বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
ফার্ন, অর্কিড নিয়ে দিনভর ব্যস্ত গবেষক
রাস্তার ধারেই ছোট্ট দোতলা বাড়ি। নীচতলায় পরপর স্টেশনারি, টেলিফোন এবং সাইবার কাফে। বাড়ির বাঁ পাশ দিয়ে সরু সিড়ি উপরে দোতলায় উঠে গিয়েছে। দরজা দিকে ভিতরে ঢুকেই ডান পাশে ৫ ফুট বাই ১০ ফুটের লম্বা আকৃতির ঘর। বন্ধ কাঁচের জানলার সরানো পর্দার ফাঁক দিয়ে নীল আকাশ দেখা যাচ্ছে। ফাইল কাগজের স্তূপ, ফোন, ইন্টারনেটে তারের ফাঁক দিয়ে ঘরে ঢোকাই দায়। এর মাঝেই মাঝারি গড়নের আধপাকা চুল, চোখে চশমা দিয়ে কম্পিউটারে নিজের ‘স্টাডিরুমে’ কাজ করছেন সুধিজং লুকসাম। ক্লান্তিহীনভাবে। তিনি সিকিমের পরিবেশ, বন্যপ্রাণ ও বন দফতরের অবসরপ্রাপ্ত ডাইরেক্টর।
ছয় বছর আগে তাঁর অর্কিড নিয়ে গবেষণামূলক বই ‘দ্য অকির্ডস অব সিকিম অ্যান্ড নর্থ ইস্ট হিমালয়া’ সিকিম তো বটেই গোটা উত্তর পূর্ব ভারতে সারা ফেলে দিয়েছিল। ৬০০ পাতার বই লিখতে তাঁর সময় লেগেছিল প্রায় ২০ বছর। তাতে থাকা ৫৪১ টি অর্কিডের পেনসিল স্কেচের ছবি তিনি নিজের হাতে এঁকেছেন ৭ বছর ধরে। ওই সিকিমের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক বর্তমানে ব্যস্ত সিকিম নানা প্রান্তের জঙ্গলের ফার্ন নিয়ে। ইতিমধ্যে ২৫০ ধরণের, নানা প্রকৃচির ফার্ণ সংগ্রহ করে ফেলেছেন। সযত্নে সাদা কাগজের মধ্যে আঠা দিয়ে তা সেঁটে তথ্য সহকারে ফাইল তৈরি করে রাখছেন। পাশাপাশি, তথ্য রাখা থাকছে কম্পিউটারেও। চোখে কম দেখায় খালি ব্যবহার করতে হচ্ছে বড় মাপের মনিটার। সেই সঙ্গে বাড়ি জুড়ে অর্কিডের ওয়েল পেন্টিং। কিছু পুরো, কিছু অর্ধ সমাপ্ত। ফার্ন আঁকা শুরু করবেন বলে ঠিক করেছেন।

সুধিজং লুকসাম। —নিজস্ব চিত্র।
প্রবীণ এই গবেষক বললেন, “যে ভাবে অর্কিড নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম, ফার্ণ নিয়েও সেইভাবে কাজ শুরু করেছি। ৩-৪ বছর হয়ে গিয়েছে। আমি ১২টি প্রজাতির একেবারে জঙ্গলি অর্কিড খুঁজে বার করেছিলাম। ফার্ণও পাব বলে আশা করছি। প্রবন্ধ, বিভিন্ন গবেষণায় সাহায্য, নানা জায়গায় নিমন্ত্রণ রক্ষার ফাঁকেই কাজ করছি। আর কী! অর্কিড, ফার্ন, ফুল পাতা এরাই আমার বন্ধু, পরিবার।”
চাকরি জীবনের এক সময় সিকিমের কাঞ্চনজঙ্ঘা ন্যাশনাল পার্কের দায়িত্ব ছিলেন। দিনভর সুবিশাল কাঞ্চনজঙ্ঘা ঘেরা জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে চোখে পড়ে রংবেরঙের অর্কিডের। খোঁজখবর নিয়ে পড়া শুরু করেন ১৮৮৯ সালের সিকিমের অর্কিড নিয়ে জর্জ কিং এবং রবার্ট প্যান্টলিং-র লেখা দ্য অর্কিড অব দ্য সিকিম হিমালয়া। ব্যাস, সেই আগ্রহের শুরু। কিং ও প্যান্টলিং ৪৪৫ প্রজাতির অর্কিডের কথা উল্লেখ করেছিলেন। ২০০৭ সালে সুধিজং লুকসাম শেষ করেন ৫২৭ প্রজাতি দিয়ে। তবে খোঁজ শেষ হয়নি।
তাঁর কথায়, “অনেক অজানা অর্কিড জঙ্গলেই রয়েছে। ফুলের সময়সীমা কম থাকায় বাণিজ্যিক কারণে সেগুলির প্রচার পায়নি। তবে হাইব্রিড অর্কিডের (সিমবোডিয়াম) রমরমা হওয়ায় ভাল লাগে না। জঙ্গলি অকির্ড নিয়ে কাজই হচ্ছে না। একই অবস্থা ফার্ণের। তাই চেষ্টা করছি, এই জীবদ্দশায় এই দুটি প্রজাতির তথ্য যতটা সম্ভব নথিবদ্ধ করে যেতে। ভবিষ্যত প্রজন্মের কাজে লাগবে।”
স্বামী-স্ত্রী দু’জনের সংসার। স্ত্রী অঞ্জুদেবী গায়িকা। দুরদর্শন, বেতারকেন্দ্র ছাড়া নানা অনুষ্ঠান করে থাকেন। গানের ডিভিডিও রয়েছে। অঞ্জুদেবীর কথায়, “উনি চাকরি জীবন থেকে দিনরাত এই সব নিয়ে থাকতে ভালবাসেন। সংসার আমিই সামলাই। ওঁকে উৎসাহ দিই। সময় সময়ে ওসব নিয়ে কথাও বলি। আমি কোনও দিন ওর কাজে বাধা দিইনি।”

মাঝপথেই ধ্বংস ‘নির্ভয়’
সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ‘নির্ভয়’ নামের ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ ব্যর্থ হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওড়িশার চাঁদিপুর থেকে প্রায় ১,৫০০ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রটি জাহাজ থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। নির্ভয়ের উৎক্ষেপণ ব্যর্থ হয়েছে এ কথা অবশ্য মানতে নারাজ ডিআরডিও মুখপাত্র রবি গুপ্ত। তিনি বলেন, প্রায় মাঝ পথ পর্যন্ত যাওয়ার পরে হঠাৎই দিগ্ভ্রষ্ট হয় নির্ভয়। তখন নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্রটিকে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.