|
|
|
|
চিদম্বরমকে রোখার চেষ্টা, জল্পনা দলে |
ক্ষমতার দুই কেন্দ্র ভাল নয় বলে বিতর্কে দিগ্বিজয় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
কেন্দ্রে কংগ্রেস ফের ক্ষমতায় এলে রাহুল গাঁধীরই প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করলেন দলের সাধারণ সম্পাদক দিগ্বিজয় সিংহ।
কিন্তু তার জন্য যে যুক্তি তিনি তুলে ধরেছেন তাতে দলের নেতারাই রীতিমতো বিস্মিত।
কেন্দ্রে ইউপিএ সরকার গঠনের পর থেকেই ক্ষমতার দুই কেন্দ্র নিয়ে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে এসেছে বিজেপি। আর রাহুলের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে দিগ্বিজয় আজ বলেন, “কংগ্রেসে ক্ষমতার দু’টি কেন্দ্রবিন্দু থাকার ফলে খুব কাজের কাজ হয়েছে বলে মনে করি না। যদিও সরকারের কাজে সনিয়া গাঁধী কখনও মাথা গলাননি, কিন্তু তা সত্ত্বেও বলব যে প্রধানমন্ত্রীর পূর্ণ কর্তৃত্ব থাকা উচিত।” তাই কংগ্রেস ভোটে জিতলে কাউকে প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনীত না করে নিজেরই সেই দায়িত্ব নেওয়া উচিত রাহুল গাঁধীর।
লালকৃষ্ণ আডবাণীদের বরাবরেরই বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের হাতে কোনও ক্ষমতা নেই। আসল ক্ষমতা সনিয়া গাঁধীর হাতে কুক্ষিগত। এবং সেই প্রসঙ্গে মনমোহনকে দুর্বল প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আগাগোড়া সমালোচনা করে এসেছেন বিরোধীরা। তবে দিগ্বিজয় তা-ও খণ্ডন করার চেষ্টা করেছেন এ দিন। তাঁর যুক্তি, “মনমোহন সিংহের হাতে কোনও কর্তৃত্ব ছিল না বললে ভুল হবে। বরং পরমাণু চুক্তি পর্ব থেকে শুরু করে একাধিক ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর কর্তৃত্ব দেখিয়েছেন। তবে আমার বক্তব্য, ক্ষমতার দু’টি কেন্দ্র না থেকে একটাই কেন্দ্র থাকলে কাজ আরও ভাল হত। |
|
দিগ্বিজয়ের মতো দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতা কেন এ ভাবে বিরোধীদের বক্তব্যকেই খুঁচিয়ে তুললেন, সেটাই প্রশ্ন।
তাঁর এই মন্তব্যের নেপথ্যে যথেষ্ট তাৎপর্য রয়েছে বলে কংগ্রেসের নেতারাই মনে করছেন। এবং তাঁদের মতে, সেই বার্তা কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক কালে একাধিক বার রাহুল বলেছেন যে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা তাঁর নেই। সংগঠনকে শোধরানোই তাঁর লক্ষ্য। ক্ষমতার জন্য যে তাঁদের পরিবার লালায়িত নয়, দলের সহসভাপতি হওয়ার দিনেই রাহুল তা তুলে এনেছিলেন নিজের বক্তব্যে। সেই থেকে অনেকের মনে সংশয় তৈরি হয়েছে যে কংগ্রেস ভোটে জিতলেও রাহুল হয়তো প্রধানমন্ত্রী হতে চাইবেন না। সে ক্ষেত্রে অতীতে সনিয়ার মতোই ক্ষমতার হাতছানি উড়িয়ে আত্মত্যাগের পথ নেবেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করবেন কাউকে।
এমনকী এই জল্পনার সূত্রে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের নামও পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী হিসাবে উঠে আসছে। কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, সেই সম্ভাবনা অঙ্কুরেই বিনাশ করতে চাইছেন দিগ্বিজয়। এমনিতেই চিদম্বরমের সঙ্গে দিগ্বিজয়ের বনিবনা নেই। অতীতে বহু বারই চিদম্বরমকে প্রকাশ্যে কটাক্ষ করেছেন দিগ্বিজয়। এ বারও আগেভাগেই চিদম্বরমের সম্ভাবনার পথ বন্ধ করতে চাইছেন দশ জনপথ ঘনিষ্ঠ এই নেতা।
দিগ্বিজয়ের মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে কংগ্রেস মুখপাত্র রশিদ আলভি শুধু বলেন, “ক্ষমতার দুই কেন্দ্র নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। তবে এটা ঠিক যে রাহুল প্রধানমন্ত্রী হলে কংগ্রেস কর্মীরা সবাই খুশি হবেন।” |
|
|
|
|
|