সারদা-কাণ্ড
লগ্নি সংস্থা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে পথে তৃণমূল
ট পেতে, হ্যারিকেন জ্বালিয়ে পাড়ায় পাড়ায় মিটিং করে বিভিন্ন লগ্নিসংস্থায় টাকা না রেখে সরকারের স্বল্প সঞ্চয়ে টাকা রাখার জন্য প্রচার চালাবেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। একই সঙ্গে বিভিন্ন লগ্নি সংস্থায় ইতিমধ্যেই যাঁরা তাঁদের টাকা রেখেছেন সেই সব আমানতকারীদের কাছেও আবেদন করা হবে ওই সব সংস্থা থেকে গচ্ছিত অর্থ তুলে নেওয়ার জন্য। সারদা কাণ্ডে আমানতকারীদের প্রতারিত হওয়ার ঘটনায় গোটা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে এই প্রচার চালাবে তৃণমূল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচী নিয়েছেন।
জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামী ৭ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত জেলার সর্বত্র এ ধরনের আলোচনাসভার মাধাম্যে মানুষকে সমস্ত লগ্নি সংস্থা সম্পর্কে সচেতন করা হবে। এ নিয়ে মিছিলও বের করা হবে। জেলার র্শীষ নেতৃত্ব থেকে সমস্ত ব্লক ও শহর তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অতীতে জেলায় কোনও নির্দিষ্ট ঘটনার প্রেক্ষিতে এ ভাবে পাড়ায় পাড়ায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে মিটিং-মিছিলেন প্রয়োজন হয়নি। তা হলে এ বার কেন?
জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, সারদা কাণ্ডের জেরে জেলার অসংখ্য মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছেন। শুধু সারদাই নয়, গত তিন-চার বছরের মধ্যে জেলার গ্রামীণ এলাকায় বিশেষ করে বনগাঁ ও বসিরহাট মহকুমায় বহু লগ্নিসংস্থা আমানতকারীদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে উঠে গিয়েছে। ওই সব সংস্থার বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার সে ভাবে ব্যবস্থা নেয়নি বলে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে। তার প্রেক্ষিতেই রাজ্য সরকার সম্পর্কে সাধারণ মানুষের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ।
বৃহস্পতিবার তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মিছিল।—নিজস্ব চিত্র।
সারদা কাণ্ডে ওই সংস্থার সঙ্গে তৃণমূলের কিছু নেতার যোগ থাকার অভিযোগ ওঠায় তা নিয়ে দল বেশ অস্বস্তিতে। জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের আশঙ্কা যে সারদার ননা কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা নিয়ে দলের কিছু নেতার নাম উঠে এসেছে তাতে জনমানসে দলের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। পাশপাশি রাজ্যের মধ্যে এই জেলায় বিভিন্ন লগ্নি সংস্থার দাপটও যথেষ্ট। সেই সব দিক বিচার করেই সারদা কাণ্ডের সঙ্গে দলের নেতাদের যোগকে অস্বীকার করে ভাবমূর্তি বাঁচাতে লগ্নি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে আদা-জল খেয়ে প্রচারে নামার এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
যে ভাবে কংগ্রেস এবং সিপিএম সারদা কাণ্ডে তৃণমূল নেতাদের জড়িত থাকার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সরব হয়েছে, তাতে তৃণমূলও বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে। এই অবস্থায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রামীণ ভোট ব্যাঙ্কের কথধা মাথায় রেখেই এ হেন আলোচনাসভা, মিছিলের সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। শুধু মিটিং, মিছিলই নয়, সারদা কাণ্ডের প্রেক্ষিতে যে কমিশন গঠিত হয়েছে সেখানেও আমানতকারীদের অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রেও সাহায্য করবেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। দলের জেলা পর্যবেক্ষক ও মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “গ্রামাঞ্চলের মানুষের পক্ষে কমিশনের অফিস চেনা বা সেখানে গিয়ে পৌঁছনো অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হবে না। সেই কারণে আমরা ওই সব মানুষদের কমিশনের দফতরে পৌঁছতে সাহায্য করব।” তিনি আরও জানান, শুধু সভা করে কাউকে এই বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচানো যাবে না। তাই এ সবের বিরুদ্ধে প্রচারের পাশাপাশি মানুষকে স্বল্প সঞ্চয়ে টাকা রাখার জন্যই প্রচার চালাব আমরা।”
এ দিন থেকে জেলার প্রতিটি ব্লক ও শহরে মিছিল শুরু করা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে জনসভা করানোরও ব্যবস্থা হচ্ছে। আগামী ১১ থেকে ২৫ মে নোয়াপাড়া, মধ্যমগ্রাম, বনগাঁ, উত্তর দমদম-সহ বহু এলাকায় সভা করা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.