দুই বাসের রেষারেষির জেরে ফের মৃত্যু কলকাতায়। এ বার ঘটনাস্থল বেলগাছিয়া। আর শুক্রবার সন্ধ্যার ওই ঘটনার জেরে পথ অবরোধ, বাসে আগুন, সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। কিন্তু রাত পর্যন্ত অভিযুক্ত বাসচালককে ধরতে পারেনি পুলিশ।
এর আগেও বাসের রেষারেষির শিকার হয়েছেন শহর কলকাতার সাধারণ মানুষ। কখনও রাস্তা পেরোতে গিয়ে, কখনও বা একই রুটের দুই বাসের মধ্যে পিষ্ট হয়ে অথবা চলন্ত বাস থেকে নামতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই ঘটনার পরে পুলিশ কিংবা সরকার এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরিস্থিতির যে কোনও বদল হয়নি, শুক্রবার আরও এক বার তা প্রত্যক্ষ করল কলকাতা। |
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিনের দুর্ঘটনায় মৃত মহিলার নাম সামসেদ পরভিন। বয়স ষাটের কোঠায়। এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে নেমন্তন্ন খেয়ে রাজাবাজার থেকে ২২৭ নম্বর রুটের একটি বেসরকারি বাসে উঠেছিলেন ওই বৃদ্ধা। নেমেছিলেন বেলগাছিয়া রোড ও ইন্দ্র বিশ্বাস রোডের সংযোগস্থলে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, বাসটি তখন ওই সংযোগস্থলের সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ছিল। বাসের সামনের দরজা নিয়ে নেমে সামসেদ যখন উল্টো দিকের ফুটপাথের দিকে এগোচ্ছিলেন, তখনই সিগন্যাল সবুজ হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানান, ওই বাসের পিছনে একই রুটের অন্য একটি বাস দাঁড়িয়ে ছিল। সিগন্যালের সুযোগ নিয়ে সেটি পিছন থেকে আগের বাসটিকে ওভারটেক করতে গেলে সামনের বাসের চালক বাসটিকে আরও ডান দিকে চেপে দেন। তাতেই সামসেদ ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে এলাকার মানুষ ধরাধরি করে ওই বৃ্দ্ধাকে রক্তাক্ত অবস্থায় আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ডাক্তারেরা। |
ভস্মীভূত সেই বাস। শুক্রবার, বেলগাছিয়ায়। |
ঘটনাটি ঘটে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ। দুই রাস্তার সংযোগস্থল হওয়ায় রাস্তায় লোকজন বেশিই ছিল। ফলে দুর্ঘটনার পরে বাসটিকে ঘিরে ধরে জনতা। চালক অবশ্য সেই ভিড়ের মধ্যেই গা-ঢাকা দেয়। এর পরে ক্ষিপ্ত জনতা বাসটিতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পথ অবরোধও করে। ঘণ্টাখানেক পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ উঠলেও অনেক রাত পর্যন্ত বেলগাছিয়া রোডে সারি দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাসের আগুন নেভায়।
|