কলকাতা পুরসভা এলাকায় পুকুর বা জলাশয়ের সংখ্যা কত?
পুর-কর্তৃপক্ষকে এ প্রশ্ন করলে উত্তর মিলবে না। কারণ, তাঁরা নিজেরাই জানেন না। পুর-এলাকায় পুকুর ও জলাশয়ের সংখ্যা এবং সেগুলির অবস্থা নিয়ে আদালতের নির্দেশে পুরসভা হাইকোর্টে একটি রিপোর্ট হলফনামা আকারে পেশ করেছে। তাতেই এ কথা জানানো হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, জলাশয় ও পুকুরের যে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, তা চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না। কারণ, শহরের কোথাও না কোথাও অনবরত পুকুর বা জলাশয় বোজানো হচ্ছে। সব ধরনের জলাশয় সরেজমিন দেখে তালিকাটি সংশোধনের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে। এই তালিকায় পুরসভা কোনও ত্রুটি রাখতে চায় না বলেও ওই রুপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
পুর-এলাকায় গত কয়েক বছরে বহু পুকুর, জলাশয় ভরাট হয়েছে। এখনও তা আকছার ঘটছে। ফলে ওই তালিকা চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না। পুকুর ভরাট যে চলেছেই, তা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে ওই রিপোর্টে। সেই সব জলাশয় পুনরুদ্ধারের তেমন চেষ্টাও হয়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, জলাশয় ভরাট বন্ধ করার ক্ষেত্রে হয় কোনও আইন ছিল না, কিংবা আইন কঠোর ভাবে প্রয়োগ করা হয়নি। তবে, এখন জলাশয় সংরক্ষণ এবং বাঁচিয়ে রাখাটা নাগরিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠেছে।
শহরে বর্ষায় জল জমা নিয়ে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের করা একটি জনস্বার্থ মামলায় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ পুরসভার কাছে রিপোর্ট তলব করে। রিপোর্টে পুরসভা জানিয়েছে, পুকুর ভরাট নিয়ে আইনি ও অন্যান্য জটিলতার বিষয়ে পরামর্শ নেওয়ার জন্য হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি গীতেশরঞ্জন ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ‘ওয়াটারবডি ম্যানেজমেন্ট বোর্ড’ গড়া হয়েছিল। সেই বোর্ডের সদস্য ছিলেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তদানীন্তন মুখ্য আইন অফিসার বিশ্বজিত্ মুখোপাধ্যায়। পর্ষদ থেকে অবসর নেওয়ায় তিনি আর ওই বোর্ডেও নেই। বিশ্বজিত্বাবু বললেন, “যে সব পুকুর ইতিমধ্যে ভরাট হয়ে গিয়েছে, সেখানে জমির চরিত্র পরিবর্তন করে তার আইনি অনুমোদন নিতেই বোর্ডকে কার্যত ব্যবহার করা হয়।” ওই বোর্ডের অন্য সদস্য, নদী ও ভূ-জল বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র বলেন, “বোর্ডের কয়েকটা বৈঠক হয়েছিল। কিন্তু গত ছ’মাসের কোনও বৈঠক হয়েছে বলে মনে পড়ে না।”
বৈঠক যে দীর্ঘদিন হয়নি, তা স্বীকার করে নিয়ে পুরসভার জলাশয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ সঞ্চিতা মণ্ডল বলেন, “তেমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে না বলেই এখন বৈঠক বন্ধ। আবার বৈঠক হবে।” তবে তিনি স্বীকার করেন, তাঁর কাছে দিনে অন্তত সাতটি পুকুর ভরাটের অভিযোগ আসে। কিন্তু জোরালো আইন না থাকায় বিশেষ কিছু করা যায় না।
ওই রিপোর্ট থেকে কলকাতায় ২৬৬টি পুকুরের হিসেব মিলছে। তার ৪২টি সংস্কার করে আগের অবস্থায় ফেরানো হয়েছে। ৮টি পুকুরের সংস্কার চলছে। ২৫টি পুকুর নিয়ে মামলা থাকায় সেখানে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। আরও ১৮১টি পুকুর পাড়, কচুরিপানা একশো দিনের কাজের আওতায় সাফ হয়েছে।
কল্যাণবাবু বলেন, “মাটির নীচ থেকে যথেচ্ছ ভাবে জল তোলা হচ্ছে, কিন্তু বৃষ্টির জল মাটির নীচে ঢুকতে পারছে না। ফলে ভূগর্ভস্থ জলস্তর তলানিতে ঠেকেছে। বিবাদী বাগ অঞ্চলেই জলস্তর ৪৫ ফুট নেমে গিয়েছে। এর ফলে পুকুরগুলিতে বছরের বেশির ভাগ সময়ে জল থাকছে না।”
সুভাষবাবুর মতে, “কলকাতার ভূগোলটাই ইতিহাস হয়ে যাচ্ছে।” তাঁর বক্তব্য, শহর যত কংক্রিটে ঢাকছে, বৃষ্টির জল মাটির নীচে ঢোকার পথগুলি ততই বন্ধ হচ্ছে। কারণ, শহরে যে ক’টা পুকুর আছে, তা-ও গোপনে বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে। বিপুল জনসংখ্যার শহরে কোথাও আগুন লাগলে আপত্কালে যেটুকু জলের প্রয়োজন, তা-ও মেলে না।
|
দু’দিনের ব্যবধানে দু’টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের দেহ মিলেছে অসমের ওরাং রাজীব গাঁধী জাতীয় উদ্যানে। ডিএফও এস কে দায়লা জানান, ৯ ফেব্রুয়ারি খেরনি বন শিবিরের কাছে ও ১১ ফেব্রুয়ারি পাচনৈ ২ নম্বর বন শিবিরের কাছে দেহাবশেষ দু’টি মেলে। দু’টি ক্ষেত্রেই বাঘের শরীরের বাইরে আঘাতের কোনও চিহ্ন ছিল না। বাঘদু’টি অসুখ বা বিষক্রিয়ায় মারা গিয়েছে বলে সন্দেহ। ময়না তদন্তের পরেই নিশ্চিত হওয়া যাবে। অন্য দিকে, গত কয়েকদিন ধরে যোরহাটের চেনিজানে তাণ্ডব চালানো একটি চিতাবাঘকে আজ ডোলাকাখরিয়া গ্রামে খাঁচাবন্দি করা হয়। বনকর্তারা জানান, চিকিৎসার পরে তাঁকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। |