খবরটা শুনে বেশ অবাক হয়ে গিয়েছিলেন হিমরাজ্যের ক্রিকেটপ্রেমীরা। ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি নাকি তাঁদের শহরে এসে খেলবেন না। তার আগে থেকে তো আর এক খবরে তোলপাড় ধরমশালা। আদৌ খেলা হবে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। প্রকৃতি মুখ তুলে তাকিয়েছে এবং খেলা যে হচ্ছে, তা নিয়ে আপাতত কোনও সন্দেহ নেই। ফলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন হিমাচলি ক্রিকেট প্রেমীরা। |
শুক্রবার ম্যাচের আগের দিন আর একটা প্রশ্নের উত্তর নিয়েও ক্রমশ আশাবাদী হয়ে উঠছেন তাঁরা। ধোনি হয়তো খেলবেন। এ দিন দলের সঙ্গে তাঁর প্র্যাকটিসে নামা এবং কোনও বিকল্প উইকেটকিপার দলে যোগ না দেওয়ায় এই সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়েছে। ৩-১ জিতে থাকা সিরিজে ভারতের কাছে এই ম্যাচের কোনও গুরুত্ব নেই ঠিকই। কিন্তু হিমাচল প্রদেশের এই পর্যটনকেন্দ্রের কাছে ম্যাচটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এখান থেকেই এই শহর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানচিত্রে ঢুকে পড়তে চলেছে। সে জন্যই গোটা শহরে উৎসবের আমেজ।
গত দুই ম্যাচের আগে প্র্যাকটিসে আঙুলে চোট পাওয়া ভারত অধিনায়ক এ দিন চুটিয়ে ফুটবল খেললেন। অপরূপ পাহাড়ি পরিবেশে ভারতীয় ক্রিকেটাররা এ দিন প্র্যাকটিস সেশন রীতিমতো উপভোগ করলেন। সিরিজ হাতের মুঠোয়। তাই কোনও চাপ নেই। গতানুগতিক শরীরচর্চা, ফিল্ডিং প্র্যাকটিস না করে বরং ফুটবলেই মাতলেন তাঁরা। |
ইংল্যান্ড অবশ্য এ দিন আর মাঠমুখো হয়নি। বরং অ্যালিস্টার কুকরা দল বেঁধে গিয়েছিলেন ম্যাকলয়েডগঞ্জে দলাই লামার আশ্রমে, তাঁর আশীর্বাদ নিতে। ভেবেছিলেন সেখানে গেলেই দেখা হবে ধর্মগুরুর সঙ্গে। কিন্তু তিনি তখন তাঁর সাধনস্থানে ধ্যানমগ্ন। তাই তাঁর সহায়ক জানিয়ে দেন, দেখা করা যাবে না। আগে থেকে ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ না নিয়ে এলে এমনই হবে। ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কারও সঙ্গেই দেখা করবেন না তিনি। হতাশ হয়ে ফিরে যান ইংরেজ ক্রিকেটাররা। তবে স্মৃতি হিসেবে দলাই লামার আশ্রমের প্রচুর ছবি তুলে নিয়ে যান তাঁরা। সেই ছবি আবার টুইটারে পোস্টও করলেন কেভিন পিটারসেন। ইংরেজ ক্রিকেটাররাও এই শৈলশহরকে দারুণ ভাবে উপভোগ করছেন একেবারে শুরু থেকেই। ব্রিটিশ মিডিয়া যতই এখানে বরফ পড়ার খবর চাউর করে দিয়ে ম্যাচ না হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করার চেষ্টা করুক, সে সব নিয়ে বেশি ভাবছেন না কুকরা। যখন তাঁদের টিমবাস ক্রমশ শৈলশহরের দিকে এগোচ্ছে, তখন বাসের মধ্যেই বরফে ঢাকা ধৌলাধার পর্বতমালার অপূর্ব দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করার ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায় কুকদের। |
শহরের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ নিয়ে রীতিমতো উৎসবের আমেজ ধরমশালায়। এমনিতেই পর্যটকদের মরসুম। তার ওপর খেলা। শহরে তো বটেই, শহরের আশপাশের কোনও হোটেলেও জায়গা নেই। রাজ্যের ৬৭ জন বিধায়ক আসছেন খেলা দেখতে। তাঁদের জন্য কড়া নিরাপত্তা। পঞ্জাব, চণ্ডীগড় থেকেও বহু ক্রিকেটপ্রেমী এসেছেন। এটা যে সিরিজের শেষ এবং গুরুত্বহীন ম্যাচ, তা বোঝার উপায়ই নেই।
|