লুকোনোর কিছু নেই, বিজেপি-র টুজি-রাজনীতিতে কড়া মনমোহন
তাঁর দফতরের মাধ্যমে নয়। কিংবা দলের কোনও নেতাকে দিয়েও নয়। বিজেপি-র আক্রমণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজেই জবাব দিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। দৃঢ়তার সঙ্গে জানালেন টুজি দুর্নীতি নিয়ে তাঁর লুকোনোর কিছু নেই।
যশবন্ত সিন্হা গত কাল তাঁকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি প্রশ্ন তুলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী কেন টুজি দুর্নীতি নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-তে সাক্ষ্য দিচ্ছেন না। লোকসভা ভোটের আগে টুজি বিতর্কে প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলাই যে তাদের লক্ষ্য, গত কাল বিজেপি সূত্রেই তা স্বীকার করা হয়েছিল। বিরোধীদের এই রাজনৈতিক চালের জবাব আজ যথাসম্ভব আক্রমণাত্মক মেজাজেই দিয়েছেন মনমোহন।
তাঁর বক্তব্য, “গোড়া থেকেই বলেছি এ ব্যাপারে সরকার বা আমার লুকনোর কিছু নেই। সরকারের কাছে এই সংক্রান্ত যা কাগজপত্র ছিল তা আগেই জেপিসি-র কাছে পেশ করা হয়েছে। এর পরেও যদি কিছু নথিপত্র প্রয়োজন হয় বা কাউকে জেরা করার প্রয়োজন হয় জেপিসি-ই তা স্থির করবে।” এই জবাবের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এটাও প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে তিনি আর জেপিসি-র সামনে উপস্থিত হবেন না।
জেপিসি-র চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস নেতা পি সি চাকোও আজ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে কমিটিতে সাক্ষ্য দিতে ডাকা হবে কি না, তা সংখ্যাগরিষ্ঠ মত নিয়ে স্থির করা হবে।” জেপিসি-তে সরকার পক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায়, সেই সুযোগটাই নিতে চাইছেন চাকোরা। শুধু তাই নয়, চাকো আজ এ-ও বলেন যে, “টুজি প্রশ্নে তদন্তের চেয়ে রাজনীতি করতেই বেশি আগ্রহী যশবন্ত । জেপিসি সেই ফাঁদে পা দেবে না। বরং শীঘ্রই কমিটির রিপোর্ট চূড়ান্ত করে সংসদে পেশ করা হবে। চূড়ান্ত রিপোর্ট নিয়ে কমিটির কোনও সদস্যের যদি কোনও আপত্তি থাকে তা-ও নথিভুক্ত করে মূল রিপোর্টের সঙ্গে সংসদে পেশ করা হবে।
আসলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় স্তরে টুজি বিতর্ক অনেকটা থিতিয়ে এসেছে। লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেস এখন তাই চাইছে টুজি কেলেঙ্কারি নিয়ে জেপিসি তদন্তের পাটও চুকিয়ে ফেলতে।
আর বিজেপি-র লক্ষ্য দুর্নীতির প্রশ্নে সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের রোষকে জিইয়ে রেখে লোকসভা ভোটে তার লাভ তোলা। সে কারণেই টুজি বিতর্ক ফের খুঁচিয়ে তুলতে গত কাল প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা বলেন, “আপনার যদি সত্যি লুকোনোর কিছু না থাকে, তবে জেপিসি-র সামনে সাক্ষ্য দিতে বাধা কোথায়?
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম ও প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজাকেও জেপিসি-তে জেরা করার দাবি জানান যশবন্ত। কিন্তু সরকার বা কংগ্রেস যে বিজেপি-র এই ফাঁদে পা দেবে না, সেটাই আজ স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিবৃতি দেওয়ার পাশাপাশি যশবন্তকে পাল্টা চিঠিও দিয়েছেন।
কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, অতীতে টুজি কেলেঙ্কারি নিয়ে শোরগোলের সময় রক্ষণাত্মক অবস্থান নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। নিজের সততা ও স্বচ্ছতা তুলে ধরতে তিনি পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির সামনে সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছিলেন। এতে কংগ্রেস ও সরকারকে আরও কোণঠাসা করতে তৎপর হয়ে ওঠে বিজেপি।
সনিয়া গাঁধী ও মনমোহন উভয়েই পরে বুঝতে পেরেছেন, কৌশল বদলানো প্রয়োজন। সেই অবস্থানের প্রতিফলনই আজ দেখা গেল প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.