নির্মাণ সামগ্রীর দাম ও শ্রমিকদের মজুরি পরিচালন সমিতির সম্পাদক না মেটানোয় বন্ধ হয়ে পড়েছে ঘর গড়ার কাজ। এমন অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার দুপুরে মঙ্গলকোটের যজ্ঞেশ্বরডিহি ভুবনমোহিনী স্মৃতি শিক্ষা নিকেতনের ওই সম্পাদককে স্কুলের ঘরে তালা দিয়ে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখলেন গ্রামবাসীরা। শেষ পর্যন্ত সম্পাদক ননীচূড়া ঘোষ শেষ পর্যন্ত ইস্তফা দেওয়ার পরে তালা খোলা হয়। |
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, চারটি নতুন শ্রেণিকক্ষ গড়ার জন্য ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বশিক্ষা অভিযান প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা দেয়। বেশ কিছুটা কাজ এগোনোর পরে যে দোকান থেকে নির্মাণসামগ্রী আসছিল তারা টাকা চায়। কিন্তু সম্পাদক ননীচূড়াবাবু নিম্নমানের সামগ্রী সরবরাহের অভিযোগ তুলে টাকা দিতে অস্বীকার করেন। ব্যবসায়ীরা প্রধান শিক্ষক তন্ময় মুখোপাধ্যায়ের কাছে গেলে তিনি জানিয়ে দেন, সম্পাদক চেকে সই না করলে টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। এর পরে বারবার তাগাদা করেও টাকা না মেলায় ব্যবসায়ীরা নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ বন্ধ করে দেন।
একই রকম পরিস্থিতিতে পড়েন নির্মাণে নিযুক্ত শ্রমিকেরাও। তাঁদেরও মজুরি দেওয়া হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় স্কুলের উন্নয়নের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক দিন আগে স্থানীয় মানুষজন প্রধান শিক্ষকের কাছে কেন কাজ হচ্ছে না জানতে গেলে তিনি পুরো ঘটনা জানান। গ্রামবাসী সুশান্ত ঘোষ, দেবব্রত চৌধুরীদের অভিযোগ, “ননীচূড়াবাবু ‘কাট মানি’ পাচ্ছিলেন না বলে ব্যবসায়ীদের টাকা আটকে রেখেছেন। ফলে, স্কুল উন্নয়নের কাজও স্তব্ধ হয়ে রয়েছে।” |
প্রধান শিক্ষক পুরো ঘটনা সর্বশিক্ষা অভিযান দফতরকে জানান। ননীচূড়াবাবুও কাটোয়ার মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত ভাবে নিম্নমানের কাজে প্রধান শিক্ষক মদত দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন।
মঙ্গলবার সর্বশিক্ষা অভিযানের দু’জন আধিকারিক যজ্ঞেশ্বরডিহির ওই স্কুলে আসেন। খবর পেয়ে ননীচূড়াবাবুও স্কুলে পৌঁছন। তখনই গ্রামবাসীরা তাঁকে একটি ঘরে আটকে চেকে সই করার দাবি জানাতে থাকেন। তিনি অবশ্য তা করতে অস্বীকার করেন। পরিচালন সমিতির অন্যতম সদস্য অভয়তারণ দত্ত বলেন, “গ্রামবাসীদের দাবি মেনে ননীচূড়াবাবু স্কুল পরিচালন সমিতি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।” ননীচূড়াবাবু ‘কাট মানি’র অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “নিম্নমানের জিনিস দিয়ে কাজ হচ্ছে, তা সত্ত্বেও আমাকে চেকে সই করার জন্য জোর করা হয়েছিল। আমার পক্ষে তা সম্ভব নয়।” সর্বশিক্ষা অভিযানের এক আধিকারিক জানান, পুরো ঘটনা তাঁরা দেখে গেলেন। উপযুক্ত জায়গায় রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। |