|
|
|
|
|
|
|
গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় চিত্রসম্ভার |
যামিনী রায় ১২৫ |
আমি জানি চিত্র দর্শনের যে-অভিজ্ঞতা থাকলে নিজের বিচারশক্তিকে কর্তৃত্বের সঙ্গে প্রচার করা যায়, আমাদের দেশে তার কোনো ভূমিকাই হয়নি। সুতরাং চিত্রসৃষ্টির গূঢ় তাৎপর্য বুঝতে পারে না বলেই মুরুব্বিয়ানা করে সমালোচকের আসন বিনা বিতর্কে অধিকার করে বসে। সেজন্য এদেশে আমাদের রচনা অনেক দিন পর্যন্ত অপরিচিত থাকবে। আমাদের পরিচয় জনতার বাইরে, তোমাদের নিভৃত অন্তরের মধ্যে।’’ বুদ্ধদেব বসুর ‘কবিতা’ পত্রিকায় ‘রবীন্দ্রনাথের ছবি’ শীর্ষক একটি লেখা লেখেন যামিনী রায়। মুকুল দে-র পরে তিনিই প্রথম যিনি তরুণের দৃষ্টিতে দেখেছিলেন রবীন্দ্রনাথের ছবিকে। আর সেই লেখা পড়ে আনন্দিত কবি চিঠি লিখেছিলেন যামিনী রায়কে। |
|
মৃত্যুর মাত্র কয়েক মাস আগে ২৫ মে ১৯৪১ তারিখের সেই চিঠিতেই উপরের কথাক’টি লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু আজ সাত দশক পেরিয়েও অবস্থার বদল ঘটেছে কি? আজও শিল্পীর পরিচয় যেন সেই জনতার বাইরেই। কে জানে হয়তো সেই কারণেই জনসাধারণের অর্থে চলা শিল্পচর্চার রাজ্য সরকারি প্রতিষ্ঠান চারুকলা পর্ষদে ধুলো মেখে অযত্নে পড়েছিল যামিনী রায়ের পঞ্চাশটিরও বেশি কাজ। তবে ইতিমধ্যে সময়ের নিয়মে যামিনী রায় ১২৫-এ পড়লেন। ধুলো মুছে যামিনী রায়ের ওই সংগ্রহ থেকে ৩০টি ছবি নিয়ে গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় শুরু হল এক প্রদর্শনী। প্রথম দিকের কাজ থেকে শুরু করে কালানুক্রমে সাজানো ছবির সেই প্রদর্শনীর সূচনা হল শনিবার, করলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। ছিলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। প্রদর্শনী চলবে ২৯ তারিখ পর্যন্ত। প্রদর্শনীর সমন্বয়কারী অশোক মল্লিক জানালেন, যামিনী রায়ের বিশিষ্ট বাঙালিয়ানাকে ধরতে ছবি টাঙানো হয়েছে সরাসরি দেওয়ালে নয়, চটের উপরে। রবীন্দ্রনাথ ও গাঁধী, বেশ কিছু নিসর্গ চিত্র এবং কয়েকটি প্রায় না-দেখা ছবি এই প্রদর্শনীতে আছে। আছে যামিনী রায়ের সেই সময়ের কাজও যখন তাঁর নিজস্ব শৈলীটি গড়ে ওঠেনি। তবে খুব দ্রুততার সঙ্গে যেহেতু নড়েচড়ে বসতে হয়েছে সেই জন্য এর কোনও ক্যাটালগ বা পুস্তিকা করা যায়নি, জানাচ্ছেন পর্ষদের এক সূত্র। ছবি প্রদর্শনী থেকে।
|
রতন থিয়াম |
“এ দেশে নাটকের আন্তর্জাতিক ফেস্টিভ্যাল হয় না। নাটক নিয়ে নিরীক্ষার যে ব্যাপকতা এখন বিশ্ব জুড়ে তার কতটা ভারতে সম্ভব?” এ শহরে এসে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি, রতন থিয়াম। বয়স ৬৫, কিন্তু আজও যেন ছটফটে তরুণ। বিশ্বাস করেন শিকড়ের থিয়েটারে। আর সেই বিশ্বাসেই মণিপুরে তাঁর কোরাস রেপার্টরি থিয়েটারের প্রযোজনায় কখনও বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লোকশিল্পের গভীরে চলে যান, অথবা অবলীলায় ঐতিহ্যের মার্শাল আর্টকে ব্যবহার করেন ভাস-এর নাটক ‘ঊরুভঙ্গম্’ প্রযোজনায়। এ হেন নাট্যব্যক্তিত্ব এসেছিলেন এ শহরে, ব্রাত্যজন আন্তর্জাতিক নাট্য আয়োজন ২০১৩-য়। এই উৎসবের উদ্বোধনী সন্ধ্যায় স্টার থিয়েটারে অভিনীত হল কোরাস রেপার্টরি থিয়েটারের প্রযোজনা ‘আসিবাগি এসেই’। হেনরিক ইবসেনের শেষ নাটক ‘হোয়েন উই ডেড অ্যাওয়েকেন’-অনুপ্রাণিত এই নাটকে বাস্তব-পরাবাস্তবের জগৎটাকে নতুন করে দেখতে চেয়েছেন রতন থিয়াম।
|
বিস্মৃত শিল্পী |
কংগ্রেস অধিবেশনে যোগ দিতে গাঁধীজি গিয়েছেন পূর্ববঙ্গে। নয় বছরের মধু গান শোনায় ‘পাঠশালে আর যাব না ভাই, প্রাণ কেঁদেছে মায়ের তরে’। মিষ্টি গলা শুনলেও ছেলেটিকে দেখা যাচ্ছে না। শেষমেশ তাকে তুলে দেওয়া হল টেবিলে! সেই ছেলেই সঙ্গীতশিল্পী সিদ্ধেশ্বর মুখোপাধ্যায়। ১৯১২-র দোলপূর্ণিমা তিথিতে জন্মেছিলেন বরিশালে। দেশভাগের পর কলকাতায় এসেও চলতে থাকে সঙ্গীতশিক্ষা। পরে ডাকবিভাগে চাকরি নিলেও সঙ্গীতচর্চায় ছেদ পড়েনি। মুজফফরপুরে আলাপ হয় কাজি নজরুলের সঙ্গে, হয়ে ওঠেন তাঁর বিশেষ স্নেহভাজন। সুর করেছেন বেশ কিছু বাংলা ছবিতে। এই পরিবারেরই ছেলে মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। শিল্পী-কন্যা কৃষ্ণা মজুমদার জানালেন, রবীন্দ্র-প্রয়াণের দিন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের আহ্বানে রেডিয়োতে বন্দে মাতরম্ গেয়েছিলেন সিদ্ধেশ্বর। নিঃশব্দে কেটে গেল শিল্পীর জন্মশতবর্ষ। সিদ্ধেশ্বর মুখোপাধ্যায় স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে স্মরণানুষ্ঠান ২৪ এপ্রিল, বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বাংলা আকাদেমিতে।
|
বই দিবস |
বিশ্ব বই দিবসের বঙ্গীয় উদযাপনের আয়োজন সম্পূর্ণ। পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড এ বারও বই দিবস উদযাপন করছে সংবর্ধনা দিয়ে। এ বার থাকছেন নারায়ণ দেবনাথ, অরুণ নাগ এবং শক্তিপদ রাজগুরু। বাংলা কমিকসের অপ্রতিরোধ্য শিল্পী, নিবিড় এক সম্পাদক এবং জনপ্রিয় এক লেখক নির্বাচনের বৈচিত্র চোখে পড়ার মতো। সেই সঙ্গে শেক্সপিয়রের জন্মদিন মনে রেখে নাট্যপাঠে দু’টি নাট্যদল ‘অন্য থিয়েটার’ ও ‘লেকটাউন-শ্রীভূমি সংসৃতি’। সহযোগী আয়োজক পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি দু’টি বইয়ের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করছে-- প্রথমটি অন্নদাশঙ্কর রায়ের প্রবন্ধ। ডি এম লাইব্রেরি থেকে প্রকাশিত বইটির এটি আকাদেমি-সংস্করণ। প্রকাশিত হচ্ছে স্বপন বসু সম্পাদিত সংবাদ-সাময়িকপত্রে উনিশ শতকের বাঙালি সমাজ-এর প্রথম খণ্ডের দ্বিতীয় সংস্করণ। সম্পাদক জানাচ্ছেন, আক্ষরিক অর্থেই এটি নতুন সংস্করণ। বহু নতুন কর্তিকা, ছবি ইত্যাদিতে যুক্ত হয়েছে প্রায় দেড়শো পৃষ্ঠা। আর এই সংযোজনের মুখ্য বিষয় উনিশ শতকের পুলিশি অত্যাচার। কিন্তু মুসলমান সমাজচিত্র নিয়ে বইটির তৃতীয় খণ্ডটি তো বহু কাল যন্ত্রস্থ? কবে প্রকাশিত হবে সেটি? সম্পাদক এ বিষয়ে অন্ধকারে।
|
আনন্দ-সংবাদ |
|
পাগলা দাশুকে কেমন দেখতে ছিল? সুকুমার রায় লিখেছেন, ‘তাহার চোখ দুটি গোল গোল, কান দুটা অনাবশ্যক রকমের বড়, মাথায় এক বস্তা ঝাঁকড়া চুল।’ সুকুমার আঁকেননি, পুত্র সত্যজিৎ তাঁর জীবনে পাগলা দাশুকে এঁকেছেন অন্তত বার পাঁচেক। শুধু তো পাগলা দাশু নয়, আবোল তাবোল, খাই খাই, বহুরূপী, হযবরল সুকুমার-সাহিত্যের শ্রেষ্ঠতম প্রকাশগুলির প্রায় সবকটিই সত্যজিৎ-সিগনেট যুগলবন্দির ফসল। যদিও দু-একটি ক্ষেত্রে সিগনেট-এর পরিকল্পনা সত্যজিতের মনঃপূত হয়নি, কিন্তু সামগ্রিক ভাবে সেই সিগনেট-সুকুমার বাংলা বইনির্মাণের ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে। উজ্জ্বলতা-সমেত সেই ইতিহাসকে সজীব বর্তমান করে তুলেছে ‘একটি আনন্দ প্রকাশনা’ সিগনেট প্রেস। অবিকল সেই সংস্করণগুলি ফিরে প্রকাশিত হচ্ছে। আগে প্রকাশিত হয়েছে হযবরল, আবোল তাবোল। এ বার পয়লা বৈশাখে প্রকাশিত হল খাই খাই, বহুরূপী আর সেই চিরচর্চিত পাগলা দাশু। ২৩ এপ্রিল বিশ্ব বই দিবসের ঠিক আগে সুখের সন্দেশ বইকী।
|
বারো হাত কাপড়ে |
বারো হাতের কাপড়টিই শিল্পী উৎপল ঘোষের ক্যানভাস। তার ওপরেই ওঁর ছবি আঁকা। কলকাতার সরকারি আর্ট কলেজের স্নাতক (১৯৮৬), পরের সাফল্য আমদাবাদের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইন থেকে। তাঁর অনুপ্রেরণা হুসেন, এস এইচ রাজা, চুঘতাই-এর মতো শিল্পীর কাজ। তসর বা চান্দেরি সিল্কের ওপর সরাসরি রঙের প্রয়োগ বা ভেজিটেবল ডাই দিয়ে বিবিধ সাম্প্রতিক চিত্রকল্প নিয়ে আইসিসিআর-এ আগামী শুক্রবার শুরু হচ্ছে তাঁর প্রদর্শনী, চলবে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত, ১১-৭টা।
|
বিশ্বের দরবারে |
কে না ছিলেন সেখানে! ফরাসি দার্শনিক থেকে লেখক, চিন্তাবিদ্, এমনকী লিলিয়ান থুরাম-এর মতো বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলারও হাজির। মহা ধুমধাম করেই প্রথম আন্তর্জাতিক বইমেলা ‘সালোঁ দ্যু লিভ্র্’ হল মরিশাস-এ, উপলক্ষ সে দেশের ৪৫তম স্বাধীনতা দিবস। লিলিয়ান এসেছিলেন বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে তাঁর বই মাই ব্ল্যাক স্টার্স প্রকাশের জন্যে। তবে বঙ্গজনের গৌরবের কথা ওই বইমেলায় উদ্বোধনী বক্তৃতা দিলেন চিন্ময় গুহ। আরও দু’টি আলোচনারও অন্যতম বক্তা ছিলেন তিনি, এর মধ্যে একটি ‘বইয়ের ভবিষ্যৎ’ নিয়ে। ফরাসিবিদ্, প্রাবন্ধিক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষক, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য হিসেবে চিন্ময়কে চিনি আমরা, এ বারে তিনি বিশিষ্ট চিন্তাবিদ্দের মন জয় করলেন তাঁর বক্তৃতায়।
|
আন্তর্জাতিক |
|
এ শহরের আলোকচিত্রী অতনু পাল আপনমনে ছবি তুলে চলেছেন কয়েক দশক ধরে। হাতেকলমে নাকি হাতে-ক্যামেরায় তৈরি করেছেন অজস্র ছাত্রছাত্রী। বহু আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সম্মানিত হয়েছেন। স্থান পেয়েছেন পপুলার ফোটোগ্রাফি এবং ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক-এর ‘লাইফ ইন কালার’ বইতে। কানাডাতে ২০১১-য় একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় গ্র্যান্ড প্রাইজ পান ‘থার্ড আই’-এর কর্ণধার অতনু। সেই সূত্রেই ২ এপ্রিল কিউবেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে ওঁর ২৯টি ছবি নিয়ে প্রথম একক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। চলবে ২৬ পর্যন্ত।
|
শ্রদ্ধার্ঘ্য |
একদা অতীতের বাংলা ছবির ভিত্তিই হত খাঁটি বাংলা উপন্যাস। নীতীন বসু ছিলেন তেমনই এক চলচ্চিত্রকার। সত্যজিৎ রায়ের মনে হয়েছিল ‘উপন্যাসের প্রতি আনুগত্যই হলিউডকে বেশি কাছে আসতে দেয়নি।’ আর, তাঁর মতে ‘বোম্বাই গিয়ে ভালো ছবি এবং বাঙলা ছবি করার দাবী যিনি করতে পারেন তিনি হলেন নীতীন বোস।’ ভারতীয় সিনেমার শতবর্ষে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে নন্দন তাঁরই একগুচ্ছ ছবি দেখিয়ে: ২৬-২৮ এপ্রিল। অন্য দিকে নন্দনেই হাঙ্গেরির একগুচ্ছ সাম্প্রতিক ছবি নিয়ে উৎসব করছে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ, ২৬-২৮ এপ্রিল। ফোরাম ফর ফিল্ম স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যালায়েড আর্টস আর নেহরু চিলড্রেনস মিউজিয়ম-এর উদ্যোগে ২২ এপ্রিল সন্ধে ৬টায় বলবেন বীরেন দাশশর্মা, বিষয়: পাওয়ার অব মিডিয়া ডিসেপশন।
|
মঞ্চই জীবন |
বাংলা থিয়েটারের কীর্তিময়ী অভিনেত্রীদের মধ্যে মায়া ঘোষ একেবারেই প্রথম সারিতে। নাট্যকারের সন্ধানে ছ’টি চরিত্র, মঞ্জরী আমের মঞ্জরী, ললিতা, রাজরক্ত, চাকভাঙা মধু, বেড়া, বেলা অবেলার গল্প, বা এ রকম আরও নাটকে তাঁর অভিনয় চিরস্মরণীয়। তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তাঁরই এক জীবনচিত্র রচনা করেছেন রুশতী সেন মায়া ঘোষ: মঞ্চই জীবন (থীমা)। এতে তাঁর অভিনয়ের অপরূপ সিদ্ধির আড়ালে লুকনো জীবনযন্ত্রণা ও অবিরত লড়াইয়ের কথাও উঠে এসেছে। ২৭ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ছ’টায় থীমা-য় (৪৬ সতীশ মুখার্জি রোড) এ বইয়ের প্রকাশ উপলক্ষে মায়া ঘোষ নাটকপাঠাভিনয় পরিবেশন করবেন এবং রুশতী সেন ও শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায়ও বসবেন।
|
মধ্যিখানে চর |
প্রথম ছবি ‘টুসুকথা’ থেকেই সৌরভ ষড়ঙ্গী-র স্বাক্ষর চেনা গিয়েছিল। তাঁর ছবিটি আমাদের শিকড় চেনানোয় আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছিল বলে। আজ আবার সৌরভ তাঁর সিনেমা-পরিক্রমায় আমাদের শিকড় অবলুপ্তির মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন। নতুন ছবি ‘...মধ্যিখানে চর’-এ সেই সব বেঘর মানুষজনের কথা উঠে এসেছে, যাঁদের ঠাঁই হয়েছে চর-এ, তাঁরা যেন আর মানুষ নন প্রেতচ্ছায়া। ‘নদী নিয়ে সব রোমান্টিসিজম ঘুচে গিয়েছিল যখন দেখেছি আমার চোখের সামনে আস্তে আস্তে একটা গোটা গ্রাম তার গাছপালা রাস্তাঘাট বাড়িঘরদোর নিয়ে নদীর জলের তলায় চলে যাচ্ছিল... সেখানে রুবেল-এর মতো স্কুলে-পড়া একটি মেধাবী ছেলেকে শুধু চরে ঠাঁই-ই নিতে হয় না, রুটি-রুজির জন্যে চালের চোরাচালানেও নামতে হয়।’ বলছিলেন সৌরভ, ওই বাস্তব-ই ক্যামেরায় তুলেছেন তিনি। যে গঙ্গা বহতা তাকে সীমান্তরেখা বানিয়ে ফেলা হয়েছে, সে নদীর ওপর ফরাক্কা বাঁধ দিয়ে তাকে এতটাই ভয়ঙ্কর করে তোলা হয়েছে যে সে বছরের পর বছর গ্রাম খেয়ে ফেলছে। ‘উন্নয়নের এই ধরনটা নিয়েই আমার প্রশ্ন, প্রশ্ন রিভার ম্যানেজমেন্ট নিয়েও।’ ছবিটি দেখা যাবে ম্যাক্সমুলার ভবনে, ২৪ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ছ’টায়। ছবিটির সূত্রে ইতিমধ্যেই সৌরভ সেরা পরিচালকের শিরোপা পেয়েছেন চিনে, ইন্দোনেশিয়ায় সেরা-র সম্মান ছবিটির, দুবাইতেও বিশেষ স্বীকৃতি, আর ভারতে রজত কমল।
|
|
|
|
|
বিস্ময়কর |
পরিমাণকে যেন ‘এলিট’ বাঙালি কিছুটা উপেক্ষাই করে। রবীন্দ্রনাথের কথা আলাদা, তিনি তো ঠাকুর, কিন্তু সাধারণ ভাবে বাঙালি লেখক খুব বেশি লিখলে তাঁর গ্রহণযোগ্যতায় যেন একটা ‘কাঁটা’ লেগে থাকে। কিন্তু যদি জিগ্যেস করা হয় কটা লেখা পড়েছেন তাঁর? উত্তরে থাকো মৌন। ঠিক তেমনই একটা ‘কাঁটা’ বিঁধেই থেকেছে বরাবর, ‘কাঁটা’ সিরিজের স্রষ্টা নারায়ণ সান্যালের সাহিত্য জীবনে। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, সে পরিচয় চিহ্ন রেখে যায় তাঁর ভারতীয় ভাস্কর্য আর স্থাপত্য নিয়ে রচনায়। কিন্তু তাঁর রচনাসম্ভারে যে ১৪১টি বই তার বিষয়-বৈচিত্র বিস্ময়কর। সামাজিক উপন্যাস ‘সত্যকাম’, ‘নীলিমায় নীল’, ‘প্যারাবোলা স্যার’-এর পাশাপাশি বিজ্ঞান-আশ্রয়ী ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘না-মানুষী বিশ্বকোষ’। গোয়েন্দা কাহিনি কাঁটা সিরিজের পাশে গবেষণাধর্মী ‘নেতাজি রহস্য সন্ধানে’। আবার ‘অগ্নিকন্যা মমতা’-ও। ছোটদের জন্যও লিখেছেন অনেক বই, সেই শিশু-কিশোর সাহিত্যে তাঁর মৌলিক ভাবনা জীবজন্তুকে ‘না-মানুষ’ বলা। তাঁর মতে জীবজন্তুরা অমানুষ নয়, না-মানুষ। তাদের নিয়ে লেখা ‘গজমুক্তা’, ‘তিমি-তিমিঙ্গিল’, ‘না-মানুষের কাহিনী’। পাশাপাশি এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে তাঁর ‘কারুতীর্থ কলিঙ্গ’, ‘অজন্তা অপরূপা’, ‘ভারতীয় ভাস্কর্যে মিথুন’ কিংবা ‘রোদ্যাঁ’। দীর্ঘ অবহেলার পরে তাঁকে নিয়ে, তাঁর পাণ্ডুলিপি, আঁকা ছবি ইত্যাদি সংরক্ষণে উদ্যোগী হয়েছে ‘শুভ সম্পর্ক’। ‘বাংলা নাটক ডট কম’-এর সহযোগিতায় ২৭ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ছ’টায় বৈতানিক-এ লেখকের ৮৯তম জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশিত হবে একটি স্মারক গ্রন্থ। দেখানো হবে সৌমিত্র তালুকদার পরিচালিত জীবনীচিত্র ‘চোখের দেখা প্রাণের কথা’। প্রকাশিত হবে লেখককন্যা মৌ সান্যালের শ্যামাসঙ্গীতের অ্যালবামও। |
|
|
|
|
|
|