বিপদঘন্টিতেই বিপদ ঘনাল! ঘন্টি নেড়েঘেঁটে দেখতে গিয়ে তা এমন বিশ্রী ভাবে বেজে উঠল যে, ব্যাঙ্কের ভল্ট ছেড়েই দুদ্দাড় পালাতে হল ডাকাতদলকে।
শুক্রবার সকালে বাঁকুড়া শহরের নতুনগঞ্জ এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ডাকাতি করতে ঢুকে শুরুটা কিন্তু বেশ পেশাদারদের মতোই করেছিল জনা পাঁচেক যুবক। হাতে পিস্তল। কর্মীদের হুমকি দিয়ে হাঁটু মুড়ে বসিয়ে রাখা বা ঝটপট মোবাইল কেড়ে নেওয়াএ পর্যন্ত সবই ঠিক ছিল। ডাকাত সর্দারের মাথায় বিপদঘন্টি বিকল করার বুদ্ধি আসাতেই যত বিপত্তি!
সেই কাজ সারতে সর্দার তার এক স্যাঙাতকে পাঠায়। কাঁচা হাতে বিকট আওয়াজে বেজে ওঠে ঘন্টি। টাকা তো মিললই না, বেগতিক বুঝে ব্যাঙ্ক কর্মীদের থেকে কেড়ে নেওয়া মোবাইল ফেলে ডাকাতরা দে দৌড়। |
ব্যাঙ্কের সিনিয়র ম্যানেজার অজয়কুমার বারাই বললেন, “তখন সকাল ১০টা। সবে কম্পিউটারটা খুলে চেয়ারে বসেছি। এমন সময় বছর তিরিশের এক যুবক পিস্তল উঁচিয়ে আমার ঘরে ঢুকে বলল ‘অভি বাহার নিকলো’। ডাকাত পড়েছে বুঝে আমি কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ বেরিয়ে এসে দেখি, অন্য কর্মীরা হাঁটু মুড়ে মাথা নিচু করে বসে। আমিও ওই ভাবেই বসে পড়ি। মোবাইল ওদের হাতে তুলে দিই।”
এর পরেই বিপদঘন্টি নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে ফ্যাসাদে পড়ে যায় ডাকাতরা।
জেলার এক পুলিশকর্তার কথায়, “এই দুষ্কৃতীরা মনে হয় নেহাতই আনকোরা। বিপদঘন্টি নিষ্ক্রিয় করার কৌশল ভাল ভাবে না জেনেই ডাকাতি করতে এসেছিল। সাধারণত এই পদ্ধতিটা ব্যাঙ্ক লুঠেরাদের ভালমতোই রপ্ত থাকে।”
শহরের লোক অবশ্য বলছেন, “দিনেদুপুরে এ ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে নতুনগঞ্জ এলাকার মতো ভরা বাজারে এসে ডাকাতি করার সাহস যদি আনকোরা দুষ্কৃতীরাও দেখায়, তা হলে তো পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে।” তবে ওই ব্যাঙ্কে কোনও নিরাপত্তারক্ষী নেই, এটাও ঠিক।
অজয়বাবু তাই বলছেন, “এ যাত্রা বিপদঘন্টি বিপদ কাটিয়ে দিল! পরের বার কী হবে জানি না। পুলিশকে নিরাপত্তা দিতে অনুরোধ করেছি।” |