|
|
|
|
সনিয়া-মনমোহন জুটি নিয়ে প্রচারে কংগ্রেস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে দুই মন্ত্রীর ইস্তফাকে কেন্দ্র করে মনমোহন-সনিয়া মতান্তরের ছবি ঢাকা দিতে উভয়ের ‘সুষ্ঠু সম্পর্ক’ নিয়ে এ বার প্রচারে নামল কংগ্রেস।
কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর পদ থেকে অশ্বিনী কুমারকে সরাতে টানাপোড়েনের জন্য ক’দিন আগে পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকেই ঘরোয়া আলোচনায় দায়ী করছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। এমনকী অশ্বিনীকে সরানোর দিনেও কংগ্রেস নেতারা বলেছিলেন, সনিয়ার চাপেই কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর ইস্তফা চেয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
দলের অন্দরেই এই মনোভাব প্রকাশ্যে এসে মনমোহন-সনিয়ার মতান্তরের ছবিটা যেমন প্রকট হয়েছে, তেমনই প্রশ্ন উঠেছে প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব নিয়েও। লোকসভা ভোটের আগে যা কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়াচ্ছে। কংগ্রেসকে বেকায়দায় ফেলতে পুরোদস্তুর মাঠে নেমেছে বিজেপিও। এই অবস্থায় কিছুটা চাপে পড়েই মনমোহন-সনিয়ার সুষ্ঠু সম্পর্ক নিয়ে প্রচারে নেমেছে কংগ্রেস।
দলের প্রধান মুখপাত্র জনার্দন দ্বিবেদী আজ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেস সভানেত্রীর মতান্তর নিয়ে যে প্রচার চলছে, তা একেবারে গুজব। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এমনও বলা হচ্ছে যে, প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে নতুন মুখ আনা হবে। কিন্তু ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচার থেকে শুরু করে পরবর্তী কালেও সনিয়া গাঁধী একাধিক বার জানিয়েছেন যে, ২০১৪ সাল পর্যন্ত মনমোহন সিংহই প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। এ ব্যাপারে কারও কোনও সংশয় থাকা উচিত নয়।” জনার্দন আজ এ-ও বলেন, “সনিয়া-মনমোহনের মধ্যে অত্যন্ত সুষ্ঠু সম্পর্ক এবং তালমিল রয়েছে। এর জুড়ি মেলা ভার।”
রাজনীতির কারবারিদের বক্তব্য, আসলে সনিয়া-মনমোহনের মধ্যে যে গুরুতর মতান্তর হয়েছে, তা জনার্দনের কথা থেকেই পরিষ্কার। না হলে এমন ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজনই পড়ত না।
কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের তিরস্কার সত্ত্বেও নিজের পিঠ বাঁচাতে অশ্বিনীকে সরানোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দেরি নিয়ে বহু নেতাই অখুশি। অনেকে এ-ও বলছেন যে, প্রধানমন্ত্রী এখনই বদল করা হোক। পরিবর্তে রাহুল গাঁধীকে প্রধানমন্ত্রী করে ভোটে যাক কংগ্রেস। কিন্তু বাস্তব হল, ২০১৪ সাল পর্যন্ত মনমোহনকে প্রধানমন্ত্রী পদে রেখেই চলতে হবে কংগ্রেসকে। কেন না রাহুল এখনই দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত নন। আবার অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদের দায়িত্ব অন্য কাউকে দিতে নারাজ সব পক্ষই। এই পরিস্থিতিতে যে মতান্তরের বার্তা যাচ্ছে, তাতে দলের ক্ষতি হচ্ছে। সেই কারণেই আজ পাল্টা প্রচারে নামতে হয়েছে দলকে।
মনমোহনকে আড়াল করার জন্য সিবিআই তদন্ত প্রসঙ্গে তিরস্কারের জন্য সুপ্রিম কোর্টের পাল্টা সমালোচনা শুরু করেছে কংগ্রেস। দিগ্বিজয় আজ বলেন, “সর্বোচ্চ আদালত যে ভাবে সিবিআই-কে মনিবের তোতা বলছে বা সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুন্যাল যে ভাবে গোয়েন্দা বিভাগকে ‘মুরগি’ বলছে, তাতে খাটো করা হচ্ছে দেশের তদন্ত এজেন্সিগুলিকে।” তাঁর কথায়, “সুপ্রিম কোর্ট এ ভাবে পর্যবেক্ষণ দিচ্ছে কেন? সরকারের বিরুদ্ধে কোনও বক্তব্য থাকলে সরাসরি রায় দিক সর্বোচ্চ আদালত।” কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য দিগ্বিজয়ের মন্তব্য থেকে দূরত্ব বজায় রাখছে।
কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “সনিয়ার সঙ্গে মতান্তর নিয়ে যে ভাবে প্রচার চলছে, তাতে কে বলতে পারে দুম করে মনমোহনই না ইস্তফার প্রস্তাব দেন! সমালোচনার মুখে অতীতেও এমন প্রস্তাব সনিয়াকে দিয়েছেন তিনি। তাই প্রধানমন্ত্রীকে আড়াল করতে সক্রিয় কংগ্রেস।” |
|
|
|
|
|