দারুণ জয়। দু’বছরের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর এমন একটা ঐতিহাসিক সিরিজ জেতার জন্য এমএস ধোনি এবং গোটা ভারতীয় দলকে অভিনন্দন।
সামনের দেড় বছরে ভারতকে বিদেশে গিয়ে টেস্ট সিরিজ খেলতে হবে। সেটা মাথায় রাখলে বলতে হবে, অস্ট্রেলিয়াকে এ ভাবে গুড়িয়ে দেওয়ার পর দলের আত্মবিশ্বাস এক লাফে অনেকটা বেড়ে যাবে।
এই সিরিজের প্রত্যেকটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভারত এগিয়ে থেকেছে। যার শুরু চেন্নাই টেস্টে কঠিন পিচে এমএস এবং ভুবনেশ্বরের মোক্ষম সময়ে পার্টনারশিপ দিয়ে। যে ছন্দটা গোটা সিরিজে ধরে রেখে কোটলায় ৪-০ জয়টা এসেছে।
আমার সবথেকে ভাল লেগেছে এই সিরিজে ভারতের তরুণ ক্রিকেটারররা যে ভাবে সুযোগ কাজে লাগাল। রানের খিদে আর ইচ্ছা থাকলে এক জন কী করতে পারে তার সবথেকে ভাল উদাহরণ মুরলী বিজয়। দু’বছর পর দেশের হয়ে টেস্টে নামলেও দু’টো বড় সেঞ্চুরি করেছে এই সিরিজে বিজয়। ওর পরিণতবোধ এবং সেটার প্রয়োগের প্রশংসা করছি।
পূজারাও দুর্দান্ত ধারাবাহিকতা রেখে গিয়েছে ব্যাটিংয়ে। যত সময় গিয়েছে পূজারার রানের খিদে বেড়েছে। ভবিষ্যতে পূজারা তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
শিখর ধবনের এ রকম টেস্ট অভিষেক সত্যিই স্বপ্নের মতো। বিন্দুমাত্র চাপে না থেকে মোহালিতে যে ধ্বংসাত্মক ভঙ্গিতে শিখর ইনিংসটা সাজিয়েছিল, এক মিনিটও চোখ সরানো যাচ্ছিল না। শিখরের আত্মবিশ্বাস কোন পর্যায়ের, সেটা টেস্ট অভিষেকের ইতিহাসে ওর দ্রততম সেঞ্চুরিতেই পরিষ্কার।
কোহলি হয়তো তেমন বড় রান পায়নি, কিন্তু চাপের মুখে পরিণত মানসিকতা দেখিয়ে পরিস্থিতি সামলেছে. পূজারার মত ব্যাটিংয়ে কোহলিও খুব দ্রুত দলের স্তম্ভ হয়ে উঠছে।
ভারতের টেস্টে র্যাঙ্কিংয়ে আবার শীর্ষস্থান দখলের লড়াইয়ে এই চার তরুণ ব্যাটসম্যান বড় ভূমিকা নেবে। একটা সফল দলের অন্যতম রহস্য স্থায়ী ব্যাটিং অর্ডার। ধোনিদের এখন ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা চলবে না। মিডলঅর্ডারকে স্থায়ী চেহারা দিতে হবে।
কোটলায় ওপেনার হিসেবে দু’টো হাফসেঞ্চুরি করলেও আমার মনে হয় পূজারার ব্যাটিং অর্ডারে আসল জায়গা তিনেই। চারে সচিন নামার পর কোহলির পাঁচে ব্যাট করা উচিত। আর দক্ষিণ আফ্রিকায় ধোনি নামুক সাতে।
তা হলে ছ’নম্বর জায়গাটার কী হবে?
আমার মনে হয়, ছ’নম্বরে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান কাউকে চিহ্নিত করতে হবে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে। ধোনি সাত নম্বরে নামলে দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের ব্যাটিং গভীরতা বাড়বে। পাশাপাশি এটাও দেখতে হবে, দলে যেন বিশেষজ্ঞ ওপেনার থাকে। দলের সাফল্যে এই রেসিপিটা খুবই জরুরি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের আগে ধোনির হাতে অনেক সময় আছে। আমি নিশ্চিত, এমএস ঠিক সময় দল নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করবে। আপাতত ৪-০ জয়ের সেলিব্রেশনে মেতে ওঠা যাক। |