আলোকচিত্রীদের তীর্থস্থান
সেই সময়
মেশ মিত্র রোডের ১০সি নম্বরটা প্রায় চার দশক ধরে ছবি-তুলিয়েদের তীর্থস্থান ছিল বললে খুব বাড়িয়ে বলা হয় কি? কী ছিল সেখানে? একটা স্টুডিয়ো, নাম ইমেজ ফটোগ্রাফার্স। একজন মানুষ, নাম জ্যোতিষ চক্রবর্তী। কলকাতায় একটা সময় সেরা সাদাকালো ছবি প্রিন্ট করাতে সেরা আলোকচিত্রীরা এখানেই ভিড় করতেন, আসতেন নবীনরাও। তিনি নিজেও তুলতেন অসাধারণ ছবি, এতটাই যে, ভারত থেকে একমাত্র এই মানুষটিকেই নিজের ছবি তোলার অনুমতি দিয়েছিলেন কার্তিয়ে-ব্রেসঁ (বাঁ দিকে তারই একটি, ১৯৮০)। রামকিঙ্কর, শর্বরী রায়চৌধুরী এবং রবিশঙ্করেরও কিছু অসামান্য ছবি তুলেছিলেন তিনি।
সেরা যন্ত্রপাতি, কাগজ, কেমিক্যাল ছাড়া কাজই করতেন না জ্যোতিষ। আর্থিক ক্ষতি সত্ত্বেও বার বার না দেখে চূড়ান্ত প্রিন্ট করতেন না। সাদাকালো ছেড়ে কোনও দিন রঙিন ছবির দিকে ভুলেও পা বাড়াননি জ্যোতিষ। অ্যানালগ ছবির জগৎ যখন আস্তে আস্তে গ্রাস করে নিল ডিজিটাল, নিজের পেশা ও নেশার প্রতি চিরবিশ্বস্ত মানুষটি আরও অনেকের মতো আপসের পথে না গিয়ে চুপচাপ নিজেকে সরিয়ে নিলেন। বিক্রি হয়ে গেল ইমেজ ফটোগ্রাফার্স। আড়ালে থেকেই ২০০৭-এ প্রয়াত হন তিনি। অসম্ভব সৎ, আন্তরিক ও প্রচারবিমুখ মানুষটি যে সম্পূর্ণ বিস্মৃতির আড়ালে চলে যাবেন এর মধ্যে আশ্চর্যের কিছু নেই, না হলে মধ্যমেধার সাফল্য আসবে কী করে?
ইমেজ-এর স্বর্ণযুগের আড্ডার অংশীদার, শিল্পী কে এস রাধাকৃষ্ণন ফিরিয়ে এনেছেন তাঁদের ‘জ্যোতিষদা’কে। তাঁরই পরিকল্পনায় হিন্দুস্তান পার্কের ‘আকার প্রকার’ গ্যালারিতে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চ (২-৭টা, রবিবার বাদে) দেখা যাবে জ্যোতিষ চক্রবর্তীর ছবির প্রদর্শনী। এই উপলক্ষে মুসুই আর্ট ফাউন্ডেশন প্রকাশিত বইটি তুলে এনেছে সেই সময়কে, স্মৃতিচারণ করেছেন নিলয়রঞ্জন বসু, মহেন্দ্র কুমার, সৌমেন্দু রায়, গিরীন্দ্রকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিমল রায়, পূর্ণেন্দু বসু, প্রদীপ ঘোষ, আরও অনেকে। আছে সাদাকালোয় ছাপা অনেক ছবি। ডান দিকে, কুশল রায়ের তোলা ছবিতে জ্যোতিষ চক্রবর্তী (২০০৪)।

না-বলা কথা
রবীন্দ্রনাথের না-বলা কথা কতটুকুই বা জেনেছি আমরা? দেশেবিদেশে যখন ঘুরছেন, নানা জনের সঙ্গে মিশছেন, চিন্তার আদানপ্রদান হচ্ছে, তাঁর বা তাঁর সৃষ্টির ভক্তও হয়ে উঠছেন তাঁরা, নিজমুখে হয়তো তার হিসেব দিচ্ছেন না কবি... কিন্তু সে সবের অনুপুঙ্ক্ষ-ই দিনলিপি হয়ে উঠছে তাঁরই পুত্রের কলমে। একদিকে যেমন ইতিহাসমনস্ক রথীন্দ্রনাথ দায়বদ্ধতা থেকেই এই বিবরণ লিখছেন, তেমনই তাঁর ডায়েরি চিঠিপত্র বা অন্য লেখা থেকে তৈরি হচ্ছে কবির আটপৌরে অন্তরঙ্গ ছবি। এই তথ্যভাণ্ডারের অনেকটা জুড়ে আছে কবির বিদেশসফর। সুপ্রিয়া রায়ের সম্পাদনায় দ্য ডায়েরিজ অব রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রকাশ করছে কারিগর। কবিপুত্রের ১২৫তম জন্মবর্ষ উপলক্ষে ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধে সাড়ে ছ’টায় বাংলা আকাদেমি সভাঘরে অনুষ্ঠান: নিভৃতচারি রথীন্দ্রনাথ। সুপ্রিয়া-সহ থাকবেন অমিতেন্দ্রনাথ ঠাকুর সুপ্রিয় ঠাকুর সুশোভন অধিকারী, সঞ্চালনে অভীক ঘোষ। রবীন্দ্রগান গাইবেন প্রমিতা মল্লিক।

সুনীতার ছবি
আঁকা শিখেছিলেন নিজে, তবে পরামর্শ পেয়েছেন স্বয়ং মকবুল ফিদা হুসেনের। বন্ধু ও গুরু হুসেনের সঙ্গে ছবির প্রদর্শনীও করেছেন বিদেশে ও কলকাতায়। ‘গজগামিনী’-তেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। সেই সুনীতা কুমারের সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ বহু দিনের। জন্ম লাহোরে হলেও পড়াশুনো কলকাতার লরেটো হাউসে। মাদার টেরিজার খুব কাছের মানুষ ছিলেন, দীর্ঘ দিন সামলেছেন মিশনারিজ অব চ্যারিটির মুখপাত্রের ভূমিকা। মাদারকে নিয়ে বইও লিখেছেন। আজ থেকে তাজ বেঙ্গলে শুরু হচ্ছে সুনীতার ছবির প্রদর্শনী, বিষয় ‘ইন্ডিয়া’। ছবিতে উঠে এসেছে ভারতের বিভিন্ন শহর এবং অবশ্যই মাদার। প্রদর্শনী চলবে ৩ মার্চ পর্যন্ত (১১-৮টা)।

নৈতিকতা
দিল্লির কোনও সাংবাদিক সরকারের কাছে বসন্তকুঞ্জে জমি চাইলেন। তাঁর পক্ষে কি শীলা দীক্ষিত সরকারের বিরুদ্ধে লেখা সম্ভব? নৈতিকতা এবং সংবাদমাধ্যম নিয়ে এমনই কিছু প্রশ্ন তুলে আনলেন প্রবীণ সাংবাদিক সুনন্দ কে দত্ত রায়, ১৯ নভেম্বর সন্দীপ্তা চট্টোপাধ্যায় স্মৃতি বক্তৃতায়। বললেন, সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে অনেকটাই মুক্ত ভারতের সংবাদমাধ্যম। তবু সরকারই সাংবাদিককে রাজ্যসভার সদস্য করতে পারে, কমিশনের চেয়ারম্যান করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে এক জন সাংবাদিক কতটা নৈতিকতা বজায় রাখতে পারবেন, তা ঠিক করবেন তিনিই। বাংলা টেলিভিশনের পরিচিত মুখ, সাংবাদিক সন্দীপ্তা হঠাৎই চলে গিয়েছেন গত ২ ডিসেম্বর। তাঁর স্মারক বক্তৃতার আয়োজক ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মিডিয়া কমিউনিকেশন অ্যান্ড কালচার।

উত্তরাধিকার
বসন্তকে প্রতি বছরই কথায় আর সুরে ভরিয়ে তুলতেন রবীন্দ্রনাথ। শান্তিনিকেতনের পাতায়-ফুলে-ধুলোয়-ঘাসে আজও জেগে আছে তাঁর গান। সে গানের উত্তরাধিকার যেমন ছিল মোহর বা কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে, তেমনই এখন তাঁর ভাইঝি রঞ্জিনী মুখোপাধ্যায়ের গলায়। শান্তিনিকেতনেই জন্মানো ও বড়-হওয়া রঞ্জিনী ফাল্গুনের প্রথম পূর্ণিমার অব্যবহিত পরের এক সন্ধেতে তাঁর প্রথম একক অনুষ্ঠানে গাইবেন কবির প্রেম ও বসন্তের গান: ‘বসন্ত পূর্ণিমা-কে রবীন্দ্রনাথের গান’। ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধে সাড়ে ছ’টায় জ্ঞানমঞ্চে। আয়োজনে সপ্তর্ষি প্রকাশন।

সেলুলয়েডে রবি
রবীন্দ্রনাথের কাহিনিতে সেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ছবি সাজত তাঁর গানেও। সেই প্রমথেশ বড়ুয়ার ‘মুক্তি’তে পঙ্কজ মল্লিকের তত্ত্বাবধানে রবীন্দ্রগান থেকে সত্যজিৎ-ঋত্বিক-মৃণাল-তপন সিংহ-তরুণ মজুমদার হয়ে হালে ঋতুপর্ণ-অঞ্জনের ছবি, বা এমন আরও বহু পরিচালকের ছবিতে বাঙালি প্রাণিত হয়েছে কবির গান শুনে। বাংলা চলচ্চিত্রে রবীন্দ্রগানের এই পরম্পরা নিয়ে রবিচ্ছায়া-র উদ্যোগে সারেগামা-র নিবেদন: ‘সেলুলয়েডে রবি’। ২ মার্চ আইসিসিআর-এ সন্ধে ৬টায়। গানে সুদেষ্ণা সান্যাল রুদ্র, আর কথায় ঋতব্রত ভট্টাচার্য। অন্য দিকে শতবর্ষ উপলক্ষে ভারতীয় সিনেমার শুরুর দশকেরই একগুচ্ছ ছবি, পুদভকিন-এর ছবি-সহ, ২৫-২৮ ফেব্রুয়ারি প্রতি সন্ধেয় গোর্কিসদনে, আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাবের উদ্যোগে।

সচেতনতা
জনমানসে বিজ্ঞানসচেতনতা গড়ে তুলতে ও কুসংস্কার দূরীকরণে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের উদ্যোগে এবং রঙ্গমঞ্চের নিবেদনে তৈরি হয়েছে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ‘মান-হুঁশ মেরো না’। পরিচালনায় রুম্পা গুঁই ও শুভব্রত দে, গবেষণা-উপদেষ্টা মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। পুরুলিয়ার পাথরকাটা গ্রামের এক সাঁওতালি যাত্রাদলের অভিনয়ে তৈরি এ-ছবিতে রয়েছে ডাইনি সন্দেহে আক্রান্ত নারীদের প্রত্যক্ষ কথন, বিশেষজ্ঞদের মতামতও। ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুর দু’টোয় ছবিটি দেখানো হবে নন্দন-এ। নন্দন-এই আবার ইজরায়েলের নতুন প্রজন্মের পরিচালকদের ছবির উৎসব, ২৬-২৮ ফেব্রুয়ারি, ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ-এর উদ্যোগে।

ফরাসি উৎসব
ফরাসি লেখক মার্গ্যরিৎ দ্যুরাস কখনও ভারতে পা দেননি। নিছক কল্পনায় লিখেছিলেন দুটি নাটক ‘দ্য ভাইস কনসাল’ এবং ‘ইন্ডিয়া সং’। সেই নাটক দু’টি অবলম্বনে পরিচালক এরিক ভিগনার তৈরি করেছেন নাটক ‘গেটস টু ইন্ডিয়া সং’। যেখানে উঠে আসবে ১৯৩০-এর ভারতবর্ষ। দেখা যাবে কলকাতার এক কাল্পনিক ফরাসি দূতাবাস। ফরাসি দূতের স্ত্রীকে নিয়ে গল্প এগোবে। সেই ভূমিকায় অভিনয় করবেন নন্দিতা দাস (সঙ্গের ছবি)। তিন মাস ব্যাপী ফরাসি উৎসব ‘বঁজুর ইন্ডিয়া ২০১৩’-র অংশ হিসেবে ২৬-২৮ ফেব্রুয়ারি (রোজ সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায়) নাটকটি মঞ্চস্থ হবে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে, ফরাসি দূতাবাস, আলিয়ঁস ফ্রঁস্যাজ এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে।

রে ও রবি
১৯৫৩। লাইটহাউসে ‘পথের পাঁচালী’-র কিছু অংশ দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়। পিছনে উদ্বেগ নিয়ে বসে আছেন সত্যজিৎ রায়। পরের গল্পটা ইতিহাস। পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রযোজনা করল ‘পথের পাঁচালী’। বহু পুরনো নেগেটিভ থেকে ষাট বছর আগে অলক মিত্রের তোলা সেই দুর্লভ ছবিটি আলোয় এল তাঁর বই রে-তে (অ্যালকেমি, ১৪৯৫.০০)। দীর্ঘ অর্ধশতক ধরে সেই ব্যক্তিত্বের আলোর সন্ধানে ঘুরেছে তাঁর ক্যামেরা। তারই ফসল থেকে নানা মানিক এ বইয়ে। শু্যটিংয়ের সময়, শু্যটিংয়ের ফাঁকে, নানা সম্মাননা অনুষ্ঠান, কলকাতা মেট্রো কিংবা ইডেন গার্ডেন্সে সত্যজিৎ এমনকী তাঁর গ্রাফিক ডিজাইনের কাজগুলি সাজিয়েও ছড়ানো মানিকের একটা পুরো চেহারা তুলে ধরতে চেয়েছেন অলক। বেশির ভাগই সাদা-কালোয় তোলা ছবি নিয়ে (সঙ্গে তারই একটি) তৈরি বইটির মুখবন্ধ লিখেছেন মৃণাল সেন এবং একটি দীর্ঘ লেখায় অন্তরঙ্গ সত্যজিৎকে দেখেছেন শঙ্করলাল ভট্টাচার্য। একই প্রকাশনা এনেছে অলকবাবুরই আর একটি বই রবি (১৮৯৫.০০)। বারাণসী থেকে কলকাতা রবিশঙ্করের নানা মেজাজের ছবি সে বইয়ে। ছবি হিসেবে তার অধিকাংশই সাধারণ, কিন্তু ইতিহাসের উপাদান হিসেবে তাদের গুরুত্ব অনেক। বহু আগে পরিকল্পিত বইটি প্রকাশ পেল এত দিনে। সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে ইহুদি মেনুহিনের লিখে দেওয়া শুভেচ্ছাটিও।

শিক্ষণীয়
সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি-র ছাত্রছাত্রীরা পিরানদেল্লো-র ‘সিক্স ক্যারেকটার্স ইন সার্চ অব অ্যান অথর’-এর অসামান্য উপস্থাপনায় সকলকে চমকে দিল। শুরুতেই ছিল ’৬১-তে নান্দীকারের এই নাটকের অভিনেতা রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তর ব্যাখ্যা, এবং পরে অশোক বিশ্বনাথনের বিশ্লেষণ। পিরানদেল্লো-র এই নাটকের মধ্যে দিয়ে ফুটে ওঠে ছয় জন লিপিবদ্ধ না হওয়া চরিত্রের জটিল অন্তর্দ্বন্দ্ব। অভিনয়ের পূর্ব-অভিজ্ঞতা না থাকলেও, নানা বাধাবিঘ্নের মধ্যে এক সঙ্গে রিহার্সাল দিয়ে এতজন ছাত্রছাত্রী যে এমন একটি কঠিন নাটক মঞ্চস্থ করতে পারল, এটাই সব থেকে আনন্দের। অভিনেতাদের বক্তব্য, তাঁদের শিক্ষক শিঞ্জিনী বন্দ্যোপাধ্যায় ও চিন্ময় গুহের অনুপ্রেরণাই ছিল এই সাফল্যের চাবিকাঠি।

বাঘবন্দি খেলা
পুলিশকাকু। তুমি আমার প্রণাম নিও। ...আমি ডাকাত শেরাকে চিনি। শেরা রোজ রাতে তালপুকুর মাঠে আশে।...তোমাকে খুব ভালবাসি। সব পুলিশ তোমার মত হয় না কেন। সাবধানে শেরাকে ধরতে যাবে। ওর সাথে কিনতু বন্দুক থাকে।’ বারো বছর আগে মমতাজ খাতুন নামে একটি ছোট মেয়ে চিঠিটা লিখেছিল যাঁকে সেই পুলিশকর্মী অরিন্দম আচার্য বলছেন, “চিঠিটা আমার কাজের প্রেরণা। তাই আমাকে নিয়ে লেখা বইয়ের প্রথমেই চিঠিটা ওরই হাতের লেখায় ছাপতে বলেছিলাম।’’ কেবল দুঁদে অফিসার হিসেবে ভয় পাওয়া নয়, বাসন্তী থেকে ঘুটিয়ারি শরিফ যেখানেই কাজ করেছেন অরিন্দম সেখানেই ভালবাসা দিয়ে মন জয় করেছেন মানুষের। অভিযুক্ত বা বিচারাধীন বন্দির ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন, চেষ্টা করেছেন সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে। সর্বত্র হয়তো সমান সাফল্য আসেনি। তবু, গল্পের চেয়েও সত্যি এই পুলিশকর্মীর ঘটনাবহুল জীবন নিয়ে বাঘবন্দি খেলা নামে বই লিখেছেন অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়। সম্প্রতি বইটি প্রকাশ করেছে ‘পত্র ভারতী’। অভিনব এ বই। জরুরিও, অন্তত ফুটবল খেলানোর চেয়ে।

স্মরণ
বিশ্বভারতী পরিচালনার জন্য রবীন্দ্রনাথ যে তরুণদের ওপর ভরসা করতেন ক্ষিতীশ রায় নিঃসন্দেহে তাঁদের এক জন। জন্ম ১৯১১-য় বীরভূমে। কিন্তু ছেলেবেলা কেটেছে ডিব্রুগড়ে। স্নাতক হন স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে। ১৯৩৪-এ শিক্ষা ভবনে যোগ দেন ইংরেজি পড়তে। পরের বছর থেকেই বিশ্বভারতী কোয়ার্টার্লি’র সহযোগী সম্পাদক কৃষ্ণ কৃপালনীর সঙ্গে। পরে তিনিই মুখ্য সম্পাদক হন। যুক্ত ছিলেন বিশ্বভারতী নিউজ-এর সঙ্গেও। রবীন্দ্রনাথকে পেয়েছিলেন অন্তরঙ্গ ভাবে। রবীন্দ্রস্মৃতি সংগ্রহে গোড়া থেকেই যুক্ত ছিলেন রবীন্দ্রভবনে এবং এ কাজে প্রতিমাদেবীর বড় ভরসার মানুষ ছিলেন তিনি। সামলেছেন কিউরেটর পদ। শিক্ষকতা বা প্রশাসনিক দক্ষতার বাইরে ক্ষিতীশবাবু ছিলেন বিদগ্ধ লেখক ও অনুবাদক। কৃপালনীর সঙ্গে যৌথ ভাবে ক্রাইসিস অব সিভিলাইজেশন অনুবাদকর্মে অনুমোদন দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ১৯৬৩-তে তিনি যোগ দেন সাহিত্য আকাদেমির পূর্বাঞ্চলের সচিব হিসেবে, কিছু কাল ছিলেন গাঁধী স্মারক সংগ্রহালয়ের কিউরেটর। ওঁর নানা কাজের মধ্যে আছে অন দি এজেস অব ইন্ডিয়া-এর বঙ্গানুবাদ, রবীন্দ্রনাথ টেগোর/ সিলেকটেড পোয়েম অ্যান্ড সঙ্গস, পুলিনবিহারী সেনের সঙ্গে যৌথ ভাবে রবীন্দ্রনাথ টেগোর: আ ট্রিবিউট ইত্যাদি। কর্মযোগী মানুষটির মৃত্যু হয় ১৯৯৫-তে। প্রায় নিঃশব্দে পেরিয়ে গেল ওঁর জন্মশতবর্ষ। সম্প্রতি সাহিত্য আকাদেমির উদ্যোগে আকাদেমি সভাঘরে আয়োজিত হল এক আলোচনা সভা, ছিলেন অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, রামকুমার মুখোপাধ্যায় এবং মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। ওঁর প্যারিস প্রবাসী কন্যা শর্মিলা রায় পোমো-র পাঠানো লেখায় উঠে এসেছিল কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কথা।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.