বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সূর্যাস্তের পরেই আকাশে
আগন্তুক ‘প্যানস্টারস’

কাশপ্রেমীদের জন্য দারুণ খবর! সন্ধে নামতে না নামতেই পশ্চিম আকাশে আবির্ভাব ঘটেছে নতুন অতিথির ধূমকেতু ‘প্যানস্টারস’। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে, মঙ্গলবার সূর্যাস্তের পরই পশ্চিম আকাশে নজরে পড়বে আগন্তুক। তা-ও খালি চোখেই। ২০১১ সালের জুন মাসে ‘প্যানস্টারস’-এর আবিষ্কার। হাওয়াই দ্বীপের হ্যালিকালা আগ্নেয়গিরির চুড়োয় বসানো টেলিস্কোপে (প্যানোরামিক সার্ভে টেলিস্কোপ অ্যান্ড র্যাপিড রেসপনস সিস্টেম) প্রথম ধরা পড়ে ‘প্যানস্টারস’। তাই পরিচিতি টেলিস্কোপের নামেই। তবে খাতায় কলমে নাম সি/২০১১এল৪।
ধূমকেতু ‘প্যানস্টারস’। ছবি নাসার সৌজন্যে।
কী ভাবে সৃষ্টি এই ‘প্যানস্টারস’-এর?
সূর্য থেকে ৫০ হাজার অ্যাস্ট্রোনমিকাল ইউনিট দূরে একটা মেঘের মতো অঞ্চল রয়েছে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। একে বলে ‘উর্ট’ মেঘ অঞ্চল। এর থেকেই জন্ম হয়েছে প্যানস্টারস-এর। বিশাল বড় একটা উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে ঘিরে পাক খাচ্ছে ধূমকেতুটি। ফলে এক বার প্রদক্ষিণ করতেই সময় লেগে যায় প্রায় ১০ কোটি বছর। তাই বিজ্ঞানীদের ধারণা, প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার বছর পর ফের পৃথিবীর কাছে আসবে ‘প্যানস্টারস’।
রবিবার সূর্যের সবচেয়ে কাছে এসেছিল ধূমকেতুটি। দূরত্ব ছিল মাত্র ৪ কোটি ৫০ লক্ষ কিলোমিটার। স্বভাবতই সে দিন ‘প্যানস্টারস’-এর ঔজ্জ্বল্য ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু সূর্যের খুব কাছে থাকার জন্য চোখে পড়াটাই বেশ মুশকিল হয়ে পড়ে। নাসার এক বিজ্ঞানী জানালেন, এর জন্য দুঃখ করার দরকার নেই। আসল সময় আসতে এখনও বাকি। আগামী এক সপ্তাহই সব চেয়ে ভাল দেখতে পাওয়া যাবে ‘প্যানস্টারস’কে।
নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবের এক বিজ্ঞানীর বক্তব্য, “প্যানস্টারস নিজের কক্ষপথে যত এগোবে, ততই দৃশ্যমান হয়ে উঠবে। ১২ মার্চ থেকে খালি চোখে দেখতে পাওয়া যাবে ধূমকেতুটিকে।” তবে মার্চ মাস ফুরোনোর সঙ্গে সঙ্গেই সন্ধের আকাশ থেকেও হারিয়ে যাবে আগন্তুক।
নাসার বিজ্ঞানী র্যাচেল স্টিভেনসনের পরামর্শ, ‘প্যানস্টারস’কে দেখতে হলে সূর্যাস্তের পরেই পশ্চিম আকাশে লক্ষ্য রাখুন। সূর্য ডুবে যাওয়ার পর ৪০ মিনিট দেখতে পাওয়া যাবে তাকে। তার পর তা ধীরে ধীরে অস্ত যাবে। দেখাবে অনেকটা ‘!’ চিহ্নের মতো। নীচের বিন্দুটা হল ধূমকেতু নিজে এবং আকাশের দিকে উড়বে ঝাঁটার মতো লেজটা।
কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টারের অধিকর্তা সঞ্জীব সেন বলেন, “প্যানস্টারস ধূমকেতুটি পশ্চিম দিগন্ত রেখার একটু উপরে অবস্থান করে। তাই একে দেখার জন্য পশ্চিম দিগন্ত দৃশ্যমান হওয়া প্রয়োজন। আকাশও পরিষ্কার থাকতে হবে।” কলকাতার মতো শহরাঞ্চল থেকে তাই এই ধূমকেতুর দেখা পাওয়া মুশকিল বলে মনে করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা এ-ও জানাচ্ছেন, ‘প্যানস্টারস’কে খালি চোখে দেখা গেলেও টেলিস্কোপ বা দূরবীনের সাহায্যে আরও ভাল ভাবে দেখা যাবে।
তবে এই মহাজাগতিক বস্তুটির দেখা যদি এ বার না-ও পান, কুছ পরোয়া নেহি। কারণ ২০১৩ বছরটাই ধূমকেতুর, অন্তত এমনটাই বলছেন বিজ্ঞানীরা। কিছু দিন আগেই হাজির হয়েছিল ‘লেমন’। এ বার এসেছে ‘প্যানস্টারস’। আর বছরের শেষে দেখা মিলবে শতকের সেরা ধূমকেতু, ‘আইসন’-এর। সেরা বলার উদ্দেশ্য একটাই, ঔজ্জ্বল্যের বিচারে চাঁদকেও পিছনে ফেলবে আইসন। সব মিলিয়ে এ হেন মহাজাগতিক কাণ্ডকারখানায় আকাশপ্রেমীদের পোয়া বারো।

বিজ্ঞান-শিবির
প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ, পরিবেশ, খেলার আনন্দে বিজ্ঞান ও অঙ্ক শেখা প্রভৃতি বিষয়ে ক্যানিংয়ের ১০টি স্কুলের ১২৫ জন ছাত্রছাত্রীর প্রশিক্ষণের আয়োজন করল পশ্চিমবঙ্গের বিজ্ঞান মঞ্চের ক্যানিং শাখা। শনি ও রবিবার ক্যানিংয়ের সেন্ট গ্যাব্রিয়েল হাইস্কুলে এই প্রশিক্ষণ শিবির অনুষ্ঠিত হয়।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.