বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সৌরঝড়ের ভয়ে ঘুমিয়ে
পড়েছে ‘মিস কৌতূহল’

ক দফা ঘুম ভেঙে সবে উঠেছিল সে। কিন্তু তার তে-রাত্তিরও পেরোতে না পেরোতেই ফের ঘুমের দেশে চলে গেল ‘মিস কৌতূহল’!
২০১২ সালের অগস্টে মঙ্গলে পৌঁছয় রোভার কিউরিওসিটি। তার লক্ষ্য মঙ্গলে কখনও প্রাণের অনুকূল জল হাওয়া ছিল কি না, তা খুঁজে বের করা। সেই কাজে নেমে গ্রহের মাটিতে কখনও লাল গ্রহের মাটিতে হারানো নদীপথের সন্ধান দিয়েছে, কখনও খুঁজে পেয়েছে হাওয়াই দ্বীপের ব্যাসল্ট পাথরের ভাই-বেরাদরকে। তার হয়ে নিয়মিত ট্যুইটও করেন বিজ্ঞানীরা।
৬ মার্চ সেই কৌতূহলের একটি ট্যুইটেই প্রথম জানা যায়, তাঁর দ্বিতীয় দফার ঘুমের কথা। বুধবার ট্যুইটারে মিস কৌতূহল বলেছেন, “ঝড় আসছে! আমি ফের ঘুমোতে যাচ্ছি।”
কী সেই ঝড়? নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলের দিকে ছুটে আসছে সৌরঝড়। অর্থাৎ সূর্য থেকে বেরিয়ে আসা তড়িদাহত কণার স্রোত। আর তার হাত থেকেই রক্ষা করতে ঘুমের দেশে পাঠানো হয়েছে কৌতূহলকে। কেন?
নাসার মঙ্গল অভিযান প্রকল্পের প্রধান বিজ্ঞানী অমিতাভ ঘোষ বলছেন, ওই কণার প্রভাব থেকে কৌতূহলকে বাঁচাতেই আপাতত তাকে ঘুমের দেশে পাঠানো হয়েছে।
কারণ, সৌরঝড়ের প্রভাবে রোভারের কম্পিউটারের সমস্যা হতে পারত। এই সমস্যা পৃথিবীর ক্ষেত্রেও দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা জানান, ওই তড়িদাহত কণার স্রোত পৃথিবীর মেরু প্রদেশের পরিমণ্ডলে প্রবেশ করলে ওই এলাকা দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমানের যোগাযোগ ব্যবস্থায় সমস্যা হয়। মহাকাশে ভাসমান কৃত্রিম উপগ্রহ ও মহাকাশযানগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মঙ্গলে বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর চেয়ে পাতলা হওয়ায় তড়িদাহত কণার স্রোতের প্রভাব অনেক বেশি।
নাসা সূত্রের খবর, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মিস কৌতূহলের মধ্যে কিছু অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেন বিজ্ঞানীরা। ওই গ্রহের থেকে তথ্য ঠিক মতো পাঠাতে পারছিল না সে। অমিতাভবাবু বলছেন, কিউরিওসিটির মূল কম্পিউটারের ‘মেমরি’তে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। মাথা ঠিকঠাক কাজ না করার ফলেই ঘুমিয়ে পড়ে সে (স্লিপ মোড বা সেফ মোড)। প্রযুক্তির ভাষায়, ‘ব্যাকআপ’ কম্পিউটারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে কৌতূহল।
নাসার গবেষকেরা বলছেন, সেরে যাচ্ছিল কৌতূহলের রোগ। গত শনিবার তার ঘুম ভাঙানো হয়। মঙ্গলবার সে ট্যুইট করে, “শুভেচ্ছা জানানোর জন্য ধন্যবাদ। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই ফের পুরোদমে কাজ শুরু করব।” কিন্তু তার সেই ট্যুইট বদলে যায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই।
ফের কবে কাজ শুরু করবে মিস কৌতূহল? অমিতাভবাবু ও তাঁর সঙ্গীদের আশা, সব ঠিক ঠাক চললে চলতি সপ্তাহের শেষের দিকেই ফের জেগে উঠবে ওই মঙ্গলযান।

মঙ্গলের ভূপৃষ্ঠে খাত
রুক্ষ পাথুরে ভূপৃষ্ঠে বড় বড় গভীর খাত। তাদের বয়স অবশ্য বেশি নয়। মাত্র ৫০ কোটি বছর। তাদের উৎপত্তি হয়েছে নাকি প্রবল জলোচ্ছ্বাসের কারণে। অন্তত এমনটাই দাবি নাসার বিজ্ঞানীদের। কারণ খাতগুলির ঠিকানা মঙ্গলগ্রহ। রুক্ষ-শুষ্ক এই লাল গ্রহকে প্রদক্ষিণ করে চলা রিকনেসাঁ উপগ্রহের পাঠানো ছবি বিশ্লেষণ করে মঙ্গলের মাটিতে জলোচ্ছ্বাসের প্রমাণ পেয়েছে বলে জানিয়েছে নাসা। বহু দিন ধরেই মঙ্গলে জল আছে বলে দাবি করে আসছে নাসা। এই খাতগুলির উপস্থিতি বিজ্ঞানীদের দাবিকেই জোরালো করল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.