পনেরো মাসে মামলার নিষ্পত্তি
গণধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন জেল
ফের ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে মামলার নিষ্পত্তি হল দ্রুত। মাস পনেরো আগের একটি ডাকাতি-গণধর্ষণের ঘটনায় তিন দুষ্কৃতীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন হলদিয়া ফাস্ট ট্র্যাক দ্বিতীয় আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সোমনাথ চক্রবর্তী।
২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর হলদিয়া থানা এলাকার আজাদহিন্দ নগরের ‘টেকনো ভিলা’র ওই ডাকাতির ঘটনা নিয়ে হইচই হয়েছিল খুব। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের বাসিন্দা এক ইঞ্জিনিয়ার স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে আবাসনে থাকতেন। কর্মসূত্রে ঘটনার দিন খড়্গপুরে গিয়েছিলেন ইঞ্জিনিয়ার। সেদিন আবাসনের ছ’টি ফ্ল্যাটের পাঁচটিই ছিল খালি। সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে রাত দু’টো নাগাদ চার জন দুষ্কৃৃতী হামলা চালায়। লোহার রড, শাবল, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে মা ও ছেলেকে। পাশের ঘরে ছেলেকে বেঁধে ওই বধূকে গণধর্ষণ করে তারা। এরপর সোনার গয়না, মোবাইল, ডিজিট্যাল ক্যামেরা ও নগদ ২০ হাজার টাকা লুঠ করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। প্রাথমিক তদন্তে নেমে হলদিয়া পুলিশ জানতে পারে স্থানীয় কিছু যুবকই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। দু’দিন পরে ১৭ মার্চ গ্রেফতার করা হয় ওই থানা এলাকারই বিকাশ প্রামাণিককে। পরে ২০১২ সালের ৪ মার্চ গ্রেফতার হয় সোনু নামে আর এক জন। তাদের জেরা করে রঞ্জিত মান্না, শেখ মনিরুল ও লুঠ হওয়া সামগ্রীর ক্রেতা শুভঙ্কর জানা-সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে ১৪ মার্চ চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। শুভঙ্কর আগাম জামিনে মুক্তি পেলেও ৮ মে ধরা পড়ে রঞ্জিত। শেখ মনিরুলকে শুধু ধরতে পারেনি পুলিশ।
ইতিমধ্যে ধৃতদের শনাক্ত করেন ওই বধূ। ২০১২ সালের ১০ অগস্ট থেকে হলদিয়া আদালতে মামলাটি চলছিল। সোমবার অভিযুক্ত তিন জনকে দোষী সাব্যস্ত করে শুভঙ্করকে বেকসুর খালাস করে আদালত। এ দিন তিন দুষ্কৃতীকে ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন বিচারক। একই সঙ্গে লুঠপাটের ঘটনায় ১০ বছর জেল হাজত ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। দু’টি ক্ষেত্রেই জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের হাজতবাস হয়েছে। সরকারপক্ষের আইনজীবী সোমনাথ ভুঁইয়া বলেন, নিরাপত্তাকর্মী, পুলিশ-সহ ১৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে এই মামলায়। দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি ও সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ায় আমরাও খুশি। তবে, দোষীদের শুধু কারবাসে সন্তুষ্ট নন নিগৃহীতা বধূর স্বামী। তিনি বলেন, “ঘটনার পর থেকেই স্ত্রী মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে। আতঙ্কে হলদিয়া ছেড়ে বারাসতেই থাকে। দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি হওয়ায় জ্বালা কিছুটা কমল। তবে এই মামলায় শাস্তি আরও কঠিন হওয়া প্রয়োজন। যাতে কারও এত ক্ষতি না হয়।” প্রায় ৯ বছর আগে হলদিয়ায় ফাস্ট ট্র্যাক আদালত খোলার পর থেকেই মামলার গতি অনেক বেড়েছে। তবে এই ধরণের মামলায় এত দ্রুত নিষ্পত্তি নজিরবিহীন বলে দাবি আদালতের প্রাক্তন সরকারি কৌঁসুলি ঋষিকেশ সুকুলের। তিনি বলেন, “মামলার গতিপ্রকৃতি অনেকটাই পুলিশি তৎপরতা ও সাক্ষীদের ওপর নির্ভর করে। নিগৃহীতার মানসিক জোরও লাগে। হলদিয়ায় এই ধরনের গণধর্ষনের মামলার এত দ্রুত নিষ্পত্তি আমার স্মরণে নেই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.