এসএফ আই ছাত্র নেতার মৃত্যু, ৪ এপ্রিল রাজ্যজুড়ে বামদের ধিক্কার মিছিল |
রাজ্যে ছাত্র সংগঠনের নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে পথে নামল এসএফআই-সহ বাম ছাত্র সংগঠনগুলি। আজ এই দাবিতে রানি রাসমণি রোডে বাম ছাত্র সংগঠনগুলির সমাবেশে আইন অমান্য আন্দোলনের কথা ঘোষণা করেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বে এসএফআই-সহ বাম ছাত্র সংগঠনগুলির একটি বিরাট মিছিল পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ধর্মতলার দিকে এগিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, বাধা পেয়ে এসএফআই-এর সমর্থকরা পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করে। পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে অসংখ্য ছাত্র। এ দিকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পথে বাস থেকে পড়ে গুরুতর জখম হন দুই এসএফআই সমর্থক। আহত দুই ছাত্রকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মধ্যে সুদীপ্ত গুপ্ত নামে এক ছাত্রের অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। তাঁর অবস্থা
|
সুদীপ্ত গুপ্ত |
অবনতি হওয়ায় সিসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়। সন্ধে ৬টা ২০ মিনিট নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর মৃত্যুতে বাম ছাত্র সংগঠনগুলিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এসএফআই সমর্থকদের অভিযোগ, সুদীপ্তকে বাস থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় পুলিশ। পড়ে যাওয়ার পর তাঁকে লাঠি দিয়ে ব্যাপক মারধর ও করা হয়েছে। সুদীপ্তকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সঞ্জয় সেন নামে এক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন, সুদীপ্তর মুখে ও মাথায় আঘাত ছিল। অন্য দিকে, যুগ্ম কমিশনার জাভেদ শামিম জানিয়েছেন, ল্যাম্প পোস্টে ধাক্কা লেগে বাস থেকে পড়ে যান সুদীপ্ত। তাঁর জেরেই এই মর্মান্তিক ঘটনা। তবে তিনি সুদীপ্তকে পুলিশের লাঠি দিয়ে মারার বিষয়টি এড়িয়ে যান। এই ঘটনার পর রাত ৯.৩০ নাগাদ সাংবাদিক বৈঠকে বিমান বসু জানিয়েছেন, আগামী ৪ এপ্রিল সুদীপ্তর মৃত্যুর প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে ধিক্কার মিছিল করবে বামেরা। ওই দিনই টালিগঞ্জ ও গড়িয়া এলাকায় ১২ ঘণ্টা বনধ পালন করা হবে। পাশাপাশি, এই ছাত্রনেতার মৃত্যুর বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
|
পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত আইনের ৪২ নং ধারা— যার জোরেই রাজ্য সরকার পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা করেছে। সেই ধারাকেই বাতিল করার আর্জি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল নির্বাচন কমিশন। আর তাই নিয়েই যত জটিলতা।
গত কালই বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের এজলাসে এই মামলা দায়ের করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে আবেদনে পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকায় প্রথমে তা গৃহীত না হলেও ত্রুটি সংশোধনের পর আজ তা গৃহীত হয়েছে। কমিশন মনে করে, এখন যদি ধারাটিই অবৈধ হয়ে যায়, তবে রাজ্যের হাত থেকে চলে যাবে পঞ্চায়েতের দিন ঘোষণার ক্ষমতা। ভবিষ্যতে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আর এমন জটও তৈরি হবে না। ক’দফায় ভোট হবে, তা নিয়ে বিবাদ এক প্রকার মিটলেও জেলা ভাগ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে সরকার ও কমিশন দু’পক্ষই অনড়। রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, জুলাই মাসের মধ্যে রাজ্যে নতুন ত্রিস্তর পঞ্চায়েত তৈরি না হলে পঞ্চায়েতগুলি অচল হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার আদালতে গিয়ে পঞ্চায়েতগুলিতে প্রশাসক বসানোর আবেদন করতে পারে। রাজ্য প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, আদালতে না গিয়েও রাজ্য অর্ডিন্যান্স জারি করে প্রশাসক নিয়োগ করতে পারে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, “কেন্দ্র গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য যে টাকা দেয়, কিছু স্কিমের ক্ষেত্রে নির্বাচিত পঞ্চায়েতের মাধ্যমেই তা খরচ করতে হয়। পঞ্চায়েত ভোট বন্ধ হয়ে গেলে সে টাকা পাওয়া যাবে না।”
এদিকে কমিশনের মামলার নিরিখে পাল্টা আইনি প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে রাজ্য সরকার। সরকার পক্ষের হয়ে আদালতে মামলা লড়বেন অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায়। থাকবেন জিপি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়, আইনজীবী পরিতোষ সিনহা। ফলে সব মিলিয়ে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক জল আরও ঘোলা হল।
আজই এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা। তাই রাজ্য সরকার, কমিশন, বিরোধী দলগুলির সঙ্গে সঙ্গে গোটা রাজ্যই তাকিয়ে এই মামলার ফলাফলের দিকে।
|
শিয়ালদহ ইএসআই: ঘেরাও ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী |
বৈধ ইএসআই কার্ড থাকা সত্ত্বেও বাইরে থেকে চিকিত্সা করানো এবং বাইরে থেকে ওষুধ কেনার পরামর্শ দিয়ে বিপাকে পড়তে হল শিয়ালদহ ইএসআই হাসপাতালের ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের। তাঁদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান রোগী এবং রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা। চিকিত্সায় গাফিলতি এবং হাসপাতালে দালাল চক্রের আধিপত্যের অভিযোগে দীর্ঘ ক্ষণ বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বিক্ষোভ চলাকালীন বারবার বচসা, হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দু’পক্ষই। স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগও এনেছেন রোগী এবং রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা। |