নিতান্তই সাধারণ পরিবারের মেয়ে সে। বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে চাকরির খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। হঠাৎই সুযোগ এল স্বপ্ন সুন্দরি হয়ে ওঠার। তবে নিজের জন্য নয়। ছোটদের জন্য।
পরিবারের দায় দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে সে বেছে নিয়েছিল ‘ডিজনি প্রিন্সেস’-এর চরিত্র ফুটিয়ে তোলার কাজ। ছোটদের চিন্তায়, মননে যে সব কাল্পনিক চরিত্রের অবাধ বিচরণ সেই সব চরিত্রকে বাস্তব রূপ দেওয়ার হাতছানিই তাকে নিয়ে এসেছিল ‘ডিজনি ল্যান্ড’-এ।
তবে এখন সে অবসরপ্রাপ্ত। বয়স তিরিশ ছুঁই ছুঁই। দীর্ঘ ন’-দশ বছর সেই ছিল ‘ডিজনি ল্যান্ড’-এর স্নো-হোয়াইট। কিন্তু এখন সে শুধুই ডাবলিন। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি খুলে বললেন ‘ডিজনি ল্যান্ড’-এ কাটানো বছরগুলির অমূল্য অভিজ্ঞতার কথা।
ডাবলিন জানালেন, স্নো-হোয়াইট হয়ে ওঠার লড়াই সহজ ছিল না। অডিশন দিতে এসে কঠিন এক পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁকে। প্রথমেই দেখা হয়েছিল ঠিক কোন ‘ডিজনি’ চরিত্রের সঙ্গে তাঁর চেহারার সব চেয়ে বেশি মিল। এর পর নেওয়া হয়েছিল নাচ-গান, অভিনয়ে তাঁর পারদর্শীতার পরীক্ষা। ‘ডিজনি’ চরিত্র গুলি সম্পর্কে আদউ কতটা খবরাখবর রাখেন ডাবলিন তা যাচাই করে নিতেই নেওয়া হয়েছিল ইন্টারভিউ। ঘণ্টা খানেক চলেছিল সেই প্রশ্নোত্তর পালা। |
ডাবলিন এও জানালেন, অডিশন দিতে আসার ঝকমারিও কিছু কম ছিল না। অডিশনের শর্তানুযায়ী ‘ডিজনি প্রিন্সেস’দের উচ্চতা হতে হবে সাড়ে ৫ ফুটের মধ্যে, বয়স ২৩ পেরোলে চলবে না। যদিও টিঙ্কারবেল, অ্যালিসের মতো পরীদের ক্ষেত্রে একটু ছোটখাটো মেয়েরাই পেয়ে থাকেন অগ্রাধিকার। নির্দিষ্ট কোনও চরিত্রের জন্য বাছাই হওয়ার পর টানা ৫ দিন চলে প্রশিক্ষণ পর্ব।
এক বার ‘ডিজনি প্রিন্সেস’ হয়ে গেলেও নিস্তার নেই মোটেই। ‘ডিজনি ল্যান্ডে’র কড়া নিয়ম কানুন হাত পা বেঁধে দেয় চরিত্রাভিনেতাদের। যত ক্ষণ ‘ডিজনি ল্যান্ড’ চত্বরে থাকেন, ততক্ষণ চরিত্রের মধ্যেই ঢুকে থাকতে হয় তাঁদের। মেলে না বসবার অনুমতিও। খাওয়া নেই, দাওয়া নেই সর্বদাই হাসি মুখে দর্শকদের মনোরঞ্জন করে যেতে হয়।
শরীরের ক্লান্তি ঢাকতে মুখে চাপিয়ে রাখতে হয় চড়া মেক-আপ। দিনভর খাটনির পারিশ্রমিকও বেশি কিছু নয়। প্রথম প্রথম এই কাজের জন্য দিনে সাড়ে তেরো ডলার পেতেন ডাবলিন। পড়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ষোলো ডলারে। তবুও কোনও আক্ষেপ নেই তাঁর। |