পুরুষদের ফাইনাল লাইন আপ ঠিক যা ভেবেছিলাম, তাই হল। মারে বনাম জকোভিচ। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে বরং চমকে দিল মেয়েরা। ভেবেছিলাম, সেরেনাকে হারানো বেশ কঠিন হবে। কিন্তু চোট আর ওর ঘাতকের দমকা হাওয়ার মতো আবির্ভাব সেরেনাকে ছিটকে দিল।
মেয়েদের ফাইনালটা দাঁড়িয়েছে ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা এবং লি না-র মধ্যে। লি টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত একটাও সে রকম ভুল করেনি। বিশেষ করে শারাপোভার বিরুদ্ধে ওকে দুর্দান্ত দেখিয়েছে। সার্বিক ভাবেই চিনের এই মেয়েটি আমাকে মুগ্ধ করেছে। মারিয়ার বিরুদ্ধে একটার পর একটা গেম ছিনিয়ে নেওয়ার দৃশ্যটা দেখার মতো। লি না-র বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। কখনও দেখিনি বিপক্ষের নাম নিয়ে ওকে ঘাবড়ে যেতে। গ্র্যান্ড স্ল্যাম উইনার হিসেবে ও বুঝেছিল, মারিয়ার ফর্ম ভাল নয়। ঠিক করে ফেলেছিল, এমন আগ্রাসন দেখাবে যে রুশ তারকা ম্যাচে আর ফিরতেই পারবে না। |
ভিক্টোরিয়া আবার স্লোয়ান স্টিফেন্সকে হারাল। ভাল ভাবেই হারিয়েছে। এই স্টিফেন্সই সেরেনাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিল। ভিক্টোরিয়ার খেলার মধ্যে আমি একটা জমাট ভাব দেখতে পাচ্ছি। নিজের কেরিয়ারের দ্বিতীয় অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতার ব্যাপারে যেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
পুরুষদের বিভাগে ফিরি। মারে আর জকোভিচ সেমিফাইনাল পর্যন্ত যে ভাবে উঠে এসেছে, তা আগাম আন্দাজ করা খুব মুশকিল ছিল না। ডেভিড ফেরারকে উড়িয়ে দিয়েছে জকোভিচ। মারেকে আবার ভাল রকম পরীক্ষা দিতে হল রজার ফেডেরারের বিরুদ্ধে। খেলতে হল এমন এক ফেডেরারের বিরুদ্ধে যার ফর্ম একটু পড়তির দিকে হলে কী হবে, সে অদ্ভুত কাঠিন্যসমৃদ্ধ। এক ইঞ্চি জমি ছাড়বে না। ফেডেরারের এ দিন সার্ভ ভাল হয়নি, ব্যাকহ্যান্ডের টাইমিং গণ্ডগোল হয়েছে। তবু ম্যাচ টেনে গিয়েছে পাঁচ সেটে। আরও একটা ব্যাপার ভোগালো ফেডেরারকে। এ নিয়ে তিন দিনের মধ্যে ওকে দু’টো পাঁচ সেটের ম্যাচ খেলতে হল। এক বছর আগের মারে হলে, পারত না। বিশেষ করে চতুর্থ সেট হারার পর। কিন্তু ইউএস ওপেনের জয় মারেকে অনেক উন্নত করে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ফেডেরারকে ও হারাল ৬-৪, ৬-৭ (৪-৭), ৬-৩, ৬-৭ (৩-৭), ৬-২।
মারে-জকোভিচ ম্যাচটা এমন দুই প্লেয়ারের মধ্যে হতে চলেছে, যাদের ঘরানা এক। দু’জনেই শক্তিশালী, ফিট। খুব কাছাকাছিই থাকবে দু’জনে। জকোভিচকে আমি সামান্য হলেও এগিয়ে রাখব। কারণ, এই কোর্টটা ওর পছন্দের। আর এখানে জকোভিচ তিন বার জিতেছে। তবে জকোভিচ মনে রাখলে ভাল করবে যে এই মারে কিন্তু আগের মারে নয়। এই মারে জানে কী ভাবে ম্যাচ জিততে হয়। |