চার বছর পর ফের মঞ্চে
সিনেমার মতো
আবহে বেজে উঠল শ্যামল মিত্রের কণ্ঠে ‘তিনটি মন্ত্র নিয়ে যাদের জীবন, সত্যম শিবম সুন্দরম...’। স্ক্রিনে টাইটল কার্ড। মঞ্চসজ্জায় বহু পূর্বস্মৃতিসম সাদা-কালো ছবিতে উত্তমকুমার, সাবিত্রী, তপন সিংহ, সত্যজিৎ রায়...। না, সিনেমা নয়, ‘সিনেমার মতো’। চার বছর পরে মঞ্চে আবার নিজের লেখা নতুন নাটক পরিচালনায় ব্রাত্য বসু। অভিনয়েও। কিন্তু না, অভিনয়ে ঠিক তিনি নন, কুমার ব্রাত্য।
এ ভাবেই এই ‘সিনেমার মতো’-র ‘শ্রেষ্ঠাংশে’ যাঁরা তাঁদের অনেকের নাম ভেসে উঠবে সিনেমারই মতো করে টাইটল কার্ডে। কেন? “এটা গ্রুপ থিয়েটারে কোনও ফিল্মি চমক দেওয়ার জন্য করা নয়।এ নাটকের গল্পটা সিনেমাকে ঘিরে, তার নেপথ্যের না-বলা কাহিনিগুলো ঘিরে। বাংলা সিনেমা গত চার দশকে কেমন আছে, তার হালহকিকতটা কী সেটাই নাট্যকার-পরিচালক হিসেবে আমি বুঝে নিতে চেয়েছি। আর তার সঙ্গে বঙ্গজীবনে বাংলা সিনেমার যে বিশিষ্ট স্থান, দেখাতে চেয়েছি সেটাও।” মোহিত মৈত্র মঞ্চে একটি একান্ত মঞ্চ-মহলার পরে বললেন ব্রাত্য। বাঙালির গ্রুপ থিয়েটারের ‘এলিট’ অভ্যাসে এটা একটা কালচারাল শক নাকি? নির্দেশক বলছেন, “একেবারেই না। রুদ্ধসঙ্গীত থেকে শুরু করে আমার প্রযোজনায় সব সময়ই নতুন কিছু থাকে, নতুন এক্সপেরিমেন্ট থাকে। আমার দর্শক এত দিনে নিশ্চয়ই সেটা নিতে পারার মতো তৈরি হয়েছেন।” এ নাটকে অভিনয় করছেন অনসূয়া মজুমদার, পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়, পৌলোমী বসু। কালিন্দী ব্রাত্যজন-এর প্রযোজনায় এর প্রথম অভিনয় ২২ মে অ্যাকাডেমিতে। সঙ্গে বাঁ দিকে নাটকের একটি দৃশ্যে ব্রাত্য ও পৌলোমী। ডানে নাটকের একটি মুহূর্তে অনসূয়া। পিছনে কার ছবি? সেটা বরং উহ্যই থাক।

মৃণাল সেন ৯০
প্রতি দিন সকালে উঠেই ইচ্ছে করে ছবি বানাতে, আবার বুঝতেও পারেন, বোধহয় আর পেরে উঠবেন না এখন। নিজমুখেই কবুল করলেন মৃণাল সেন। নব্বই পূর্ণ হবে কাল, এই ১৪ মে তাঁর ৯১তম জন্মদিন, ফরিদপুরে জন্ম, ১৯২৩-এ। সিনেমার ভাষা নিয়ে এখনও তাঁর আগের মতোই মুগ্ধতা, ‘সব সময়ে গ্রো করছে, টেকনোলজির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ফিল্মের ফর্ম আরও ইন্টারেস্টিং হয়ে উঠছে। আমি অবান্তর ম্যাজিকের কথা বলছি না, টেকনোলজিকে ঠিকমতো ব্যবহার করে নতুন সিনেমার ভাষা তৈরির কথা বলছি।’ আড্ডা দিতে এখনও ভাল লাগে, তবে ই-মেল ব্যবহার করেন বেশি, কথা বলার চেয়ে। তবু দীর্ঘক্ষণ বললেন, বাংলা-ইংরেজি দু’ভাষাতেই, প্রসার ভারতী-র আর্কাইভ-সাক্ষাৎকারে। অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রযোজনায় কিছুদিন ধরে লাগাতার সাক্ষাৎকার নিলেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, জানালেন: ‘প্রচুর কথাবার্তার মধ্যে প্যাশনেটলি একটা কথা বারে বারে বলছিলেন মৃণালদা নিয়ম ভাঙতে চেয়েছিলাম।’ তাঁকে নিয়ে এক আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু হবে গোর্কিসদনে ২১ মে, মূলত বাংলাদেশের নাসির আলি মামুনের তোলা ছবি নিয়ে। ২১-২৪ মে অবধি দেখানো হবে জেনেসিস, মাটির মনিষ, নীল আকাশের নীচে, ভুবন সোম। উদ্যোগে আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাব।

শিল্পীর প্রয়াণ
বাবার ছোটবেলার গল্পে বারবার ঠাকুমা হেমাঙ্গিনী দেবীর কথা আসত, অসাধারণ শিল্পী ছিলেন, তাঁর তৈরি কাঁথা আছে আমার কাছে। বাবা তাঁর কাকা শিল্পী শান্তিলাল বন্দ্যোপাধ্যায়েরও ছবি আঁকা দেখতেন... সদ্যপ্রয়াত শিল্পী অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে বলছিলেন কন্যা এষা। ভারতের ছাপাই ছবির ইতিহাসে বিশিষ্ট এই মানুষটি গত দু’বছর ধরে ক্যানসার আর হাঁপানির উপর্যুপরি আঘাতেও ছিলেন সদাহাস্যময়। প্রথম জীবনের শিক্ষক জয়নুল আবেদিনের জলরঙের কাজ তাঁকে প্রভাবিত করলেও মার্কিন ছাপাই ছবি শিল্পী পল লিঙরেন-এর সাত দিনের কর্মশালা হয়ে ওঠে তাঁর জীবনের দিকনির্দেশক। গ্রাফিক প্রিন্ট মেকিং-এর পাশাপাশি অমিতাভবাবু কাজ করেছেন মিশ্র মাধ্যমেও। ভারতের নানা গ্যালারি ছাড়াও ইয়োরোপের নানা গ্যালারিতে তাঁর কাজ আছে। বহু সম্মান-পুরস্কারে ভূষিত শিল্পী ২০১২-য় পেয়েছেন রাজ্য চারুকলা পর্ষদের অবনীন্দ্র পুরস্কার। সোসাইটি অব কনটেম্পোরারি আর্টিস্টস-এর প্রবীণ এই সদস্য রীতিমতো সক্রিয় ছিলেন কলকাতায় ললিতকলা অ্যাকাডেমি নির্মাণে। জন্ম ১৯২৫-এ বরিশালের পটুয়াখালিতে। শৈশব কেটেছে সন্দীপ-এ, সেখানকার নিসর্গ আজীবন ছাপ ফেলেছে তাঁর ছবিতে।

সাবাস
১৯০৬-এ প্রথম কলকাতায় ট্যাক্সি চলে। চৌরঙ্গি রোডে গ্র্যান্ড হোটেলের কাছে ফ্রেঞ্চ মোটরকার কোম্পানির অফিস ছিল, সেখান থেকে মিটারওয়ালা ট্যাক্সি যেত দমদম, ব্যারাকপুর, বজবজ। ভাড়া? মাইলপিছু আট আনা। চালকরা সবই বাঙালি, শিখ ড্রাইভাররা আসেন পরে। তবে হাওড়ার যশবীর কৌর দেশের প্রথম মহিলা ট্যাক্সি ড্রাইভার, ১৯৮৯-এ ট্যাক্সি চালানো শুরু করেন। এ সবই জানা গেল টালিগঞ্জ করুণাময়ী স্ট্যান্ডের ট্যাক্সি চালকদের উদ্যোগে, ৮ মে-র বর্ষবরণ উৎসবে। এসেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের বাকু পটুয়া, তাঁর পটের গানে ও ছবিতে এ বার ট্যাক্সির উপাখ্যান, সঙ্গে কলকাতা শহর-বর্ণন। বাপি, নরেশ আর অন্য ট্যাক্সি চালকরা এখানেই থামেননি। বিকাশ মুখোপাধ্যায় ওঁদের জন্য শহরে ট্যাক্সি চলাচলের প্রথম দিকের ইতিবৃত্ত তৈরি করে দিয়েছেন, ওঁরা তা ফ্লেক্স-এ সাজিয়েছেন। কেউ দিয়েছেন বেঙ্গল পটারিজ-এর তৈরি চিনামাটির ট্যাক্সির মডেল, কি লন্ডন ট্যাক্সির স্কেল মডেল। শিল্পী পার্থ দাশগুপ্ত এঁকে দিয়েছেন আমন্ত্রণলিপি। ছিলেন পুরমাতা রত্না শূর। রবীন্দ্রনাথকেও শ্রদ্ধা জানানো হল অনুষ্ঠানে। অভিনব উদ্যোগ বইকী!

মননভূমি ছুঁয়ে
কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের উদ্যোগে শ্রীরামকৃষ্ণ জীবন ও বাণী বিষয়ক একটি গবেষণা-গ্রন্থ প্রকাশিত হতে চলেছে। শ্রীরামকৃষ্ণের আবির্ভাবের ১৭৫তম বর্ষ উপলক্ষে পরিকল্পিত গ্রন্থটির শিরোনাম শ্রীরামকৃষ্ণ: মননভূমি ছুঁয়ে। ১৫ মে বেলুড় মঠে গ্রন্থটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করবেন স্বামী আত্মস্থানন্দ। লেখকসূচিতে যেমন আছেন স্বামী প্রভানন্দ, স্বামী চেতনানন্দ, স্বামী তত্ত্ববিদানন্দ, স্বামী ভজনানন্দ, স্বামী আত্মপ্রিয়ানন্দ তেমনই গ্রন্থটিকে সমৃদ্ধ করেছেন সৌরীন ভট্টাচার্য, তরুণ সান্যাল, দেবারতি মিত্র, মণীন্দ্র গুপ্ত, মনোজ মিত্র, বিশ্বজিৎ রায়, দেবব্রত মুখোপাধ্যায়, সোমনাথ ভট্টাচার্য, শৌটীরকিশোর চট্টোপাধ্যায়, তীর্থঙ্কর দাশ পুরকায়স্থ, রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে। গ্রন্থটিতে দুষ্প্রাপ্য আলোকচিত্রের সঙ্গে আধুনিক কালের কয়েক জন প্রখ্যাত শিল্পীর চিত্রকলাও উপস্থাপিত হয়েছে। গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন স্বামী শিবপ্রদানন্দ।

অলীক সুখ
বাংলা ছবির দুনিয়ায় রীতিমতো সুখবর! ২২ মে ‘অলীক সুখ’-এর প্রিমিয়ার হচ্ছে কান-এ, নন্দিতা রায় আর শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবি। ইতিমধ্যেই ইচ্ছে, মুক্তধারা, অ্যাক্সিডেন্ট তাঁদের আগের ছবিগুলো হইচই তুলেছিল, দর্শকগ্রাহ্যতার পাশাপাশি প্রশ্নও তুলেছিল সমাজ সম্পর্কে। ৪-৫ মে দিল্লিতে প্রবাসী বাঙালিদেরও দেখানো হয়েছে। সুচিত্রা ভট্টাচার্যের উপন্যাস থেকে তৈরি নতুন ছবিটি প্রশ্ন তুলেছে চিকিৎসকদের নৈতিকতা নিয়ে। ভিনদেশি দর্শকেরা দেখে কী বলেন, আপাতত এই কৌতূহলের সঙ্গে ছবিটি দেখার অপেক্ষা পশ্চিমবঙ্গবাসীর। সঙ্গে ছবির একটি দৃশ্যে ঋতুপর্ণা ও দেবশঙ্কর।

শৃণ্বন্তুর উদ্যোগ
রেডিয়ো নাটকের কল্যাণেই কি শ্রুতিনাটকের উদ্ভব? তবে ঘরোয়া শ্রুতিনাটকে কুশীলবদের সঙ্গে সরাসরি যোগ স্থাপিত হয় দর্শক-শ্রোতাদের। দক্ষিণ কলকাতার সাংস্কৃতিক সংস্থা শৃন্বন্তু গত নয় বছর ধরে এই যোগসূত্র রক্ষার কাজটি করে আসছে। শ্রুতিনাটক শিক্ষা, প্রযোজনা, নাট্য সংকলন পৌঁছে যাচ্ছে জেলাস্তরেও। ওদের নবম বর্ষপূর্তি উৎসব আজ সন্ধে ৫টায়, শিশিরমঞ্চে। এ বারের নাট্য সংকলনটি প্রকাশ করবেন কবি তরুণ সান্যাল। এরপর ‘রবীন্দ্রনাথের নাট্যভাবনা’ বিষয়ে বলবেন অনুপ মতিলাল। উপস্থিত থাকবেন কবি অরুণ চক্রবর্তী, বীরেন্দ্রকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নাট্যকার বনানী মুখোপাধ্যায়। থাকছে শৃন্বন্তু-র তিনটি শ্রুতিনাটক। সম্মানিত করা হবে আদ্রা-র ‘টুকলু’ কিশোর পত্রিকার পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের। পরে পরিবেশিত হবে নদিয়া জেলার ঝুমুর এবং মুণ্ডাদের লোকনৃত্য।

বনজ শিল্প মেলা
মানুষের প্রয়োজনে জঙ্গল ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে আসছে, কৃষিক্ষেত্রে বাড়ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার। অথচ জঙ্গল বাঁচিয়েও যে বেঁচে থাকা যায়, সে দিশাই দেখাচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল অ্যাফরেস্টেশন অ্যান্ড ইকো ডেভেলপমেন্ট বোর্ড। এদেরই উদ্যোগে ৭-৯ মে রাসবিহারী অ্যাভিনিউ-র আশাভূষণ ভবনে আয়োজিত হল ‘বনজ শিল্প মেলা’। এখানে অরণ্যচারী মানুষদের তৈরি নানা সামগ্রী বিক্রি হয়। চাল-ডাল, মধু, ভেষজ প্রসাধন, বিভিন্ন আনাজ-শস্য, ডালের বড়ি, আচার, সুতির পোশাক-সহ গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় এবং গৃহসজ্জার হরেক উপাদান ছিল এখানে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ছিলেন ছত্তীসগঢ়, সিকিম, ঝাড়খণ্ডের উৎপাদকরা। দর্শক-ক্রেতাদের দাবি একটাই, এ সবের একটা স্থায়ী কেন্দ্র গড়ে উঠুক এ শহরে।

শহরের ইতিকথা
এ শহরের ধুলো-ঢাকা পলেস্তারার নীচে লুকিয়ে আছে বহু মূল্যবান সম্পদ। আলোকচিত্রী অনির্বাণ মিত্র গত সাত বছর ধরে খুঁজে চলেছেন সেগুলি-- ঔপনিবেশিক স্থাপত্যশৈলী, সঙ্গে অভিজাত শ্রেণির অন্দরমহল। মূর্তি, আয়না, ঝাড়বাতি এমন আরও অজস্র উপাদান। সাধারণত এ সব থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। অনির্বাণ খুঁজে খুঁজে এগুলি লেন্সবন্দি করেছেন সাদা-কালোয়, কয়েকটি রঙিনে। বাছাই করা পঞ্চাশটি ছবি নিয়ে সম্প্রতি আই সি সি আর-এ আয়োজিত হয়েছিল একটি প্রদর্শনী ‘ক্যালকাটা: স্টেটলি হোমস ইন দ্য সিটি অব প্যালেসেস’ শীর্ষকে। এই প্রদর্শনীটিই যাচ্ছে সাগরপারে-- লন্ডনের ভারতীয় হাইকমিশনের সংস্কৃতি শাখার নেহরু সেন্টার-এ (২১-২৪ মে)। কলকাতার ভিতর আর এক কলকাতা বা বলা ভাল তার উজ্জ্বল দিক নিয়ে এমত প্রদর্শনী এই প্রথম। রাজভবন ও ক্যালকাটা ক্লাব নিয়ে দু’টি বইয়ের পর অনির্বাণের ইচ্ছে শীঘ্রই হাত দেবেন তৃতীয় বইটির কাজে। সঙ্গের ছবি ‘ওয়ান লেডি ইন দ্য সান’, প্রদর্শনী থেকে।

নতুন প্রাপ্তি
ক্রমেই এক শূন্যতা গ্রাস করছিল গজলের দুনিয়াকে। মেহদি হাসান চলে গিয়েছেন, কিছু দিন আগে চলে গেলেন জগজিৎ সিংহও। সেই শূন্যতায় এ বার নতুন পাওয়া উস্তাদ রাশিদ খানের গজল। গজলগুলি লিখেছেন আমিতা পরশুরাম মিতা। নতুন এই কবির লেখা ৯টি গজল নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত হল উস্তাদ রাশিদ খান ও তাঁর কন্যা সুহা খানের গজল অ্যালবাম ইশক লমহে (ইউনিভার্সাল)। তিনটি গজল এখানে গেয়েছেন রাশিদ, একটি কন্যা সুহা। শুধু গানই নয়, গানের সঙ্গে কবির কণ্ঠে পাঠও আছে। শেষ গজলটি রাশিদ খানের গান ও আমিতার পাঠে নতুন এক অভিজ্ঞতার মতো হয়ে উঠেছে। এ ছাড়াও বেশ কয়েকটি গজল পাঠ করেছেন আমিতা। রাশিদকন্যা সুহারও এটি প্রথম প্রকাশ, একটি গজল ও একটি নাজমে।

বিজ্ঞান-সাধক
তথ্যের জগতে তখন এমন বিস্ফোরণ ঘটেনি। মাউস ক্লিক করলেই রাশি রাশি তথ্য কম্পিউটার স্ক্রিনে চোখের সামনে ধরা দিত না। তাই বলে জ্ঞান-বিজ্ঞানের অজানা কথা বাঙালি কিশোর-কিশোরীদের কাছে অধরা থেকে যাবে তাই কি কখনও হয়! আনন্দমোহন কলেজের গণিতের অধ্যাপক অরূপরতন ভট্টাচার্য মশাইয়ের কলম সেই জরুরি কাজটির জন্য নিবেদিত ছিল। উনিশ-বিশ শতকে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার যে ধারাটি গড়ে উঠেছিল তিনি সেই ধারারই যোগ্য উত্তরাধিকারী। সরস ভাষায়, নাটকীয় উপস্থাপনায় বিজ্ঞানের কাণ্ডকারখানা তুলে ধরতেন তিনি। ‘আনন্দমেলা’র খুদে পাঠকরা তাঁর লেখা গোগ্রাসে পড়ত। বিজ্ঞান যখন ভাবায়-এর লেখক তাদের রীতিমতো ভাবা প্র্যাকটিস করাতেন। তারাও আনন্দের সঙ্গে তাই করত। ১৯৯৪-এ এরই স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছিলেন ইন্দিরা গাঁধী প্রাইজ ফর পপুলারাইজেশন অব সায়েন্স। তবে তিনি তো কেবল ছোটদের নন, রীতিমত বড়দেরও। প্রাচীন ভারতে জ্যোতির্বিজ্ঞান বইয়ের জন্য ১৯৭৬-এ রবীন্দ্র পুরস্কার প্রাপ্তি। রবীন্দ্রনাথের বিশ্বপরিচয় গ্রন্থের পাঠান্তর সংবলিত সংস্করণ নির্মাণ, জগদানন্দ রায়ের বিজ্ঞান বিষয়ক রচনার সম্পাদনা, বাঙালির বিজ্ঞান সাধনার ইতিহাস রচনা সব কিছুতেই অনলস তিনি। শেষের দিকে তাঁর ভাবনার বিষয় ছিল চেতনা আর বিজ্ঞানের সম্বন্ধ, এ নিয়ে বইও লিখেছিলেন। স্বল্পভাষী, সুবক্তা, সদাহাস্যময় মানুষটি নিয়ম মেনে লেখাপড়া করতেন। রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্য অধ্যাপক বিজনবিহারী ভট্টাচার্যের পুত্র তিনি, পড়াশোনা করা তো তাঁর ‘স্বভাব’। দক্ষিণ কলকাতার বাসগৃহে গেলে আর দেখা যাবে না মানুষটিকে ঋজু হয়ে বসে লিখতে। দিল্লিতে চিকিৎসক পুত্রের গৃহে প্রয়াত হলেন অরূপরতন ভট্টাচার্য (জ. ১৯৩৭)। বাংলায় জনপ্রিয় বিজ্ঞানের বই লেখার ইতিহাসে তাঁর স্থায়ী জায়গা অবশ্য রয়ে গেল।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.