মহাকাশযানে মানুষের বসবাসের স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যবস্থা করা যেতে পারে কী ভাবে? সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের কাছে উত্তর চেয়েছিল ন্যাশানাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)। সারা বিশ্ব থেকে যে ৫৯২টি উত্তরপত্র জমা পড়েছিল, তার একটি দুর্গাপুরের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র অমিক মণ্ডলের। তার উত্তর পছন্দ হয়েছে নাসা-র। ডাক এসেছে পুরস্কার নিতে। এ রাজ্য থেকে সে-ই একমাত্র পুরস্কার প্রাপক।
নাসা ও ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালির ‘এএমইএস রিসার্চ সেন্টার’ যৌথ ভাবে সারা বিশ্বের স্কুল পড়ুয়াদের জন্য ‘নাসা স্পেস সেটলমেন্ট কনটেস্ট’ আয়োজন করে আসছে ১৯৯৪ সাল থেকে। সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা একা বা দলগত ভাবে তাতে যোগ দিতে পারে। প্রতিটি শ্রেণি থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়কে পুরস্কার দেওয়া হয়। ২০১১ সালে মহাকাশে আস্ত শহরের পরিকল্পনা করে পুরস্কৃত হয়েছিল ব্যান্ডেল বিদ্যামন্দিরের শ্রীজাতকিশোর ভট্টাচার্য। শংসাপত্র ছাড়াও বিজয়ীরা পায় ‘ইন্টারন্যাশনাল স্পেস ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্স’-এ যোগ দেওয়ার সুযোগ। এ বার ২৩-২৭ মে ওই কনফারেন্স হবে সান দিয়েগোয়। |
দুর্গাপুরের বাড়িতে অমিক মণ্ডল।—নিজস্ব চিত্র |
অমিক জানায়, এ বার উত্তর পাঠানোর শেষ দিন ছিল ১৫ মার্চ। মার্চের প্রথম সপ্তাহে হঠাৎ ইন্টারনেটে প্রতিযোগিতার বিষয়টি নজরে আসে তার। হাতে সময় কম, তাই রাতদিন এক করে কম্পিউটারে কাজ করেছে অমিক। পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ না রেখে কোনও মহাকাশযানে কী ভাবে বসবাসের স্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করা যেতে পারে, ১৬ পাতায় তা ব্যাখ্যা করে একেবারে শেষ মুহূর্তে পাঠিয়েছিল সে। লিখেছিল, জল, বাতাস, সুর্যালোক, গাছএ সব থাকলেই জীবন চলবে। বাষ্পীভূত জলও বিশেষ পদ্ধতিতে ব্যবহারের উপযোগী করা যাবে। তাতে মানুষ ছাড়া নানা প্রাণীও বাস করতে পারবে। দুর্গাপুরের হেমশিলা মডেল স্কুলের ছাত্র অমিক বলে, “কল্পনাও করিনি, পুরস্কার পাব। কিন্তু দিন কয়েক আগে ইন্টারনেট খুলে দেখি, অষ্টম শ্রেণি বিভাগে তৃতীয় হয়েছি।”
এ বার প্রতিযোগিতায় গ্র্যান্ড পুরস্কার জিতেছে ফ্লোরিডার একটি স্কুল দল। এ দেশ থেকে অনেক পড়ুয়া একা বা দলগত ভাবে যোগ দিয়েছিল। পুরস্কার পেয়েছে দেশের দশটি স্কুল দল। তবে একাকী বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে অমিক-সহ ছ’জন। তার স্কুলের অধ্যক্ষ সৌমেন চক্রবর্তী বলেন, “অমিক সব সময় নানা উদ্ভাবনী চিন্তার মধ্যে থাকে। এই সাফল্যের পুরো কৃতিত্ব তার নিজের।”
আনন্দের মধ্যেও খানিকটা দ্বিধায় অমিক ও তার পরিবার। অমিকের বাবা, দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের কর্মী অসিতবরণ মণ্ডল জানান, ছেলের সান দিয়েগো যাতায়াত ও অন্য খরচের পুরোটা জোগাড় করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। অনেকের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। খরচের কতটা বহন করতে পারবেন তা জানিয়ে তাঁকে দেখা করতে বলেছে যুব কল্যাণ দফতর। ১৫ মে সেখানে দেখা করবেন, জানান অসিতবাবু। দুর্গাপুরের মেয়র তথা বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “এত বড় সুযোগ পেয়েছে অমিক। তাকে সাধ্য মতো সহযোগিতা করার চেষ্টা হবে।”
আশায় বুক বাঁধছে অমিকও।
তার কথায়, “এত দূর যখন ঠিকঠাক হয়েছে, শেষটাও নিশ্চয়ই ভাল ভাবেই হবে।”
|
জনসংখ্যা ছাড়াচ্ছে মোবাইল
সংবাদসংস্থা • লন্ডন |
কোটিপতি থেকে কেরানি, হাতে হাতে মোবাইল ফোন। এ তো জানা কথাই। তারই এক রকম খাতায়-কলমে হিসেব দিল রাষ্ট্রপুঞ্জের টেলি-যোগাযোগ সংস্থা। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় আন্তর্জাতিক টেলিকম ইউনিয়ন (আইটিইউ) জানিয়ে দিল, তাদের অনুমান যদি সঠিক হয়, খুব শীঘ্রই গোটা দুনিয়ার জনসংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে মোবাইল ফোনের গ্রাহক-সংখ্যা। রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই সংস্থাটি জানাচ্ছে, ২০১৪ সাল শেষ হতে না হতেই গ্রাহক সংখ্যা হয়তো ছাড়িয়ে যাবে ৭০০ কোটির গণ্ডি। এ মুহূর্তে পৃথিবীতে প্রায় ৭০০ কোটি মানুষের বাস। আর মোবাইল গ্রাহক ৬৮০ কোটি। আর এক-তৃতীয়াংশ লোক ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করেন। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি সব চেয়ে বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। মাথাপিছু ১.৭। অর্থাৎ প্রত্যেকে গড়ে দু’টো করে মোবাইল ব্যবহার করেন। সব চেয়ে পিছিয়ে আফ্রিকা মহাদেশ। এখানে গ্রাহক সংখ্যা ৬৩ শতাংশ লোক। আইটিইউ-এর ডিরেক্টর ব্রাহিমা সানিউ বলেন, “একটু একটু করে মোবাইলের গ্রাহক সংখ্যা বিশ্বের জন-সংখ্যা ছোঁয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।” |