মেডিক্যালে উনুন জ্বেলে সরস্বতী পুজোর ভোজ
মরির স্মৃতি এখনও মোছেনি। তার পরেও এসএসকেএম, শম্ভুনাথ, মেডিক্যালে একাধিক ছোটখাটো অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। স্বাস্থ্য দফতরের বারংবার হুঁশিয়ারি এবং ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও টনক যে একটুও নড়েনি, ফের তার প্রমাণ মিলল শনিবার, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
হাসপাতালের ইডেন ওয়ার্ডের লাগোয়া শাসক দলপন্থী কর্মচারী ইউনিয়নের (এমসিএইচ) অফিসে সরস্বতী পুজো উপলক্ষে এ দিন গ্যাস জ্বালিয়ে জমিয়ে রান্না হল মুগের ডালের খিচুরি, লাবড়া, পাঁপড়, চাটনি, পায়েস। কব্জি ডুবিয়ে খেলেন কর্মচারী থেকে চিকিৎসক সকলেই। বাদ রইলেন না রোগীদের পরিজনেরাও। অথচ, এই ইডেন ওয়ার্ডেই রয়েছে স্ত্রীরোগ বিভাগ। শিশুদের জন্মও হয় এই ওয়ার্ডে। এ রকম গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ডের পাশেই ইউনিয়নের ঘরকে অস্থায়ী রান্নাঘর বানিয়ে, গ্যাস জ্বালিয়ে রান্নার আগে প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কি? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই জানিয়েছেন, বিন্দুমাত্র ব্যবস্থা ছিল না। কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি পর্যন্ত। হাসপাতালের ভিতরে আগে নার্স বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা হিটার জ্বেলে চা-কফি-ডিমসেদ্ধ করতেন। আমরির ঘটনার পরে সে সবও নিষিদ্ধ হয়েছিল। তা হলে এত ঘটা করে গ্যাস জ্বালানো হল কী করে?
পুজোর পরে ভোজের আয়োজন। শনিবার, মেডিক্যালে। —নিজস্ব চিত্র
মূল আয়োজক মেডিক্যাল কর্মচারী ইউনিয়নের আধিকারিক গোপাল সিংহকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি প্রথমে রান্নার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আমরা তো হাসপাতালের মধ্যে রান্না করিনি। বাইরে থেকে করিয়ে এনেছি।’’ কোন কেটারিং সংস্থা ওই খাবার সরবরাহ করেছে, জানতে চাওয়া হলে তিনি অস্বস্তিতে পড়ে বলেন, “নামটা ঠিক মনে পড়ছে না।” হাসপাতালের অধ্যক্ষ তপনকুমার লাহিড়ী বলেন, “আমি পুজো করার অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু রান্না করার অনুমতি কোনও ভাবেই দেওয়া হয়নি।”
এ দিন দুপুরে হাসপাতালে দেখা গেল, কর্মী ইউনিয়নের ঘরের সামনে বারান্দায় প্যান্ডেল খাটিয়ে খাওয়াদাওয়া চলছে। পাশেই বড় কড়াইয়ে আরও খিচুরি ফুটছে। প্রায় ৭০ জন বসে খাচ্ছেন আর লম্বা লাইনে অধীর আগ্রহে দাঁড়িয়ে বাকিরা। সব শুনে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি জানতাম না এমন হয়েছে। কোনও ভাবে আগুন লাগলে সাংঘাতিক ব্যাপার হত। পাশেই মা ও শিশুদের বিভাগ। আমি বিষদে খোঁজ নিচ্ছি। দোষীরা শাস্তি পাবে।”
এই পুজোয় খাওয়াদাওয়া উপলক্ষে আবার ৫০ টাকার কুপনও ছাপানো হয়। সেই কুপন কেটে ইউনিয়নের কর্মীদের পাশাপাশি বহিরাগত অনেকেও ভূরিভোজ সেরেছেন। কুপনগুলির টাকা এই ইউনিয়নের তহবিলে জমা পড়ে বলে অভিযোগ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.