পুণেতে গবেষণারত এক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়াল আলিপুরদুয়ার শহরে। গত বুধবার পুণের জাতীয় কেমিক্যাল ল্যাবরেটরির মেসে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় ওই ছাত্রকে। তাঁর গলায় ফাঁস লাগানো ছিল। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম শুভ্র সরকার (২৪)। প্রায় এক বছর ধরে ওই ছাত্র পুণের জাতীয় কেমিক্যাল ল্যাবরেটরিতে সোলার সেল নিয়ে পিএইচডি গবেষণা করছিল। তাঁর বাড়ি আলিপুরদুয়ার পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে সন্দেহপ্রকাশ করেছেন শান্তিনগর এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর দেবকান্ত বড়ুয়া।
কাউন্সিলর বলেন, “শুভ্র সাধারণ ঘরের ছেলে। তাঁর বাবা একটি ব্যবসায়ীর গদিতে খাতা লেখার কাজ করেন। নিজের চেষ্টায় ওই ছাত্র পুণেয় গবেষণার সুযোগ পেয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। মৃতদেহের পাশ থেকে সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। মৃতদেহ না আসা পর্যন্ত সুইসাইড নোটের বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছেন।
শুভ্রর বাবা গৌর সরকার জানান, ২০১১ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে শুভ্র বারবিশা স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছিল। কিন্তু সেই সময় নেট পরীক্ষায় দেশে ৫০ জন্যের মধ্যে তাঁর স্থান থাকায় পুণেতে সোলার সেল নিয়ে গবেষণার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১২ সালে পুণেতে গিয়ে থাকতে শুরু করে। প্রতিদিন এক বার করে ফোনে বাড়ির সাথে তাঁর কথা হত। তিনি বলেন, “২২ জানুয়ারি রাত ১১টা নাগাদ তাঁর সঙ্গে কথা হয়। তখন জানতে পারি ছয় জনের মধ্যে চার জন মেস ছেড়ে দিয়েছে। কলকাতার একটি ছেলে সে কয়েক দিন আগে ছুটি নিয়ে বাড়ি গিয়েছে। মেসে শুভ্র একাই ছিল। রাতে ডিম ভাত রান্না করে খাবে বলেছিল। পরের দিন দুপুরে ওঁর অফিস থেকে ফোন করে মৃত্যুর খবর দেয়। খুব শান্ত প্রকৃতির ছেলে। ওঁর আত্নহত্যা করার কোনও কারণ নেই। ওঁর মৃতুর পেছনে কোনও রহস্য রয়েছে। তা পুলিশ খুঁজে বের করুক।”
আলিপুরদুয়ার হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শান্তনু দত্ত জানান, শুভ্র স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে স্টার নিয়ে পাশ করেছিল। তারপর রসায়নে স্নাতকোত্তর করেন। তাঁর মৃত্যুর ঘটনার তদন্তের দাবি করেছেন তিনিও। মৃতদেহ আনতে তাঁর এক ভাই ও প্রতিবেশী পুণেতে গিয়েছেন। অলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া জানান, ঘটনাটি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
|