জল, স্থল এবং আকাশপথকে কাজে লাগিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে রাজ্যে। এর ফলে কর্মসংস্কৃতির এক আদর্শ পরিবেশ তৈরি হবে। সোমবার মিলেনিয়াম পার্কে অন্তর্দেশীয় জলপথ পরিবহণের তিনটি জলযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এ রাজ্যে পর্যটন শিল্পে এক লক্ষ কোটি টাকার লগ্নি-প্রস্তাব এসেছে। এ দিন গঙ্গাবক্ষে পর্যটনের জন্য বিলাসবহুল বজরা ‘মত্স্যকন্যা-নব অহল্যা’ এবং যাত্রিবাহী লঞ্চ ‘হেমলতা’র চালকদের হাতে ইঞ্জিনের চাবি তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ছাড়া, বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য ‘হংস’ নামে একটি লঞ্চের চাবি তুলে দেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিত্ কর পুরকায়স্থের হাতে। ওই অনুষ্ঠানেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জলপথকে আমরা কাজে লাগাতে চাই। এর আগে কেউ জলপথকে কাজে লাগিয়ে পর্যটন শিল্পের উন্নতি করার চেষ্টা করেনি। বহরমপুর থেকে শুরু করে সুন্দরবনের কচুবেড়িয়া পর্যন্ত গঙ্গার জলপথকে ব্যবহার করে পযর্র্টন শিল্পের বিকাশের পাশাপাশি অতিরিক্ত রাজস্বও আদায় করা সম্ভব।” গঙ্গা ছাড়াও রাজ্যের অন্যান্য নদীর উপরে যে সব জেটি রয়েছে, তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য রাজ্য সরকার তিন কোটি টাকা খরচ করছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। |
দিনের আলোকতরী চলে গেল যবে... |
গঙ্গাবক্ষ আলো করে যাত্রা শুরু করল ‘মত্স্যকন্যা-নব অহল্যা’। সোমবার সন্ধ্যায়। ছবি:সুমন বল্লভ |
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, জলপথ ছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে সব ক’টি রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সড়কগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে যে রাস্তাগুলি, সেগুলিরও সংস্কার শুরু হয়েছে। সারা রাজ্যে মোট চার হাজার কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার করা হবে। জলপথ, স্থলপথ ছাড়া আকাশপথেও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করার ব্যাপারে রাজ্য ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছে। সেই লক্ষ্যেই কোচবিহার বিমানবন্দর সংস্কারের জন্য রাজ্য সরকার ২৫ কোটি টাকা দিয়েছে।
এ দিনের অনুষ্ঠানে পরিবহণ দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পরিবহণ দফতরের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন নিগমগুলি হুগলি নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা পরিবহণ ব্যবস্থাকে যাত্রীদের জন্য আরও সুবিধাজনক করে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে পর্যটকদের জন্য সুসজ্জিত বজরাটি চালাবে পরিবহণ দফতর।
ওই বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতি শুক্র, শনি ও রবিবার ‘মত্স্যকন্যা-নব অহল্যা’ চালানো হবে। দিনে চার বার এই বজরাটি পর্যটকদের নিয়ে দক্ষিণেশ্বর, বেলুড় মঠ, কুমোরটুলি, বটানিক্যাল গার্ডেন-সহ হুগলি নদীর বিভিন্ন দর্শনীয় ঘাট পরিদর্শন করাবে। হুগলি নদীর দু’পাশে বিভিন্ন ঘাট এবং মন্দিরের ইতিহাসও পর্যটকদের শোনানো হবে। এর জন্য মাথাপিছু খরচ পড়বে এক হাজার টাকা। এ দিন জলযানের উদ্বোধনের পরে মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সংস্কৃতি এবং ক্রীড়া জগতের বিশিষ্টদের নিয়ে সুসজ্জিত ‘মত্স্যকন্যা-নব অহল্যা’য় করে হাওড়া ব্রিজ থেকে বিদ্যাসাগর সেতু পর্যন্ত ঘুরে আসেন। |