বাংলা ছবিতে আবার রাখী
বিজলিবালার মুক্তি
ছর সত্তরের বিজলিবালা নিঃসন্তান। তিরিশ বছরের বিধবা। সংস্কার আচ্ছন্ন মানুষটির সঙ্গী পুজোআচ্চা। তবে সংসারে তিনি একা নন। ছায়াসঙ্গী পদ্ম আর আর গোটা পাড়া নিয়ে তাঁর পরিবার। এ হেন বিজলিবালার বাড়িতে ভাড়াটে হয়ে আসে এক দম্পতি জ্যোতি ও হাসি। বিজলিবালার একটাই প্রশ্ন, কী জাত? বামুন জেনে নিশ্চিন্ত হয়ে তিনি ভাড়া দেন। ক্রমে বিজলিবালার জীবনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায় এই দম্পতিও। অসুস্থ হওয়ায় হাসিকেই দেন লক্ষ্মীর পাঁচালি পড়ার গুরুদায়িত্ব। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন। বিজলিবালার বাড়ির নীচ থেকে শুরু করে ঘরের চারপাশে ঘটে যায় কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা। একটি চিঠি থেকে তিনি জানতে পারেন হাসির নাম আসলে হাসিনা বানু। তাঁর মনে হয় তাঁকে ঠকানো হয়েছে। ভট্টাচার্য বাড়ির বিধবা কিনা এক মুসলিম মেয়েকে দিয়ে পাঁচালি পড়িয়েছেন। এর পর শুরু হয় বিজলিবালার মুক্তির লড়াই। ভেতরের অন্ধকারের সঙ্গে আলোকিত সত্তার। মতি নন্দীর লেখা অবলম্বনে গৌতম হালদারের নতুন ছবি ‘বিজলিবালার মুক্তি’। আট বছর আগে প্রকাশিত হয় দেশ পত্রিকায়, তখনই সাড়া ফেলেছিল এটি। পরে আনন্দ থেকে বই হিসেবে বেরোলে শিল্পী গণেশ পাইন আঁকেন তার প্রচ্ছদ।গৌতমের কথায়, ‘বিজলিবালা’রা আজও প্রাসঙ্গিক। ‘আধুনিকতার ফাঁক গলে এখনও মানুষের মনে বাসা বাঁধে সংস্কার। বিজলিবালার মুক্তি যেন সেটাকেই নির্দেশ করে।’ বাংলা ছবিতে বহু দিন পর দেখা যাবে রাখী গুলজারকে।
‘বিজলিবালার চরিত্রটা পড়েই রাখীর কথা ভেবেছিলাম। মুশকিল ছিল ওঁকে রাজি করানো। চলচ্চিত্র জগৎ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে উনি ফোনও ধরেন না। ঘটনাচক্রে ওঁর সঙ্গে দেখা হয়। গল্পটা পড়ে মুগ্ধ হন এবং নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন। পরিচালক হিসেবে আমার মনে হয় এটা ওঁর জীবনের অন্যতম সেরা কাজ।’ এ ছবির বিশেষ পাওনা উত্তর কলকাতার পাড়া কালচার। এ যুগেও গোটা পাড়া নিয়ে যে একটা পরিবার হতে পারে, সে স্বাদ ছবির পরতে পরতে। রয়েছে অভীক মুখোপাধ্যায়ের ক্যামেরা, অর্ঘ্যকমল মিত্রের সম্পাদনা, গৌতম ও বাবু সোমের মিউজিক। ছবির কাজ শেষ। মুক্তি মে মাসে।

বহুরূপী ৬৫
৬৫ বছর। এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বাংলা নাট্যমঞ্চ পেল একের পর এক অবিস্মরণীয় প্রযোজনা। ‘বহুরূপী’র হাত ধরে। ১৯৪৮ থেকে ২০১৩। মহর্ষি মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের অনুপ্রেরণায় এবং শম্ভু মিত্রের পরিচালনায় ‘বহুরূপী’ ডালপালা মেলে প্রবীণ হয়েছে। তবে বয়সে, মননে নয়। ৬৫ পূর্তি উপলক্ষে এ বার তারা মঞ্চস্থ করছে ‘আত্মঘাতী’, ১ মে অ্যাকাডেমি মঞ্চে (সঙ্গের ছবি)। এটি জঙ্গলমহলের কাহিনি। শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র, কুমার রায়, তারাপদ মুখোপাধ্যায়ের পরে ভাল নাট্যের সন্ধানে ‘বহুরূপী’র এই পরিক্রমাও কি মোড় নেবে অন্য দিকে? অরূপশঙ্কর মৈত্র রচিত এই নাটকের পরিচালক দেবেশ রায়চৌধুরী। ১-৫ মে, অ্যাকাডেমি মঞ্চেই বহুরূপী-র নাট্যোৎসব। এই নাট্যদলের আমন্ত্রণে কলকাতার বাইরের বিভিন্ন দলও মঞ্চস্থ করবে ভাল নাটক। বহুরূপী-র ‘আত্মঘাতী’ ছাড়া থাকছে ‘চৈতন্য’, ‘দীপদণ্ড’ এবং ‘রাজার খোঁজে’।

বসন্ত-যামিনী
বনে জঙ্গলে অনেক ফুলই ফোটে বাবা, সেই ফুল কোনো রসিকের নজরে পড়লে তিনি তাঁর মতো করে ঘর সাজান বা ভগবানকে উৎসর্গ করেন। কিন্তু নজরে না পড়লে ফুল যেখানে ফোটে সেখানেই ঝরে পড়ে। তবু ফুল ফোটা কিন্তু মিথ্যা নয়।’ এক সাক্ষাৎকারপ্রার্থীকে বলেছিলেন বসন্ত জানা। বছর কয়েক আগে যামিনী রায়ের শিষ্য এই শিল্পীর কাজ নিয়ে বিতর্ক ওঠে। রহস্য ঘনীভূত হয় তাঁর আঁকা ছবির সঙ্গে যামিনী রায়ের স্বাক্ষরিত বেশ কিছু ছবির আশ্চর্য মিল নিয়ে। উপরন্তু অতীশ পালের সৌজন্যে পাওয়া গিয়েছিল মেদিনীপুরের এগরা-বাসী শিল্পীকে লেখা যামিনী রায়ের প্রায় সাড়ে তিনশো চিঠি। তাঁকে নিয়ে বিতর্কে উত্তাল হয়েছিল নাগরিক শিল্পীসমাজ। তাঁকে নিয়ে তথ্যচিত্রও তৈরি হয়। এ বার সেই শিল্পীকে নিয়ে জীবন-উপন্যাস লিখেছেন মানিক ফকির: বসন্ত-যামিনী (কলকাতা প্রকাশন)। যামিনী রায়ের ১২৫ বছরে অন্য রকম প্রাপ্তি, সন্দেহ নেই।

অর্থবিশ্লেষণ
গোটা দুনিয়ায় অর্থনীতিবিদদের মধ্যে বাঙালির সংখ্যা বিস্ময়কর রকম বেশি। কেন, আপাতত সেই ব্যাখ্যায় ঢোকার প্রয়োজন নেই। কিন্তু যত বাঙালি অর্থশাস্ত্র চর্চা করেন, সেই তুলনায় বাংলায় অর্থনীতি বিষয়ক লেখা কার্যত নেই। সেই অভাব পূরণের পথে গত বৃহস্পতিবার একটি পদক্ষেপ করল ‘সোসাইটি ফর ইকনমিক রিসার্চ ইন বেঙ্গলি’। তাদের ষাণ্মাসিক গবেষণাপত্র ‘অর্থবিশ্লেষণ’-এর প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হল। পেশাদারি গবেষণা পত্রিকা যেমন হওয়া উচিত, অর্থবিশ্লেষণ তেমনই হবে বলে সম্পাদকমণ্ডলীর আশা। প্রথম সংখ্যায় প্রকাশিত প্রবন্ধগুলিতে গণিত, পরিসংখ্যানের ব্যবহার প্রচুর। এই জাতীয় প্রবন্ধ বাংলায় প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত করলেন কেন? সম্পাদকরা জানিয়েছেন, সমকালীন অর্থনৈতিক গবেষণার প্রাসঙ্গিকতা এবং অভিমুখ সম্বন্ধে মানুষকে অবহিত করা তাঁদের উদ্দেশ্য। ভারত ও পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক নীতির পর্যালোচনা যেমন থাকবে, তেমনই থাকবে উন্নয়নের অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক লেখাও।

নেপথ্যের নায়ক
শোনা যায়, ‘পথের পাঁচালী’র প্রথম শট নেওয়ার সময় ‘কাট’ বলতে ভুলে গিয়েছিলেন সত্যজিৎ, খেয়াল করিয়ে দিয়েছিলেন বংশী চন্দ্রগুপ্ত। তাঁর মতো শিল্পনির্দেশক বা সুব্রত মিত্রের মতো সিনেমাটোগ্রাফার না থাকলে সত্যজিৎ সে ছবি নিয়ে বিশ্ব জয় করতে পারতেন কি! পরিচালকের পাশাপাশি ছবির এ রকম আরও নানান নেপথ্যশিল্পীর কথা কতটুকুই-বা মনে রাখি আমরা? এঁদের নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্রের উৎসব করছে নন্দন, ভারতীয় সিনেমার শতবর্ষে শ্রদ্ধার্ঘ হিসেবে। ‘সেলুলয়েড লাইভস’: ২৯ এপ্রিল থেকে ২ মে। ২ মে সত্যজিতের জন্মদিন বলে ওই দিন তাঁর ‘মহানগর’ (’৬৩) দেখানোরও আয়োজন নন্দনে, ছবিটির মুক্তির পঞ্চাশ বছর উপলক্ষে। অন্য দিকে সিনে সেন্ট্রালের উদ্যোগে নন্দনেই হিচককের ছবির উৎসব, ২৯-৩০ এপ্রিল। দেখানো হচ্ছে মার্ডার, নর্থ বাই নর্থ ওয়েস্ট, ব্ল্যাক মেল, দ্য ম্যান হু নিউ টু মাচ।

নতুন গান
বছর তেইশ আগের কথা। মান্না দে নিজেই তৈরি করে ফেললেন ক্যাসেট কোম্পানি ‘প্যারামাউন্ট’। ১৯৯৫-এ প্রকাশিত হল মেয়ে সুমিতাকে নিয়ে ‘বাবা-মেয়ের গান’। কথা পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুর সুপর্ণকান্তি ঘোষের। আর এ বার প্রয়াত স্ত্রী সুলোচনার স্মৃতির উদ্দেশে বহু দিন পরে গান রেকর্ড করছেন মান্না দে। ১ মে পা দেবেন ৯২তে। এখনও গানে গানেই জীবন কাটে তাঁর। ঘনিষ্ঠ শিল্পী ও ভক্ত অশোক ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, ‘গানের কথার ব্যাপারে ভীষণ খুঁতখুঁতে। পছন্দ না হলে গান করেন না। অনেক গীতিকার গান নিয়ে হাজির হলে বাছাই করে গান ঠিক করেন। বর্তমানে একমাত্র দেবপ্রসাদ চক্রবর্তীর কথাতেই বেশিসংখ্যক গান করছেন।” সেই দেবপ্রসাদ চক্রবর্তী এ বারও গান লিখেছেন মান্না দে-র জন্য। সুলোচনার স্মৃতিতে লেখা চারটি গান ‘জানি, জানি আবার দেখা হবে’, ‘এই সেই ঘর’, ‘এমনও হতে পারে’ আর ‘তোমার জন্য না-মেলা হিসাব’ প্রকাশিত হতে চলেছে আশা অডিয়ো-র একটি নতুন অ্যালবামে। কফিহাউসের সেই আড্ডাটার শিল্পী এখন বেঙ্গালুরু-বাসী হলেও এ ভাবেই ফিরছেন এ শহরে, নিজের নতুন গানের জন্মতিথি উপলক্ষে।

কোমল গান্ধার
যদিও ‘কোমল গান্ধার’ মুক্তির (’৬১) পর পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেছে, দেরিতে হলেও নর্থ ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটি ছবিটি নিয়ে তাদের মুখপত্র চিত্রভাষ-এর (সম্পা: জ্যোতিপ্রকাশ মিত্র মলয়রঞ্জন মুখোপাধ্যায়) বিশেষ সংখ্যা বের করল: ‘ঋত্বিক ঘটক ও কোমল গান্ধার’। গোটা চিত্রনাট্যের সঙ্গে ছাপা হয়েছে খসড়াটিও, যাতে মূল ছবির সঙ্গে খসড়ার তফাতটা বোঝা যায়। রয়েছে ছবিটির দুর্লভ কিছু স্থিরচিত্র এবং বুকলেট যাতে ঠাঁই পেয়েছে কাহিনি ও গান। ছবি নিয়ে ঋত্বিকের নিজের লেখার সঙ্গে সে সময়ের সংবাদপত্রের সমালোচনা, এবং ধ্রুব গুপ্ত ও ডেরেক ম্যালকমের আলোচনা, সঙ্গীত পরিচালক জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্রের সঙ্গে শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথোপকথন এবং লোকসঙ্গীত নিয়ে হেমাঙ্গ বিশ্বাসের রচনা। আছে ছবিটির দুই বিশিষ্ট চরিত্রের শিল্পী অবনীশ বন্দ্যোপাধ্যায় ও চিত্রা সেনের স্মৃতিচারণ।

আমাদের বাড়ি

ছন্দা সেনের ঠাকুরদা ছিলেন বীজগণিত-খ্যাত কালীপদ বসু ওঁদের উত্তর কলকাতার বাড়িটি ছিল পরাধীন যুগে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ঘাঁটি। আর ঠাকুমা মেঘমালা বসু বিপ্লবী মানবেন্দ্র রায়কে পুত্রবৎ স্নেহ করতেন। ত্রিদিবেশ আর কনকপ্রভার কন্যা ছন্দার স্মৃতিচিত্রণ আমাদের বাড়ি (কে পি বসু পাবলিশিং কোম্পানি) এক দিকে যেমন সামাজিক ইতিহাস, তেমন অনেকটাই যৌথ স্মৃতির ভাণ্ডার, হারিয়ে যাওয়া সময়ের উদ্ধার। বেশ কিছু পারিবারিক ছবি আর বংশলতিকাও রয়েছে সঙ্গে। এক নিশ্বাসে বইটি পড়ে ফেলা যায় লেখিকার স্বাদু গদ্যের টানে। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কতকগুলি নিভৃত স্মৃতিই যেন এক নৈর্ব্যক্তিক সামাজিক ইতিবৃত্ত তৈরি করে দেয়। গদ্য শুরুর আগে প্রারম্ভিক পদ্যটিও বেশ: ‘স্মৃতির ভারে দাঁড়িয়ে থাকা একলা বাড়ির কথা,/ বলতে গিয়ে বুকের ভেতর কিসের যেন ব্যথা।’

নাট্যজীবন
‘চিরদিন আমরা খেটে খেয়েছি, পরের মেরে তো খাই নাই, ওটা আপনাদেরই দস্তুর, আজ বসে বসে আপনার টাকা খেয়ে আপনার কাছে টাকা নিতে আমার বড্ড লজ্জা করে। টাকাটা দেবেন কত্তা?’ বড় প্রাসঙ্গিক এক সময়ে বাঞ্ছারাম ফের মোক্ষম এই কথাগুলি বলবে শহরের মঞ্চে। ৫ মে মধুসূদন মঞ্চে মনোজ মিত্রের সাড়া জাগানো নাটক ‘সাজানো বাগান’ আবার। উপলক্ষ, নাট্যকারের ৭৫ বছর। নাটকের মধ্যেই জীবন কাটান মনোজ মিত্র। সেই নাট্যজীবনের প্রতি শ্রদ্ধায় তাঁর লেখা নাটক অভিনয় ও পাঠের উৎসব আয়োজন করেছে তাঁরই প্রতিষ্ঠিত নাট্যদল ‘সুন্দরম’। নানা মঞ্চে ‘সবার মনোজ’ উদ্যাপিত হবেন সপ্তাহজুড়ে, প্রকাশিত হবে তাঁকে নিয়ে স্মারক গ্রন্থও।

পেন্টার্স ৮০
সংস্থার প্রথম প্রদর্শনীটি হয়েছিল দিল্লির ললিতকলা আকাদেমিতে। দেশের নানা শহরে প্রদর্শনী হলেও প্রতি বছর কলকাতায় হয় পেন্টার্স ৮০-র বার্ষিক অনুষ্ঠান। ৪১ তম প্রদর্শনীটি চলছে আকাদেমি অব ফাইন আর্টস-এর নর্থ গ্যালারিতে। ছবির সঙ্গে আছে ইনস্টলেশন। প্রবীণ শিল্পীদের পাশাপাশি এ প্রজন্মের শিল্পীদের কাজ। চলবে ১ মে অবধি। প্রতিদিন বিকেল ৩-৮টা। অন্য দিকে ৬২ বালিগঞ্জ প্লেসে চলছে আর্ট কলেজের প্রাক্তনী অলয় ঘোষালের ছবির প্রদর্শনী। বিষয় নেচার। ইন্টিরিয়র ডিজাইনার ঊর্বশী বসু জানালেন, ঘরের সাজের জন্য অনেকেই ছবির খোঁজ করেন। তাই এ বার বেছে নিয়েছি নেচার। ১ মে অবধি, রোজ ২.৩০-৭টা।

লিটল ফ্লাওয়ার
মঞ্চে ওঠা তো দূরে থাক, সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে কোনও অনুষ্ঠানে আমাকে কেউ কখনও আমন্ত্রণ করেনি। কুড়ি বছর হল সত্যজিৎ চলে গিয়েছেন। এই দু’দশকে তাঁকে নিয়ে কত আয়োজন। কিন্তু আমি সেখানে ব্রাত্য।” সত্যজিৎ রায়ের ৯২তম জন্মদিনের আগে কথাগুলো বলতে গিয়ে রীতিমতো অভিমানী মিস শেফালি। অথচ, নামটার সঙ্গে যে আবহ জড়িয়ে আজও, সেখানে ষাটের কলকাতার ফিরপো-র সন্ধে, মোহময় হাওয়াইয়ান এবং সত্যজিৎ রায়। ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ আর ‘সীমাবদ্ধ’ সত্যজিতের এই দুটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন শেফালিদেবী। প্রথমটিতে লতিকা চরিত্রে আর শেষেরটিতে নৃত্যশিল্পী হিসেবে। তবু কেন এই অবহেলা? তবে সত্যজিৎকে ঘিরে একটি আয়োজনে এ বার ‘গৌরবময় উপস্থিতি’ ঘটতে চলেছে শেফালির। একাদশ সত্যজিৎ-ক্যুইজে এ বার বিশেষ আমন্ত্রিত তিনি। ৪ মে নন্দনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এখন সত্যজিৎ পত্রিকা (সম্পা: সোমনাথ রায়) আয়োজিত সেই ক্যুইজের সঙ্গে থাকছে ফেলুদার মহিলা উদাসীনতা নিয়ে একটি সেমিনার। সংবর্ধিত হবেন ‘মণিহারা’র কণিকা মজুমদারও। এই আমন্ত্রণে কেমন লাগছে? শিশুর মতো হেসে ‘লিটল ফ্লাওয়ার’ বললেন, “কী যে আনন্দ হচ্ছে, বলে বোঝাতে পারব না।”


বাউল
বাউল গানকে তিনি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন দেশবিদেশে। বব ডিলানের সঙ্গে এক মঞ্চে অনুষ্ঠান করেছিলেন। বিদেশের বহু সম্মান তাঁর ঝুলিতে। ৭৩ বছর বয়সে সম্প্রতি চলে গেলেন সেই বাউল প্রহ্লাদ ব্রহ্মচারী। অধুনা বাংলাদেশের খুলনার দেবহাটায় ১৯৪০-এ জন্ম। গানের শিক্ষা ছোটবেলাতেই। সে শিক্ষায় শুধু বাউল গান ছিল না, ছিল কীর্তনও। রতনেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের কাছে কীর্তন এবং নবনীদাস বাউলের কাছে শেখেন বাউল গান। প্রথম অনুষ্ঠানে আত্মপ্রকাশ ১৯৫৫-য়, বঙ্গ সংস্কৃতি সম্মেলনে। কিন্তু পাখির চোখ ছিল আরও বিস্তারের দিকে। ১৯৬৮-তে বুলগেরিয়ায় নবম আন্তর্জাতিক ছাত্র ও যুব উৎসবে প্রথম স্থান অধিকার করেন। বিদেশের মাটিতে এর পরে আর তাঁকে ফিরে তাকাতে হয়নি। আমেরিকা, ফ্রান্স, জাপান, রাশিয়া, ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ-সহ ঘুরে বেড়িয়েছেন পৃথিবীর নানা প্রান্তে। পেয়েছেন জাপান সরকারের ক্রস কালচারাল অ্যাওয়ার্ড। শুধু শিল্পী হিসেবে নয়, বাউল গানের শিক্ষক হিসেবেও প্রহ্লাদ ব্রহ্মচারী স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। শিকাগো ও বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়, আলি আকবর খান কলেজ অব মিউজিক, রবিশঙ্কর কলেজ অব মিউজিকের বিভিন্ন কর্মশালায় শিখিয়েছেন বাউল গান। কলকাতা থেকে তো বটেই, এমনকী অস্ট্রেলিয়া থেকেও প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বাউল গানের রেকর্ড। আকাশবাণী ও দূরদর্শনের নিয়মিত শিল্পী প্রহ্লাদ ব্রহ্মচারী শেষ জীবনে ভুগছিলেন অর্থকষ্টে। সেই সময় পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সহ-পথিকেরা। কিছু দিন আগে শহরের সহজিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে রাষ্ট্রপতির তহবিল থেকে পেয়েছিলেন আর্থিক অনুদান। উদ্যোগী হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শিল্পী চলে গেলেন, রয়ে গেল তাঁর গান। শহর উদ্যোগী হোক সেগুলি সংরক্ষণে, নতুন করে প্রকাশে।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.