স্বাধীনতা-বিরোধী জামাতে ইসলামির রাজনীতি নিষিদ্ধ করা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে আরও ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “আমরা এক অস্থির ক্রান্তিকাল পার করছি। স্বাধীনতা-বিরোধী শক্তি দেশকে অস্থির করে তুলতে চাইছে।” কাল বিরোধী দল বিএনপি-র ৩৬ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিনে সারা দেশে ব্যাপক হাঙ্গামা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের পরে সরকার ঢাকায় হামলাকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়। তার পরে আজ হাঙ্গামা ছিল অনেক কম। যশোরে হরতালকারীদের তাড়া খেয়ে পালানোর সময়ে একটি লরি উল্টে ৩ শ্রমিক মারা গিয়েছেন। লালমণির হাটে ছুটি না দেওয়ায় একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেদম মারধর করেছে বিএনপি কর্মীরা। মার খেয়েছে ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীরাও।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জামাতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, এই দুই বিষয়ে গড়িমসির জন্য ২৬ মার্চ স্বাধীনতার দিনে সরকারের কড়া সমালোচনা করেছিল শাহবাগ চত্বরে অবস্থানে বসা নতুন প্রজন্ম। কিছু আন্দোলনকারী অনশনও শুরু করেছেন। তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “৪২ বছর পরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে। অনেকে অস্থির হয়ে যাচ্ছেন। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। এক দিনে হঠাৎ কিছু হয় না।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মধ্যেই দুই রাজাকার শিরোমণির প্রাণদণ্ড হয়েছে, এক জনের যাবজ্জীবন। বিচার তার নিজের গতিতে চলছে। মানুষ এত দিন এই বিচার চেয়েও পাননি। তাই তাঁরা অধৈর্য। হাসিনা বলেন, “বিপদ বুঝে স্বাধীনতা-বিরোধীরা মরিয়া হয়ে উঠেছে।”
বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া যে ভাবে স্বাধীনতা-বিরোধী শক্তির পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাকে স্বাভাবিক ঘটনা বলে মনে করেন হাসিনা। তিনি বলেন, “সেনাবাহিনীর হাত ধরে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলি করে যে দল তৈরি হয়েছে, তার নেত্রী অভ্যুত্থানের জন্য সেনাদের উস্কানি দিতেই পারেন। বিচার বন্ধ করে স্বাধীনতা-বিরোধীদের প্রতিষ্ঠিত করাই ছিল সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের একমাত্র কাজ। স্বাধীনতার প্রতিটি চেতনা তিনি একে একে ধ্বংস করেছিলেন।” হাসিনার কথায়, তাঁর স্ত্রী যে স্বাধীনতা-বিরোধীদের পাশে থাকবেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধে উঠে পড়ে লাগবেন, এটাই স্বাভাবিক। শাহবাগের আন্দোলনকারীদের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক-দালালদের নির্মূল করার দাবিতে ১৯৯২-এর আন্দোলনে তিনিও শরিক ছিলেন। বেগম সুফিয়া কামালের নির্দেশেই তিনি জাহানারা ইমামের কাছে গিয়েছিলেন। শাহবাগ চত্বরে সেই একই দাবি তুলেছেন তরুণরা। হাসিনা বলেন, “আমার আনন্দ হচ্ছে যে সকলের মধ্যে এই চেতনা ফিরেছে। ফিরে এসেছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান।”
|
ফের হাসপাতালে ম্যান্ডেলা
নিজস্ব প্রতিবেদন |
হাসপাতালে ভর্তি ৯৪ বছরের নেলসন ম্যান্ডেলা। কারণ ফুসফুসে সংক্রমণ। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক। যদিও যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জেকব জুমা ম্যান্ডেলার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। ফুসফুসে সংক্রমণের ফলে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা। ১৯ দিন তিনি হাসপাতালে ছিলেন। সেই সময় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর পিত্তথলি থেকে পাথর সরানো হয়। আবার চলতি বছরের মার্চ মাসে তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা হয়। বর্ণবিদ্বেষী শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময়ে জেলে যক্ষ্মা হয়েছিল ম্যান্ডেলার। তার পর থেকেই ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট ম্যান্ডেলার বিশ্বে নেতা হিসেবে বিশেষ কদর আছে। ২০০৪ সালে রাজনীতি থেকে অবসর নিলেও নানা বিষয়ে তাঁর মত যথেষ্ট গুরুত্ব পেয়ে থাকে। ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরে শেষ বার প্রকাশ্যে আসেন তিনি। ডিসেম্বরে ম্যান্ডেলা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে প্রেসিডেন্ট জুমার এক মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, জোহানেসবার্গের শহরতলি এলাকায় একটি বাড়িতে থাকবেন ম্যান্ডেলা। সেখানে তাঁর স্বাস্থ্যের উপরে নজর রাখবেন চিকিৎসকরা। |