|
|
|
|
অরুণাচলের পাহাড়ে মিলল মার্কিন বিমানের খোঁজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
মৃত্যুর সত্তর বছর পরে, ভারতের মাটিতে মার্কিন বিমানচালকের অন্তিম সংস্কার হল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, ১৯৪৩ সালে যুদ্ধবিমান-সহ হারিয়ে গিয়েছিলেন মার্কিন বিমানবাহিনীর এক চালক। সাত দশক পরে ভারতীয় সেনাবাহিনী অরুণাচলের দুর্গম পাহাড়ে মার্কিন ‘ব্ল্যাক হক’ বিমানের ধ্বংসাবশেষ ও সেই চালকের দেহাংশ খুঁজে পেল। সামরিক নিয়ম মেনে পূর্ণ মর্যাদায় বিমান চালককে কবর দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইন্দো-চিন সীমান্তের এই ‘হাম্প’ এলাকা মিত্রবাহিনীর বিমান চালকদের কাছে কবরখানার নামান্তর হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ২০০৪ সালে মার্কিন সরকার তাঁদের নিখোঁজ যুদ্ধবিমানের যে হিসেব দেয় সেই অনুযায়ী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারত, অরুণাচল, মায়ানমার, চিন সীমান্তে ৪১৬টি বিমান ও ১২০০ পাইলট-ক্রু নিখোঁজ হয়ে যায়। অচেনা আবহাওয়া ও পাহাড়ি ভূখণ্ডে বিমান ওড়াতে গিয়েই মিত্রবাহিনীর একের পর এক বিমান এই এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
দীর্ঘদিন ধরে অরুণাচলে হারানো বিমানের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছেন ওকেন তায়েং ও মার্কিন নাগরিক ক্লেটন খুল্স। ২০০৭ সালে মিত্রবাহিনীর হারিয়ে যাওয়া দু’টি বিমান ও বেশ কিছু বিমানের ভগ্নাবশেষের সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা। ২০০৮ সালে আপার সিয়াং-এর দামরোয় ‘হট অ্যাজ হেল’ নামে আরও একটি বিমান খুঁজে পান স্থানীয় এক শিক্ষক, তানি বাগাং। লোককথার উত্স সন্ধানে গিয়ে পূর্ব কামেং জেলার বাসিন্দা বাগাং দু’টি মার্কিন বিমানের টুকরো, বুলেট ও একটি কঙ্কাল খুঁজে পেয়েছিলেন। ‘হট অ্যাজ হেল’ ছাড়াও বাগাং উদ্ধার করেন ‘ব্ল্যাক হক’ লেখা একটি ইস্পাতের পাত। সব কিছু কাপড়ে বেঁধে গ্রামে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। এরপর ‘হট অ্যাজ হেল’-র ৮ চালক ও ক্রু-র মধ্যে নিহত চালক এরউইন জেট্ড-এর ভাইপো গ্যারি অরুণাচলে এসে কাকার সত্কার করেন।
অন্য বিমানটির অবশিষ্ট অংশ ও তার চালকের সন্ধানে সম্প্রতি ভারতীয় সেনাবাহিনী লুলাম গিকার পাহাড়-অরণ্যে অভিযান চালায়। ৮০ কিলোমিটার বিপদসঙ্কুল অরণ্য পাড় হয়ে কেসেবাগাং গ্রামের কাছে, দুর্গম পাহাড়ের খাঁজে স্কাউট বিমান ‘ব্ল্যাক হক’-এর ধ্বংশাবশেষ মেলে। পাওয়া যায় চালকের হাড়গোড়। সে গুলি নিয়ে গত ২৩ মার্চ জওয়ানরা ফিরে আসেন। এরপর খ্রিস্টান রীতি মেনে চালকের দেহাংশ কবর দেওয়া হয়। |
|
|
|
|
|