|
আমার বাবার মন্ত্রই
এখন বিশ্বাস করতে হবে দলকে
জাক কালিস |
|
ছোটবেলা থেকে আমার বাবার দেওয়া ‘ট্রেনিং’ সারা জীবনে বহুবার কাজে লেগেছে। আজ আর তিনি বেঁচে নেই। থাকলে, তাঁর শেখানো সেই কর্মসংস্কৃতি আমি অক্ষরে অক্ষরে পালন করছি দেখে খুশি হতেন। বাবার শেখানো মন্ত্রটা ছিল, কখনও হেরে যেও না। এই মন্ত্র নিয়েই আমার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা, সাফল্য পাওয়া আর টিকে থাকা। এখনও এই মন্ত্রই আঁকড়ে ধরে আছি। বাবা বলেছিলেন, ‘এক মুহূর্তের জন্যও মনে কোরো না, তুমি হেরে গিয়েছ। তা হলে আর কখনও লড়াইয়ে ফিরতে পারবে না।’ এই পরিস্থিতিতে বাবার দেওয়া মন্ত্রই এখন দলের সবাইকে বিশ্বাস করতে হবে।
টি টোয়েন্টি ক্রিকেটটা আসলে এ রকমই। এখানে সাফল্য ও ব্যর্থতার মধ্যে দূরত্ব বেশ কম। যে পারফরম্যান্স করে এক দিন একটা ম্যাচ জেতা যায়, সে রকম পারফম্যান্স করে পরের ম্যাচেই হেরে যাওয়াটা কোনও অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। এটাই টি টোয়েন্টি ক্রিকেট।
সে দিন ইডেনে গিলক্রিস্টের দলের বিরুদ্ধে প্রথম তিন ওভারে ১১ রান দিলাম, আবার পরের ম্যাচেই রবিবার আমার প্রথম তিন ওভারে চেন্নাইয়ের ব্যাটসম্যানরা নিল ৩২! আসলে আগের দিন আমি বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের ঠিকঠাক বুঝে নিয়ে বল করেছিলাম। পরের দিন ওরাই আমার জারিজুরি আগাম বুঝে নিয়ে তুমুল পেটাল। এই ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে এ রকমই হয়ে থাকে।
রবিবার চেন্নাই দুশো রান তুললেও আমার বিশ্বাস ছিল, রানটা আমরা তুলে দিতে পারি। কারণ, উইকেটটা দারুন ছিল। প্রতি ওভারে গড়ে দশ রান তোলাটা ওখানে এমন কিছু কঠিন কাজ ছিল না। তা সত্ত্বেও সেই ম্যাচ হেরে মাঠ ছাড়াটা যে কী দুঃসহ, তা আপনাদের বোঝাতে পারব না। মাইক হাসি কী খেলটাই না খেলল বলুন। ৪০-এও ‘মিস্টার ক্রিকেট’-এর কী দাপট। টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে বয়সটাই আসল কথা নয়, তা ফের প্রমাণ করল ও। আমি নিজেও তা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি। ওর মতোই অসাধারণ ব্যাট করছিল আমাদের যে ছেলেটা, সেই মনি বিসলাকে যে ভাবে রান আউট করে ম্যাচটা ঘুরিয়ে দিল হাসি, তার প্রশংসাও না করে উপায় নেই। বিসলার ফর্মে ফেরাটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তবে এটা ধরে রাখতে হবে ওকে। অবশেষে বাজ ম্যাকালামকে প্রথম এগারোয় দেখে ভাল লাগল। আশা করি ওর ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স আমরা আবার দেখতে পাব।
ডেয়ারডেভিলদের খেলায় কিন্তু বেশ অবাক হয়েছি। গত বার অত ভাল খেলল ওরা, এ বারও যথেষ্ট ভাল দল ওদের। এরিক সিমন্স তো আমার দেখা সেরা কোচ। তা সত্ত্বেও লিগ টেবিলে ওদের এই হাল দেখে ভাল লাগছে না। আসলে ওই যে বললাম, এই ক্রিকেটে হার ও জিতের দূরত্ব এত কম যে, একটু পা পিছলে গেলেই সমস্যা। আশা করি, বুধবার ওদের দুশ্চিন্তা আমরা আরও বাড়িয়ে তুলব। এই ইস্পাতকঠিন দুনিয়ায় সহানুভুতির কোনও জায়গাই নেই। |