুনেছি সুনীল, শক্তি, সমরেন্দ্র, পূর্ণেন্দু পত্রীদের। অসিত পালের ম্যনিফেস্টোতে উল্লেখ করা হয়েছিল, ‘শিল্প শুধুমাত্র ঘরেই সতীলক্ষ্মী হয়ে থাকবে না, শিল্প থাকবে সর্বত্র। সে এক জায়গায় জড় বস্তুর মতো কেন থাকবে? একদিন কলকাতায় নিশ্চয়ই দেখতে পাবেন, মানুষের জামাকাপড়ে শিল্পীর তুলির আঁচড়। তাঁদের গাড়ি চিত্রিত, সরকারি ও বেসরকারি চিত্রিত বাস-ট্রাম। রাস্তার বিভিন্ন দেওয়ালে দেওয়ালে শিল্পীদের হাতে আঁকা ছবি। এমনকী পশুরাও ছবি থেকে বঞ্চিত হবে কেন? রাস্তায় যে সব গরুকে ঘুরতে দেখবেন হয়তো তাদের গায়েও ছবি দেখা যাবে। আমার অনেক ঘটনাই হয়তো কারও কারও অনভ্যস্ত চোখে নিছক নতুনত্বের কায়দা বলে মনে হতে পারে। তাদের আমি শুধু বলব, নতুনত্বের কায়দাই অনেক প্রকৃত শিল্পীর হাতে সত্যিকারের নতুন শিল্পের জন্ম দিয়েছে।’
এর পর অসিত পাল লেখক, রংওয়ালা, বাড়ির মালিক, গাড়ির মালিক, জামাকাপড়ের মালিক এমনকী গরুর মালিকদের প্রতি অনুরোধ করেছেন, তাঁরা যেন তাঁদের গাড়ি বাড়ি, জামাকাপড় ইত্যাদি দেন শিল্পীদের ছবি আঁকার জন্য। লেখকরা সাহিত্যকে মুক্ত করে খোলা আকাশের নীচে নিয়ে আসুন। শিল্পীরা ভাবুন, কলকাতা শহরটাই একটা আস্ত ক্যানভাস।
আমরা দেখেছি, প্রতি শনি রবিতে ওই গম্বূজ গ্যালারিতে প্রদর্শনী, কবিতাপাঠ, গান প্রচুর মানুষ ভিড় করে শুনছেন। পোস্টারে লেখা ‘শিল্পের কোনও পৈতে নেই’।
এর পর পুরো আন্দোলনটাই বন্ধ হয়ে যায় এমার্জেন্সির কবলে পড়ে। তবে এর অনুরণন বহু দূর প্রসারিত হয়। এর প্রতিফলন পরবর্তী পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে বহু শিল্পী ও লেখকের মধ্যে। এমনকী এই আন্দোলনের পঁচিশ বছর পূর্তি উদ্যাপন হয়েছিল শহরের সরকারি একটি বাসকে চিত্রিত করে।
রঞ্জন পুরকায়স্থ। কলকাতা-৬৩
|
শুধু লোভ নয়, অশিক্ষাও |
আপনারা শুধুমাত্র গরিব মধ্যবিত্তের লোভের কথা বলেছেন (‘লোভ আছে, বিধি নাই’, সম্পাদকীয়, ২৩-৪), কিন্তু তাদের অশিক্ষার কথা বলা হয়নি। লোভ থাকলেও শিক্ষা মানুষের চোখ খুলে দেয়। পরিণাম চিন্তা করে শিক্ষিত মানুষ। পরিণাম চিন্তা না-থাকলে পতন অনিবার্য। চোখ থেকেও গরিব মানুষ অন্ধের মতো ধড়িবাজ দালালদের পাল্লায় পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। বহু বিজ্ঞাপন দিয়েও মানুষকে বোঝানো যায়নি যে, ব্যাঙ্ক বা পোস্টঅফিসে টাকা রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
উপরন্তু বহু গ্রামে কাছাকাছি ব্যাঙ্ক বা পোস্টঅফিস নেই। গ্রামের মানুষদের টাকা রাখতে গেলে অনেক দূর হেঁটে বা রিকশায় যেতে হবে। এ সব অসুবিধারই সুযোগ নিয়েছে দালালরা।
দেবব্রত নিয়োগী। কলকাতা-২৬
|
‘রাবীন্দ্রিক মুটে’! |
বিশ্বভারতীর মাননীয় উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের যে সাক্ষাৎকার (১৫-৪) প্রকাশিত হয়েছে, তার কিছু অংশ পড়ে বিস্মিত ও মর্মাহত হয়েছি। বিশ্বভারতী পরিচালনা প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, “এখানে এক শ্রেণির মানুষ আছেন, যাঁদের আমি বলি, ‘রাবীন্দ্রিক মুটে’। রবীন্দ্রনাথের কথাগুলো তাঁরা ঝুুড়ি-বোঝাই করে বয়ে নিয়ে চলেছেন। কেবল ভয়, বুঝি কলাটা-মুলোটা খসে পড়ল।” উপাচার্য মহাশয়ের ভাষাপ্রয়োগ কি সঙ্গত হয়েছে?
স্বয়ম্ভু গৌতম। বোলপুর, বীরভূম
|
পিতামাতা কেন? |
পুরপিতা, পুরমাতা শব্দগুলো (‘পুরপিতা পার্থর...’, ১৪-৪) পুরবাসীদের পক্ষে অসম্মানজনক বলে মনে হয়। এত মাতাপিতার প্রয়োজন আছে কি? পুরপারিষদ কথাটি তো ব্যবহার করা যেতে পারে।
সৈকত রুদ্র। কলকাতা-১১০ |
|
|
|
|
|